E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভাঙ্গায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন ,কৃষকের মুখে হাসি

২০১৫ জুন ০৪ ১৭:২০:১১
ভাঙ্গায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন ,কৃষকের মুখে হাসি

ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কৃষকের বোরো ধান চাষে বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। মাঠ থেকে ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। মাঠ থেকে ধান আনার পর মাড়াই শেষে কৃষাণীরা বাতাসের সাথে পাল্লা দিয়ে কুলায় ধান পরিস্কার করার কাজে ব্যস্ত। দম ফেলার সময় নেই তাদের। ধান গোলায় তোলা পরিবহনে এখন পুরো মাত্রায় ব্যস্ত গ্রামীণ জনপদের কৃষক।

সোনালী ধানের সুগন্ধে মাতোয়ারা কৃষকের আঙিনা বাম্পার ফলনের কৃষকের মন নবউদ্দীপনায় মাতোয়ারা। ধান কাটার উৎসবে আন্দোলিত গ্রামীণ জীবন। তবে বাজারে ধান বিক্রয় করতে গিয়ে নায্য মূল্য না পাওয়ায় কৃষককের মুখে সোনালী হাসির ঝিলিক মুহুর্তেই তা মিলিয়ে যায়। ৮এলাকার শস্য ভান্ডার খ্যাত ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে মূলত কৃষকরা ধান চাষের উপর নির্ভরশীল। চলতি ইরি বোরো মৌসুমে ভাল আবহাওয়া, পর্যাপ্ত সার, উন্নত বীজ ও সেচ সুবিধা নিশ্চিৎ হওয়ায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে চলতি বছর বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪হাজার হেক্টর অর্জিত হয়েছে ৪হাজার ৫শত হেক্টর।

আবাদ করা ধান লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের কৃষকরা উন্নতমানের ও জিংক সমৃদ্ধ ধানের আবাদ করেছেন। দিগন্ত জুড়ে মাঠে থাকা ধান সোনালী রং ধারণ করে ধানের শীষ বাতাসে দোল খাচ্ছে। আনন্দ আর উৎসবমূখর পরিবেশে জনপদের কৃষকরা ধান কাটছেন। ইতিমধ্যে ৬০শতাংশ ধান কৃষকরা ঘরে তুলেছেন। প্রতি হেক্টর জমিতে ৬ থেকে ৭ মে.টন পর্যন্ত ফলন হয়েছে বলে কৃষকরা জানান। অবশিষ্ট ধান কৃষকরা ঘরে তোলার ব্যস্ততার পাশাপাশি বাড়ির আঙিনায় চলছে রোদে শুকানোর কাজ, ঝাড়া থেকে শুরু করে বস্তায় ভরার কাজ। কিন্তু এক বুক আশা নিয়ে ধান বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। বর্তমানে বাজারে ধান বিক্রয় হচ্ছে মণ প্রতি ৪৮০টাকা থেকে ৫২০টাকা পর্যন্ত। পানির দরে ধান বিক্রয় করতে গিয়ে খরচের টাকাও উঠছে না। বর্গা চাষীরা, দাদনের টাকা নিয়ে ধান চাষ করা কৃষকরা দেনায় দায়গ্রস্থ হয়ে পড়ছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা জানান, প্রতি মণ ধান উৎপন্ন খরচ হয়েছে ৮০০ টাকা হতে ৯০০টাকারও অধিক। সেচ, সার, বীজ, রোপন ও নিরানী খরচ বাবাদ প্রতি বিঘা জমিতে ১৮হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। অন্য দিকে উৎপন্ন ধান বিক্রয় করতে গিয়ে খরচের টাকা উঠছে না। এর ফলে কৃষকরা আগামীতে ধান চাষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

উপজেলার সাউতিকান্দা গ্রামের ধান চাষী আ: আলী শেক ও আ: মোতালেব মাতুব্বর জানান, ধান চাষে ভালো ফলাফল হওয়া সত্বেও বাজারে বিক্রি করে খরচের টাকাও উঠেনি। এ দিয়ে আমরা চরম বিপাকে আছি। উপজেলার মালীগ্রাম হাটে ধান বিক্রয় করতে আসা ঝুমারকান্দা গ্রামের কার্তিক বিশ্বাস জানান, “ধান বেচপার আইসা দেহি ৪’শ টাহা থেকে হারে ৫’শ টাহা দাম কয়। এত্ত কম দামে ধান বেইচা আমাগো খরচার টাহাও ওডে না, কিন্তু কি হরমু, ধান বেচপার না পারলে পাওনার টাহা দিমু কেমনে?” উপজেলা কৃষি অফিসার মো: ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, চলতি বছর ভাল আবহাওয়া, পর্যাপ্ত সার ও সেচ সুবিধা নিশ্চিত হওয়ায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর ৪ হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। যা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এ ব্যপারে ভুক্তভোগীরা জানান, ধানের ন্যায্য মূল্য না পেলে নিঃস্ব কৃষকরা আগামীতে ধান চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। তারা অভিলম্বে কৃষকদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
(এসডি/পিবি/জুন ০৪,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test