E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরিশালে আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমণ

২০১৫ অক্টোবর ১৬ ১৫:৪০:৩৭
বরিশালে আমন ক্ষেতে পোকার আক্রমণ

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : জেলার দশটি উপজেলাসহ কৃষি অঞ্চলের ১১জেলায় রোপা আমনের ক্ষেত জুড়ে নানা রোগ বালাইয়ের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কৃষককে এসব রোগবালাই দমনে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। খোলপঁচা ও পাতা ঝলসানো রোগের আক্রমণ কিছুটা কমলেও হঠাৎ করে কারেন্ট পোকার আক্রমণ কৃষকদের দিশেহারা করে তুলেছে। দ্রুত এসব পোকার আক্রমণ দমন করা না গেলে ফলন অন্যবছরের চেয়ে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

ভুক্তভোগী একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আমন বীজ রোপনের শুরুতে একাধিকবার বৈরি আবহাওয়ার কারণে এমনিতেই চাষীরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। বর্তমানে অধিকাংশ রোপা আমন ক্ষেতে শীষ বের হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ পূর্বে ক্ষেতে খোলপঁচা ও পাতা ঝলসানো রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এ রোগ থেকে দ্রুত রেহাই পেতে তারা ইতোমধ্যে ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করেও তেমন কোন সুফল পাচ্ছেন না। এরমধ্যে গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দেয়ায় দিশেহারা হয়ে তারা (কৃষক) পুনরায় জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন।

জেলার গৌরনদী উপজেলার গেরাকুল গ্রামের কৃষক শাহানুর বেপারী জানান, তিনি ৪০ শতক জমিতে রোপা আমনের আবাদ করেছেন। ধানের ফলন ভাল হলেও গত কয়েকদিন পূর্বে শীষ ধরা ধানে খোলপঁচা ও পাতা ঝলসানোসহ কারেন্ট পোকা আক্রমণ করছে। ধানের গোছার মাঝখান থেকে শীষ কেটে দেয়ায় ওই শীষ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে।

কীটনাশক প্রয়োগ করেও তেমন একটা ফল পাওয়া যাচ্ছে না। ভূক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, বিভিন্ন ডিলার ও খুচরা দোকানে ভেজাল কীটনাশক দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কীটনাশক ক্রয় করে ক্ষেতে ছিটিয়েও কোন প্রতিকার মিলছেনা। গৌরনদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, রোগ প্রতিরোধে প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামে চাষীদের নিয়ে রোগ বালাইনাশক ব্যবহারের কর্মশালা ও উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে চাষীদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছেন।

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কৃষি অঞ্চলের ১১জেলায় আমন চাষাবাদের জন্য ৭লাখ ৮২হাজার ৭৫৯ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধার করা হয়েছিল। আর ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল ১৬লাখ ২০হাজার ৩৩মেট্রিকটন। নানা প্রতিকূলতার (বৈরী আবহাওয়া) মাঝেও কৃষকেরা এ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮হাজার ৮শত ১৪হেক্টর বেশি জমিতে আমন আবাদ করেছেন।

এবার ৭লাখ ৮২হাজার ৭৫৯ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কৃষক চাষাবাদ করেছে ৮লাখ ১১হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে। সূত্রে আরও জানা গেছে, কৃষি অঞ্চলের ১১ জেলা হচ্ছে বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠী, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী ও শরিয়তপুর।

রোপা আমনের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বাম্পার ফলন হয়েছে বলে দাবি করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুল আজিজ ফরাজি বলেন, মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে কৃষকেরা জমিতে বালাই নাশক নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করায় ইতিমধ্যে খোলপঁচা ও পাতা ঝলসানো রোগ নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তিনি আরও বলেন, কোনো এলাকা থেকে এখনো কারেন্ট পোকার আক্রমণের খবর পাওয়া যায়নি। সবমিলিয়ে মাঠের সার্বিক অবস্থা ভাল দাবি করে ও ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রতিটি এলাকার কৃষি কর্মকর্তাসহ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগন সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছেন। এছাড়া অফিস থেকেও রোগ অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হচ্ছে।

(টিবি/এএস/অক্টোবর ১৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test