E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ

২০১৬ জুলাই ২১ ১৭:৪১:১৫
সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে খালবিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে সনাতন পদ্ধতিতে পাটজাগ দেয়ায় পানি পচে তা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে একদিকে যেমন পানি পঁচে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে অন্যদিকে বিভিন্ন প্রজাতির দেশী মাছের নিধন হচ্ছে।

পানিবাহিত নানা রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।কৃষকদের অসচেতনের কারণে এমনটি ঘটলেও পাট পঁচানোর রিবন রেটিং পদ্ধতিতে ব্যবহারে উৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগের তেমন কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।ফলে শত বছরের সেই সনাতন পদ্ধতিতে পাটজাগ দিয়ে আসছে কৃষকরা।

নিয়ম অনুযায়ি জমি থেকে পাট গাছ কাটার পর তা সরাসরি পানিতে জাগ দেয়ার পরিবর্তে মেশিনের মাধ্যমে কাঁচা পাটগাছ থেকে আশ সরিয়ে তা গাটবেধে মাটিতে গর্ত করে সেগুলো রেখে কিছুটা পানি ও ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। এভাবে কিছুদিন পর পাটের আশ পচে যাওয়ার তা দিয়ে শুকাতে হয়। তবে কৃষকরা বলছেন, তারা এ পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুই জানে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষিবিভাগের নিয়োগকৃত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ রিবন-রেটিং পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকদের কিছুই জানান নি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাটজাগ দিতে দেখা গেছে। নাগর ও কুলিক নদী ছাড়াও পুকুর ও ডোবাতে পাট জাগ দেয়া হচ্ছে। পাট চাষী হরিপুর উপজেলার মশানগাঁও গ্রামের আব্দুল জানান, রিবন ও রেটিং সম্পর্কে এ গ্রামের চাষীরা জানেন না। পাট পঁচানোর বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় পরিবেশ দূষণ জেনেও এক রকম বাধ্য হয়ে তারা খালে বিলে পুকুরে পাট জাগ দিচ্ছেন। রুহিয়া গ্রামের বাবুল জানান, তিনি এবার দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। রিবন রেটিং পদ্ধতি কি তা তিনি জানেন না। কোন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসেননি এ পদ্ধতিতে পাট জাগ দেয়ার কথা বলতে। তাই পুকুরে মাছ চাষ বন্ধ করে পাট জাগ দিচ্ছেন। একই কথা জানান উপজেলা টেংরিয়া গ্রামের গোলাম, শামসুল।

উপজেলা চেয়ারম্যান জানান বিভিন্ন জলাশয়ে পাট জাগ দেয়ায় পরিবেশের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি দেশি প্রজাতির মাছ ধ্বংস হচ্ছে। আবার অনেকে পুকুরের মাছ চাষ বন্ধ করে পাটজাগ দিচ্ছে। ফলে মাছের অকাল দেখা দিতে পারে।

হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার বলেন, পাট পঁচানো পানিতে কাজ করা ছাড়াও ঐ পানি ব্যবহার করায় নানান রোগ দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে চুলকানি খোসপাঁচড়া,সর্দিকাশিসহ জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

এ ব্যাপারে হরিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নঈমুল হুদা সরকার জানান, নদী ও খাল বিলে পাট জাগ দেয়ায় কৃষকদের একটি দীর্ঘদিনের অভ্যাস। কিন্তু এটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের রিবন-রেটিং পদ্ধতির ব্যাপারে সচেতন করা হচ্ছে। নতুন পদ্ধতিতে কৃষকদের অভ্যাস হতে একটু সময় লাগবে।

(এফআইআর/এএস/জুলাই ২১, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test