E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাটে জোয়ারের পানি ও জলাবদ্ধতার শিকার ১শ হেক্টর সবজি ক্ষেত

২০১৫ আগস্ট ০৩ ১৬:০৪:১০
বাগেরহাটে জোয়ারের পানি ও জলাবদ্ধতার শিকার ১শ হেক্টর সবজি ক্ষেত

বাগেরহাট প্রতিনিধি : গত জুলাই মাস জুড়ে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ, বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটে ১শ হেক্টর সবজি ক্ষেত ৩শ হেক্টর জমির বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন জেলার দুই লক্ষfধিক চাষী।

বাগেরহাট জেলার প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে এবার সবজির চাষ করেছিল কৃষকরা। তার মধ্যে ১শ হেক্টর জমির সবজি বৃষ্টির পানি, জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানিতে নষ্ট হওয়ার কারনে বিভিন্ন এনজিও ও ধারকর্জ করে সবজির চাষ করা এসব চাষীরা এখন সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন।

অনেক চাষী এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে খেয়ে, না খেয়ে মানবেতর জীবন যাবন করছেন। আর সবজি নষ্ট হওয়ার কারণে জেলার সবজি চাষীদের ২০ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ি) সূত্রে জানা গেছে।

বাগেরহাট সদরের বানিয়াগাতি গ্রামের সবজি চাষি বলরাম বাইতি বলেন, গত বছর এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে করলা, লাউ, শসা, কুমড়া, বরবটি, কাকরোল, বেগুন, পুইশাক ও পেঁপেসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করেছিলাম তাতে ভালোই লাভ হয়েছিল। তাই অধিক লাভের আশায় এবার এনজিও থেকে বেশি পরিমান ঋণ নিয়ে ৩০ শতক জমিতে সবজির চাষ করেছিলাম। টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ক্ষেতের সবজি এখন পানির নিচে থাকায় লাভ তো দুরের কথা এনজিওর ঋণও পরিশোধ করতে পারবো না।

বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মতিন বলেন, একটানা বৃষ্টি ও ভৈরব নদীতে অতিরিক্ত জোয়ারের পনি বৃদ্ধির ফলে বেড়িবাঁধ উপচে যাত্রাপুরের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রভাবে এ ইউনিয়নের সবজি চাষীরা ব্যাপক ক্ষতির আসংক্ষায় রয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, যাত্রাপুর ইউনিয়নের অনেক পরিবার আছে যারা শুধু সবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জলাবদ্ধার শিকার হয়ে ওই সকল সবজি চাষিরা সব হারিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

অপরদিকে চলতি বছরের আমন মৌসুমে জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে জেলার ৩শ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে বাগেরহাট কৃষি সম্প্রশারন অধিদপ্তর (খামারবাড়ী) সূত্রে জানাগেছে। আর এ পরিমান ক্ষতির শিকার হয়ে বাগেরহাট সদরসহ উপজেলার ধান চাষীরা এখন সর্বশান্ত। এ অবস্থায় জেলার অনেক চাষী এখন পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে। আর কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি স্বত্বেও সরকারের তরফ থেকে কোন ধরনের ত্রাণ বা সাহায্য সহযোগিতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জলাবদ্ধার শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক চাষী।

বাগেরহাট শরনখোলা উপজেলা ধান চাষী রফিকুল ইসলাম বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধার শিকার হয়ে চলতি আমন মৌসুমে শরনখোলা উপজেলার অনেক আমন চাষীর বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকে জমিতে বীজতলা করতে না পেরে বাড়ির উঠানে বা আঙ্গিনায় বীজতলা করেছে। তারপরও যেভাবে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বাড়ছে তাতে এ উপজেলার চাষিরা এবার নতুন করে বীজতলা করতে পারবে কি না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সন্দেহ। এ অবস্থায় তিনি সরকারের কাছে চাষীদের জন্য অর্থিক ও সার্বিক সহায়তা কামনা করেছেন।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর (খামারবাড়ি) উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বলেন, টানা বর্ষণ, জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানিতে জেলার ১শ হেক্টর সবজি ক্ষেত ও ৩শ হেক্টর বীজতলা নষ্ট হওয়ার কারনে জেলার প্রন্তিক চাষীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। যা টাকার অঙ্কে হিসেব করলে জেলার সবজি ও বীজতলা মিলে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।

(একে/এসএফকে/আগস্ট ০৩, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test