E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

নন্দীগ্রামে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ

২০১৬ জানুয়ারি ২০ ১৯:৩০:২৭
নন্দীগ্রামে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ

এম নজরুল ইসলাম,নন্দীগ্রাম(বগুড়া)থেকে: বগুড়ার নন্দীগ্রামে শীতের ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে আলু চাষের জমির পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন চাষীরা। চলতি রবিশস্য মৌসুমে গতবারের তুলনায় এবার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে বেশী আলু চাষ করা হয়েছে। এউপজেলায় আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। গতবারের তুলনায় এবারও উপজেলায় রবিশস্য’র ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে।

কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গতবার রবি মৌসুমে পৌরসভা এলাকাসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ১৯শ’ ৩৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও সেখানে আবাদ হয়েছিল ২৪শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে। আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৪ হাজার ৩শ’ ৭৬ মেট্রিকটন। এবার চলতি মৌসুমে ২৫শ’ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই তুলনায় ৩হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হচ্ছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৭শ’ ৫০ মেট্রিকটন। গতবারের তুলনায় চাষিরা বেশী জমিতে আলু চাষ করছেন। কার্ডিনাল ৪৫০ হেক্টর, ডায়মন্ড ১৫শ’ হেক্টর, এ্যাসটিক ৬শ’ হেক্টর, রোমানা ১৫০ হেক্টর ও পাকড়ি জাতের আলু ৩০০ হেক্টর জমিসহ দেশীয় বিভিন্ন জাতের আলুর চাষ করেছে কৃষকেরা।

শস্যভান্ডার হিসেবে খ্যাত এউপজেলায় বছরে ৩বার ধানের চাষাবাদ হয়। আমন ধান কাটার পর শুরু হয় রবিশস্য’র চাষাবাদ। কৃষকরা আলুর বাম্পার ফলনের আশায় চাষাবাদি জমিতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। শীতের কুয়াশা উপেক্ষা করে কৃষকরা আলুর জমি পরিচর্যা করছেন। গতবার প্রতিবিঘা জমিতে ১১০মণ থেকে ১২০মণ করে আলুর ফলন হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, গতবারের তুলনায় এবারও এউপজেলায় আলুর বাম্পার ফলন হবে। বিগত দিনের চেয়ে এবার আলুর চাষ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন জাতের আলু চাষে উপজেলার কৃষকরা ব্যাপক বিপ্লব ঘটিয়েছেন। মাঠ পর্যায়ে কৃষি অফিসের যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে আলু ক্ষেতে প্রায় শতভাগ রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণসহ বিনা মূল্যে রাসয়নিক সার যথাসময়ে বিতরণ করায় এ উপজেলার দ্র্যরিদ্র কৃষকদের আগাম জাতের আলু লাগানো সম্ভব হয়েছে। উপজেলার ভাটগ্রাম, পোতা, মুরাদপুর, বুড়ইল, রিধইল, বর্ষন, চাকলমা, পাঠান, সিংজানী, ডেরাহার, হাটলাল, হাটকড়ই, বীজরুল, বাঁশো, বীরপলী, থালতা মাঝগ্রাম, গুলিয়া, চাপাপুর, হরিহারাসহ কয়েকটি গ্রামের মাঠে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, লালপাকরী ও দেশী জাতের আলু লাগিয়েছেন। মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সকল ধরনের পরামর্শ প্রদান করছেন। যথাযথভাবে চাষাবাদি আলু জমির পরিচর্যা করছেন চাষিরা। উপজেলার তুলাশন গ্রামের রফিকুল ইসলাম গতবার ৬বিঘা জমিতে ডায়মন্ড আলু চাষ করে বাম্পার ফলন ও দ্বিগুন লাভ হওয়ায় এবার ১৮বিঘা জমিতে ডায়মন্ড আলুর চাষ করছেন। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও আলু জমিতে রোগবালাই আক্রমন না করলে এবছরও আলুর ফলন হবে দ্বিগুন। এমনটাই আশা প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা।

রিধইল গ্রামের আলু চাষি ফজলুর রহমান, আব্দুল বাছেদ, ধুন্দার গ্রামের শাজাহান আলী, রফিক, তুলাশন গ্রামের জিন্নাত জানান, যথাযথভাবে আলুর জমির যতœ করা হচ্ছে। আশা করা যায় আলুর ফলন হবে দ্বিগুন। কৃষি অফিসের পরামর্শে সঠিক পরিচর্যা ও সুষম সার ব্যবহারে গতবার আলু চাষ করে বাম্পার ফলনের পাশাপাশি দ্বিগুন লাভ হয়েছিল। এবারও আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হবে বলে তারা আশাবাদী। এপ্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসার মুহা: মুশিদুল হক জানান, সব ধরণের ফসল ভালভাবে উৎপাদনের জন্য কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। উপজেলায় বিগত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ৫৭৫ হেক্টর বেশি জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। যথা সময়ে জমি চাষ যোগ্য হওয়ায় কৃষকরা সুযোগ বুঝে আলু রোপন করেছেন। প্রাকৃতিক দূর্যোগে না হলে উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।

(এমএনআই/এস/জানুয়ারি ২০,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test