E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোরে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি-৬৪ ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে
 

২০১৫ মে ১৮ ১৮:৪৭:১০
নাটোরে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি-৬৪ ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে 

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি-৬৪ জাতের ধান চাষে কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া মিলছে। চলতি বোরো মৌসুমে জেলার লালপুর, বড়াইগ্রাম ও বাগাতিপাড়া এলাকায় ১৫০ বিঘা জমিতে পরীক্ষা মূলকভাবে এই ব্রি-৬৪ জাতের ধান চাষ করে কৃষকরা বাম্পার ফলন পেয়েছে। স্বল্প সময়ে বিঘা প্রতি ২৮ থেকে ৩০ মন হারে ধান উৎপাদন হওয়ায় কৃষকরা এই জাতের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।

কৃষকরা জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত বীজ সরবরাহ ও কৃষির আধুনিক প্রযুক্তিগত সহায়তা পেলে আগামীতে ব্যাপক ও বানিজ্যিক ভিত্তিতে এই ধান চাষ করবেন। ইতিমধ্যে কৃষি বিভাগও কৃষকদের জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান-৬৪ চাষে আগ্রহী করতে মাঠ পর্যায়ে উদ্বুদ্ধকরন সভা মাঠ দিবস অব্যাহত রেখেছে।

কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানান, জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান-৬৪ জাতের চাউল মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বাচ্চাদের শারীরিক গঠন ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করে। এছাড়া শিশুদের ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এসব কারনে ব্রি ধান-৬৪ চাষে কৃষকদেরকে মনোযোগী করে তুলছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে লালপুর, বাগাতিপাড়া ও বড়াইগ্রাম উপজেলায় পরীক্ষামুলক ভাবে এক বিঘা করে ৭৫টি প্রদর্শনী প্লট এবং ৭৫ জন কৃষককে বীজ সহায়তা দেওয়া হয়। আভা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি ও হারভেষ্ট প্লাস বাংলাদেশ এর উদ্যোগে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান-৬৪ চাষে প্রদর্শনী কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ সহায়তার মাধ্যমে ব্রি ধান-৬৪ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরন কাজ শুরু করে। এই ধানের জীবন কাল ১৫২দিন। গড় উচ্চতা ১০৫ সেন্টিমিটার এবং সহজে ঝরে পড়ে না। হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ৭ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। সুত্র আরো জানায়, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট এই জাত উদ্ভাবন করে। ২০১৪ সালের আগষ্ট মাসে পরীক্ষামুলক প্রদশর্নীর জন্য জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান-৬৪ জাত অবমুক্ত করা হয়। এই ধানের চাউল মাঝারী ও মোটা এবং উচ্চমাত্রার জিংক সমৃদ্ধ। যা মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

এদিকে ব্রি-৬৪ জাতের ধান চাষে কৃষকের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি করতে লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলায় শনিবার থেকে তিন দিন ব্যাপী কৃষকদের উদ্ভুদ্ধকরণে মাঠ দিবস শুরু হয়েছে। বর্তমানে ফসল উঠার সময় এই মাঠ দিবস পালন করা হচ্ছে। শনিবার লালপুর উপজেলার ফুলবাড়ী গ্রামে হারভেষ্ট প্লাস বাংলাদেশ এর প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর মোহাম্মাদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম খান।

বক্তব্য রাখেন, হারভেষ্ট প্লাসের প্রতিনিধি এ.আর.ডি.ও (কুষ্টিয়া অঞ্চল) সাইফুল ইসলাম, ওয়ালিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এ. এইচ. এম. শরিফ, কৃষক চাঁদ আলী ও গাজিয়ার রহমান প্রমূখ। রোববার বাগাতিপাড়া উপজেলা নওপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ীতে আভা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কষির রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক জনাব ফজলুর রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড.আলহাজ্ব উদ্দিন আহমেদ, নাটোর হর্টিকালচারের উপ-পরিচালক মিত্তাহুল বারী, বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাবলু কুমার সূত্রধর, হাভেষ্ট প্লাস বাংলাদেশ এর এ.আর.ডি.ও সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

সোমবার লালপুর উপজেলা আটঘরিয়া গ্রামের শারমিন আক্তারের বাড়ীতে আভা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড.আলহাজ্ব উদ্দিন আহমেদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম খান, হাভেষ্ট প্লাস বাংলাদেশ এর এ.আর.ডি.ও সাইফুল ইসলাম, আভা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’র ক্রেডিট কো-অর্ডিনেটর আব্দুর রউফ প্রমুখ। এ সব অনুষ্ঠানে মানব দেহে জিংক এর অভাব পূরণকারী স্বল্প জীবনকালে উৎপাদিত জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান-৬৪ এর আবাদ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কৃষকেরা তাদের বক্তব্যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, কৃষি বিভাগের তত্বাবধানে বেসরকারী সংস্থা আভা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি ও হারভেষ্ট প্লাস বাংলাদেশ এর উদ্যোগে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান-৬৪ চাষে প্রদর্শনী কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ সহায়তার মাধ্যমে ব্রি ধান-৬৪ চাষে কৃষকদের উদ্ভুদ্ধকরন কাজ বাস্তবায়ন করছে।

(এমআর/এএস/মে ১৮, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test