E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রায়পুরে সয়াবিনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় চাষীদের মুখে হাসি

২০১৬ মার্চ ১৮ ১৫:৩৬:৩০
রায়পুরে সয়াবিনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় চাষীদের মুখে হাসি

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : আর একমাস পরেই সোনার ফসল সয়াবিন ঘরে তুলবে কৃষকরা। পাক ধরা সবুজ সয়াবিন ধুসর হয়ে উঠেছে। বাম্পার ফলনের আশায় ক্ষেতে ক্ষেতে আগাছা পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে তারা।

কৃষকদের পাশাপশি কৃষাণীরাও রোদে পুড়ে পরিচর্যার কাজ করছেন । বাম্পার ফলনে এবার সকল কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। চলতি রবি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের তুলনায় এবার সোনার ফসল সয়াবিনের বাম্পার ফলন হবে এমনই প্রত্যাশা করছে এ জেলার কৃষকরা। জেলায় সয়াবিন প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার ব্যবস্থা থাকলে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ হতো তেমনি চাষীরা ন্যায্যমূল্য পেত বলে মনে করছেন কৃষিবোদ্ধারা। এসয়াবিন জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের রাজধানী, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হয়ে থাকে।

সরেজমিনে উপজেলার চরবংশী ও চরআবাবিল গ্রামের সয়াবিনের ক্ষেতগুলো ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে যেন সবুজের আবরণে ঢেকে রেখেছে সয়াবিন ক্ষেত। দক্ষিণা হাওয়ায় দুলছে সয়াবিনের গাছগুলো। অসংখ্য গাছে সবুজ সয়াবিন পাকতে শুরু করেছে। সয়াবিন ক্ষেতে দুরন্তপনায় মেতে উঠেছে কৃষক পরিবারের শিশুরা। আর পোকা-মাকড় থেকে রক্ষা পেতে ফুটপাত দিয়ে কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করছে কৃষকরা। অধিকাংশ কৃষক জানায়, খরচের তুলনায় অধিক লাভবান হওয়ায় দিন দিন তারা সয়াবিন আবাদে আগ্রহী হয়েছে।

চরবংশী গ্রামের কৃষক মোস্তফা বেপারী বলেন, ‘এ বছর ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে সয়াবিনের আবাদ করেছি। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে গত বছরের চেয়েও এবার ভালো ফসল হবে। তবে এখানে সয়াবিন প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা থাকলে আমরা আরো বেশি লাভবান হতে পারতাম।’

মেঘনা পাড়ের কৃষক মন্নান মিয়া জানান, উৎপাদিত সয়াবিন বিক্রি করে তার পরিবারের ভরণ-পোষণ চলে। এবার প্রায় ৩ একর জমিতে ২৫ হাজার টাকা খরচ করে সয়াবিন চাষ করেছেন তিনি। ভালো ফলনের আশায় তাই পরিবারের লোকজন নিয়ে তিনি সয়াবিন ক্ষেতের আগাছা দমন কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এবার সয়াবিনের ৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ করা হয়েছে। রায়পু উপজেলায় ৭ হাজার ৭শ হেক্টর, সদর উপজেলায় ৮ হাজার ২৫০ হেক্টর, রামগঞ্জ উপজেলায় ৮০ হেক্টর, রামগতি উপজেলায় ১৮ হাজার ৬শ হেক্টর ও কমলনগর উপজেলায় ১৮ হাজার ৯০ হেক্টর জমিসহ জেলায় মোট ৫২হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে। প্রতি একর সয়াবিন উৎপাদনে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। যার বিক্রয় মূল্য ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এ ফসল জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হয়।

রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জহির আহম্মেদ জানান, রায়পুর উপজেলায় ৭ হাজার ৭শ হেক্টরসহ জেলায় ৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে। এ সয়াবিন থেকে পুষ্টিকর খাবার সয়াদুধ, সয়ানাগের ও সয়াতপুসহ বিভিন্ন খাদ্য তৈরি হয়। সয়াবিন প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার ব্যবস্থা করা হলে যেমন কর্মস্থানের সুযোগ হতো, তেমনি চাষীরা ন্যায্যমূল্য পেতো বলে জানান এ কৃষিবিদ।

(পিকেআর/এএস/মার্চ ১৮, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test