E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেমের ডিজিটাল পাওয়ার টিলার

২০১৬ ডিসেম্বর ২৬ ১৫:৩৭:০৯
রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেমের ডিজিটাল পাওয়ার টিলার

দিনাজপুর প্রতিনিধি : হারবেস্টার মেশিন তৈরিতে সফলতার পর এবার চালক ছাড়াই জমি চাষ করতে সক্ষম রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেমের ডিজিটাল পাওয়ার টিলার তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর সেই পল্লী চিকিৎসক আনোয়ার হোসেন।

চালক ছাড়াই রিমোট কন্টোল সিস্টেমের ডিজিটাল পাওয়ার টিলারে জমি চাষ দেখার জন্য এলাকার জমিতে ভিড় জমছে উৎসুক কৃষকসহ সর্বস্তরের মানুষের।

উপজেলার ২নং আলাদিপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আনোয়ার হোসেন সম্পূর্ণ নিজস্ব মেধাশক্তি ও দেশিয় প্রযুক্তিতে তৈরি চালক ছাড়াই জমি চাষ করতে সক্ষম ডিজিটাল পাওয়ার টিলারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তফা। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এহেতেশাম রেজা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এটিএম হামীম আশরাফসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সহস্রাধিক কৃষক ও কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ডিজিটাল পাওয়ার টিলারের উদ্ভাবক আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০১৩ সালে পরিকল্পনা করেন পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টরের মাঝামাঝি অত্যাধুনিক রিমোট কন্টোল সিস্টেমে জমি চাষের উপযোগী একটি ডিজিটাল পাওয়ার টিলার তৈরির। এতে জ্বালানী খরচ কম হবে এবং জমি চাষের ব্যয়ও কমে আসার পাশাপাশি দ্রুততম সময়ের মধ্যে চালক ছাড়াই জমি চাষ করা যাবে। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর চলতি বছরের নভেম্বর মাসে সম্পূর্ণ দেশিয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করেন চালক ছাড়াই চলতে সক্ষম ডিজিটাল পাওয়ার টিলার। যা ১৯ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর থেকে এলাকায় বানিজ্যিক ভিত্তিতে জমি চাষ শুরু করেছেন। অন্য পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টর দিয়ে এক একর জমি চাষ করতে কৃষকের খরচ হচ্ছে ১ হাজার টাকা, সেখানে তিনি একই পরিমাণ জমি তার উদ্ভাবিত ডিজিটাল পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করছেন ৮০০টাকায়। এক একর জমি চাষ করতে সময় লাগছে এক ঘন্টা এবং জ্বালানি হিসেবে ডিজেল লাগছে ৩ থেকে ৪ লিটার। এই পাওয়ার টিলার তৈরিতে তার ব্যয় হয়েছে সোয়া তিন লাখ টাকা। তবে তিনি বানিজ্যিকভাবে বাজারজাত করবেন পাঁচ বছরের গ্যারান্টিসহ সাড়ে তিন লাখ টাকায়। এর খুচরা যন্ত্রাংশের সহজলভ্যতা রয়েছে। যা বাজারের অন্যসব জমি চাষাবাদ যন্ত্রের চেয়ে মূল্য অনেক কম। জমি চাষ মৌসুমে পর এই ডিজিটাল পাওয়ার টিলার দিয়ে তিন টন ওজনের পণ্য পরিবহণও করা যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এহেতেশাম রেজা বলেন, পল্লী চিকিৎসক আনোয়ার হোসেনের উদ্ভাবিত ডিজিটাল পাওয়ার টিলার তৈরি দেশের জন্য বড় অর্জন। এই ডিজিটাল পাওয়ার টিলার বানিজ্যিকভাবে প্রসার ঘটলে বিদেশ থেকে এমন যন্ত্র আমদানি করতে হবে না, এতে দেশের অর্থ দেশেই থাকবে। সকল কৃষকের উচিত এই ডিজিটাল পাওয়ার টিলার ব্যবহার করে দেশিয় প্রযুক্তি তৈরিতে উৎসাহিত করা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এটিএম হামিম আশরাফ বলেন, এই ডিজিটাল পাওয়ার টিলারটি বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পাওয়ার টিলারগুলোর চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। এটি জমির গভীরতা পর্যন্ত চাষ করতে সক্ষম। এতে ফসলের উৎপাদনও বেড়ে যাবে। বিদেশি যন্ত্রের বদলে এই ডিজিটাল পাওয়ার টিলারটি ব্যবহারের জন্য সকল কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তফা বলেন, পল্লী চিকিৎসক আনোয়ার হোসেন জমিতে ধান কাটা-মাড়া ও বস্তাজাত করার হারবেস্টার মেশিন তৈরি করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। হারবেস্টার মেশিন তৈরির জন্য তিনি ইতোপূর্বে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কারও পেয়েছেন। আগামীতে তার তৈরি ডিজিটাল পাওয়ার টিলারটিও কৃষক ও কৃষির উন্নয়নের ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এবং এটি এলাকার নয় দেশবাসীর কাছে জনপ্রিয় কৃষি যন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

(এসিজি/এএস/ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test