E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রায়পুরে আমন ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

২০১৬ নভেম্বর ২২ ১৩:৪৩:২৫
রায়পুরে আমন ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

রায়পুর(লক্ষ্মীপুর)প্রতিনিধি :লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করেছেন কৃষকেরা। ধানকাটা ও মাড়াই শুরু হওয়ার মাঝেই কৃষকরা প্রত্যাশা করছেন এবার সর্বোচ্চ ফলন ঘরে তুলবেন ।  আমনের বাম্পার  ফলন হলেও দেশীয় প্রজাতি ক্রমান্বয়ে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় প্রাণের সে সব জাতের জন্য অনুশোচনা ও করছেন তারা।

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়, ধান কাটার সঙ্গে কৃষক বধূরাও থেমে নেই। ধান কেটে বাড়ি আনা, ধান মাড়াই, শুকিয়ে ঘরে তোলা, এ কাজ করছেন কৃষকদের সাথে কৃষাণী ও কৃষাণ মেয়েরা। কৃষকরা জানান এবার আমন আবাদের শুরু থেকে যথা সময়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত এং রোগ বালাই কম হওয়ায় ভালো ফলন হয়েছে।

রায়পুর উপজেলার চরবংশী ও উদ্মারা গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন ও সিরাজ মিয়া জানান, তিনি ১.৫ একর জমিতে আমন ধান আবাদ করে সর্বোচ্চ ফলন কাটবেন বলে আশা করছেন। ক্ষেতের ফলন ভাল হয়েছে। ধানে চিটা নেই বললেই চলে।

রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জহির আহম্মেদ জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়েছে। ফলে আমনের ফলন ভালো হয়েছে। জেলার ৫টি উপজেলার শতকরা ৯০ ভাগ কৃষক চলতি মৌসুমে হাইব্রিড ও ব্রি ধান চাষ করেছেন। হাইব্রিড ও ব্রি ধান দেশীয় প্রজাতির তুলনায় তিনগুণ ফলন দেয় এবং সময় কম লাগে এতে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। হাইব্রিড ও ব্রি ধান চাষ বেড়ে যাওয়ায় ক্রমে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশী নানা বাহারি নামে ধান।

কৃষকরা জানান, নতুন নতুন জাতের আমন ধান কৃষককে উজ্জীবিত করছে। যার ফলে দেশীয় বৈচিত্র্যময় জাতগুলো ক্রমান্বয়ে বিলুপ্ত হচ্ছে। কৃষকরা জানান, ইতোমধ্যে স্থানীয় বিখ্যাত ধান গিগজ, লোহাচুরা, কাজল শাইল, রাজা শাইল, কার্তিক শাইল, মধুমালতি, কুটিয়া মনি, ধলামোডা, বালাম, মইশা মিরা, পাটজাত, দেশীয় পাইজামের মতো কয়েকটি ভালো জাত বিলুপ্ত হতে চলছে। ভালো ফলনের পাশাপাশি এ সব জাত টিকে রাখার দাবিও তাদের।

অন্যদিকে আমনে বাম্পার ফলন হলেও কাটার শ্রমিক এবং মাড়াই নিয়ে আশংকায় কৃষক। কৃষকরা জানান, দিন হাজিরায় যেসব শ্রমিক কাজ করতেন, এবার তারা ২৫০ টাকার নিচে কাজ করছেন না। কোনো কোনো স্থানে তিন বেলা খাওয়াসহ ৩০০ টাকা হাজিরা পাচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রারণ কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান, চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ৭৮ হাজার ২শ ৬০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। যদিও লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৩ হাজার ৩শ ২৩ হেক্টর। উৎপাদিত এ সকল জমি থেকে এ বছর লক্ষ্মীপুরে ১ লাখ ৮৩ হাজার ১শ ৬৫ মেঃ টন চাল উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন জেলা কৃষি অফিস। জেলা কৃষি সম্প্রারণ কার্যালয়ের কর্মকর্তা আবুল হোসেন দেয়া তথ্য মতে এ বছর রামগতিতে আমনের চাষ হয়েছে ২৪ হাজার হেক্টর, লক্ষ্মীপুর সদরে ২১ হাজার ৫শ ৫০, কমলনগরে ২০ হাজার ৪শ ১০, রায়পুরে রোপা আমন ৯ হাজার ও বোনা আমন ৩ হাজার এবং রামগঞ্জে ৩৩শ হেক্টর। পুরো জেলায় এবার দেশীয় ধানের চাষ হয়েছে ১৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে।






(পিকেআর/এস/নভেম্বর ২২, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test