E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শেরপুরে ধান রোপন যন্ত্রের প্রদর্শনী মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

২০১৪ মে ২৭ ১৮:১৪:১৫
শেরপুরে ধান রোপন যন্ত্রের প্রদর্শনী মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

শেরপুর প্রতিনিধি : ‘রাইস ট্রান্সপ্লান্টার’ বা ধান রোপন যন্ত্রে তিন ঘন্টায় এক একর জমিতে ধান রোপনে খরচ পড়ে মাত্র পাঁচশ’ টাকা। অথচ এক একর জমি রোপন করতে ১০ জন কৃষি শ্রমিকের প্রায় একদিন সময় লাগে এব খরচও পড়ে প্রায় তিন হাজার টাকা। কিন্তু রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে এক একর জমি রোপন করতে যে পেট্রোল খরচ হয় তার দাম পড়ে মাত্র পাঁচ শত টাকা। এতে সময় ও শ্রমিক সাশ্রয়ের সাথে সাথে খরচও কম হয়।

শেরপুরের নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুর আলগা গ্রামে ২৭ মে মঙ্গলবার বিকেলে ‘রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার’ বা ধান রোপন যন্ত্রের এক প্রদর্শনী মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রদর্শনীতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে এলাকার শত শত কৃষক-কৃষানী উপস্থিত থেকে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের ধান রোপন স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেন। এসময় তারা অল্প সময়ে রাইস ট্রান্সপ্লাটারে ধান রোপনের দৃশ্য দেখে বিস্ময়াভিভুত হন। কৃষি ক্ষেত্রে যন্ত্রটি নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে বলে কৃষকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তারা এ যন্ত্রটি সম্পর্কে আগ্রহ সহকারে কৃষি কর্মকর্তাদের নিকট বিস্তারিত জানতে যান। এ প্রদর্শনী মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুভাষ চন্দ্র দেবনাথ। এসময় নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন এবং জেলা কৃষি তথ্য কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার উপস্থিত ছিলেন।
কৃষক শাহ মো. ইমরান বলেন, ইমুন যন্ত্রতো এর আগে দেহি নাই। হুমানে ধান লাগাই হালাইলো। সুময়ও কমল লাগলো। লাইনও অনেক সোজা হয়। কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, অহনতো মৌসুমের সুময় লেবার পাওয়া যায়না, দামও বেশী লাগে। লাগানোর সুময় ইমুন যন্ত্র থাকলে লেবারের সংকট থাইকা বাঁচা যাবো। সুময়ও সাশ্রয় হবো, খরচও কম লাগবো। যন্ত্রটি আমগর জইন্য ভালোই হবো। কৃষাণী স্বর্ণা সূত্রধর বলেন, এই ধরনের যন্ত্র অইলেতো আমগর কৃষকগরে জন্য ভালোই অয়। সরকারও যুদি এলাকায় এলাকায় ই ধরনের যন্ত্র দিবার ব্যবস্থা করে তবে খুবই ভালো হতো।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। সরকারও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ফসলের মৌসুমে শ্রমিক সংকট বিবেচনায় ফসল আবাদে খরচ কমিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি খামার যান্ত্রিকীকরনের লক্ষ্যে নতুন নতুন প্রযুক্তি প্রবর্তনের চেষ্টা করছে। কৃষি কর্মকর্তারা আশা করছেন, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রটি কৃষকদের মাঝে দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে এবং এতে কৃষকরা অধিক লাভবান হতে পারবেন।
শেরপুর খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুভাষ চন্দ্র দেবনাথ জানান, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে ঘন্টায় এক বিঘা জমির ধানের চারা রোপন করা যায়। অর্থাৎ তিন ঘন্টায় এক একর জমি রোপন করা যায়। অথচ এক একর জমি রোপন করতে দশজন শ্রমিকের সারাদিন লাগে। এতে খরচ পড়ে তিন হাজার টাকা। কিন্তু রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে এক একর জমি রোপন করতে যে পেট্রোল খরচ হয় তার দাম পড়ে মাত্র পাঁচ শত টাকা। এতে সময় ও শ্রমিক সাশ্রয়ের সাথে সাথে খরচও কম হয়।
নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন বলেন, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রটির দামেও কম, সহজে বহন ও পরিচালনযোগ্য। একেকটি রাইস প্লান্টারের দাম পড়ে মাত্র দেড়লাখ টাকা। সম্পন্ন কৃষকরা নিজেরা এটি কিনতে পারেন কিংবা কয়েকজন কৃষক মিলে এটি কিনে নিজেরা ধান রোপন কাজ করার পাশপাশি ভাড়ায়ও এটি খাটাতে পারেন। এতে নতুন কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি জানান, সরকার কৃষি খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় ভবিষ্যতে শতকরা ২৫ ভাগ ভর্তুকি মুল্যে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার কৃষকদের মধ্যে বিক্রীর জন্য চিন্তা ভাবনা করছে।
(এইচবি/এএস/মে ২৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test