E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গলাচিপায় টানা ৪ দিনের বর্ষণে রবিশস্যের ক্ষতি

২০১৭ মার্চ ১৩ ১৪:০১:৩৪
গলাচিপায় টানা ৪ দিনের বর্ষণে রবিশস্যের ক্ষতি

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : গলাচিপায় বৃষ্টি প্রথম দিকে কৃষকদের কাছে আর্শীবাদ হয়ে দেখা দিলেও এখন তা দাড়িয়েছে অভিশাপে। গত ৪ দিনে মাঝারী থেকে ভারী বর্ষনে রবিশস্যের দফারফা সারা হয়েছে। প্রায় ক্ষেতেই বৃষ্টির পানি জমে তলিয়ে আছে। গাছের শিকড় পচে পাতা ও কান্ড নেতিয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আলু ও তরমুজ চাষীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া মুগডাল, মরিচ, চিনাবাদাম, তিলসহ অন্যান্য রবিশস্যেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে চলছে আহাজারি। তাদেরবুকফাটা বোবাকান্নায় আকাশ বাতাস হয়ে রয়েছে ভারী।

এদিকে কৃষকরা তাদের আলু, তরমুজসহ রবিশস্যের ক্ষতির পরিমান প্রায় শতভাগ বলে জানান। এতে টাকার হিসাবে তাদের ক্ষতি হয়েছে ১০ কোটি টাকার উপরে। তবে গলাচিপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আঃ মান্নান প্রাথমিকভাবে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী ক্ষতির পরিমান শতকরা ৮০ ভাগ বলে জানান। টাকার হিসাবে ক্ষতির পরিমান মাঠ কর্মীদের কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার আগে প্রকৃত পরিমান নির্নয় করা যাবে না। ক্ষতির প্রকৃত চিত্র পেতে ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগবে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় কৃষি দফতর সূত্র জানায়, এ বছর গলাচিপা উপজেলার বিভিন্ন রবিশস্যের আবাদ হয়েছে ৩৩ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আলু ১ হাজার, তরমুজ ৫ হাজার ও বাকি জমিতে অন্যান্য রবিশস্যের আবাদ হয়েছে।

সরেজমিন ডাকুয়া ইউনিয়নের ফুলখালী গ্রামে মনিরুল ইসলাম মাষ্টারের ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, তার আলু ক্ষেত পানির নিচে সম্পূর্ন তলিয়ে আছে। বৃষ্টির পানি জমে গাছগুলো ঝলসে মরে গেছে। ক্ষেতের আলু ক্ষেতেই পঁচে গেছে। আলু তোলার সময় বাকি ছিল আর মাত্র এক সপ্তাহ। এর মধ্যেই এ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কৃষকদের সব আশা শেষ হয়ে গেছে।

শিক্ষক মনিরুল ইসলাম জানান তিনি সাড়ে ৪ একর জমিতে আলুর আবাদ করেছিলেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। ফলন ভালো হলেও তিনি একটি আলুও ঘরে তুলতে পারেন নি। পক্ষিয়া গ্রামের তরমুজ চাষী আবুল হোসেন জানান, প্রতি একর জমিতে তরমুজ আবাদ করতে সর্বনিম্ন খরচ হয় দেড় লাখ টাকা। তিনি প্রায় ৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলেন। এ হিসাবে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা খরচ হয তার। আশা করেছিলেন তার লাভ হবে আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা। তরমুজ পরিপক্ক হতে আর বাকি ছিল মাত্র ৫ থেকে ৬দিন। অকাল টানা বর্ষনে তার সব আশা এক লহমায় নিভে যাওয়ায় তিনি এখন দিশেহারা। কৃষকরা অনাগত ভবিষ্যতের চিন্তায় এখন দিশেহারা। এনজিও, মহাজনদের দেনা পরিশোধ ও পরিবার পরিজনদের ভরনপোষন নিয়ে তারা এখন রয়েছে মহাদুঃশ্চিন্তায়।

(এসডি/এএস/মার্চ ১৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test