E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোরে আড়াই’শ কোটি টাকার মসুর ডাল উৎপাদনের সম্ভাবনা

২০১৬ মার্চ ০১ ১৪:২২:৪৮
নাটোরে আড়াই’শ কোটি টাকার মসুর ডাল উৎপাদনের সম্ভাবনা

মামুনুর রশীদ, নাটোর : উত্তরের কৃষি প্রধান জেলা নাটোরে মসুর ডাল চাষের পরিধি বাড়ছে। কম সময়ে অধিক লাভবান হওয়ায় গত ৪ বছরে অন্তত ৮০ শতাংশ হারে মসুর ডালের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কৃষি বিভাগ দাবি করেছে।

চলতি মৌসুমে মসুর চাষে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করলেও কৃষকরা সব কিছু ছাপিয়ে ব্যাপক পরিমান জমিতে মশুর চাষ করেছেন। আগামী ১৫ থেকে ২০দিনের মধ্যেই তারা মসুর ডাল ঘরে তুলতে শুরু করবেন। কৃষি সংশ্লিষ্টদের মতে, এসময়ের মধ্যে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং কৃষকরা ভালোয় ভালো ফসল ঘরে তুলতে পারলে চলতি বছর অন্তত ২৫২কোটি ২৯ লাখ টাকার মসুর উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, নাটোর জেলায় গত ২০১২-১৩ মৌসুমে ২৩ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে মসুর ডাল চাষ হয়। এতে মসুর ডাল উৎপাদন হয় ৩৬ হাজার ১৮৫ মেট্রিক টন। ২০১৩-১৪ মৌসুমে মসুর আবাদ বেড়ে ২৪ হাজার ৬২১ হেক্টর জমিতে চাষ হয়। এতে প্রায় ৩৫ হাজার ১৫২ মেট্রিক টন মসুর উৎপাদন হয়। ২০১৪-১৫ মৌসুমে আরো মসুর আবাদ বেড়ে ২৬ হাজার ১৮৮হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়। ওই মৌসুমে উৎপাদন হয় ৩৭ হাজার ৯৭২মেট্রিক টন। তবে চলতি মৌসুমে বিগত মৌসুমের তুলনায় মসুর আবাদ বেড়ে ২৬ হাজার ৪০৩ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৭ হাজার ৭২৫মেট্রিক টন। বর্তমানে মসুরের বাজার দর ভালো থাকায় কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী চলতি বছর অন্তত ২৫২কোটি ২৯ লাখ টাকার মসুর উৎপাদন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

এদিকে স্থানীয় মসুর চাষীরা জানান, অন্যন্য চৈতালী ফসলের চেয়ে মসুর ডাল চাষ করা অত্যন্ত একটি লাভজনক ফসল।

মাত্র তিন থেকে চার মাসের মধ্যে মসুর ডাল ঘরে তোলা যায়। এছাড়া গম,ভুট্টা সহ অন্যন্য ফসলের চেয়ে সেচ এবং সার,কীটনাশক খরচও কম। ফলে স্বল্প খরচে বেশি লাভজনক হওয়ায় দিন দিন মসুর ডাল চাষে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। তবে চলতি বছরের ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মসুর ডালের একটু ক্ষতি হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেতে ভাইরাস জনিত কারণে পোকার আক্রমনে মসুর ডালের গাছ মারা গেছে। এরপরও গাছে যে পরিমান ডাল রয়েছে খরচের টাকা উঠে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নাটোর সদর উপজেলার বাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক সুমন হোসেন জানান, বৈরী আবহাওয়া না থাকলে এক বিঘা জমিতে ৬ থেকে ৮মন হারে মসুর ডাল উৎপাদন হয়। এতে মন প্রতি তিন হাজার টাকা দর হলেও ২৪ হাজার টাকার মসুর বিক্রি করা সম্ভব হবে।

নলডাঙ্গা উপজেলার শাখাড়িপাড়া এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে মসুর ডাল চাষ করেছেন। দুই বিঘা জমিতে তার সব মিলে খরচ হয়েছে মাত্র ৬ হাজার টাকা। যদি মসুরের বাম্পার ফলন হয় এবার তার দুই বিঘা জমি থেকে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার মসুর বিক্রি করতে পারবেন।

নাটোর কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক ড. আলহাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, মসুর একটি লাভজনক ফসল। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন মসুর আবাদের দিকে কৃষকরা ঝুঁকে পড়ছে। আগামীতে আরো বেশি পরিমানে মসুর আবাদের পরিমান বাড়বে বলে আশা করছি। তিনি আরো বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসের শেষ দিকে মৃদু শৈত প্রবাহ এবং বৃষ্টির কারনে সামান্য পরিমানে মসুর গাছ ক্ষতি হয়েছে। তবে বর্তমানে মসুর ডালের দাম বেশি থাকায় সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে কৃষকরা।

(এমআর/এএস/০১ মার্চ, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test