E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাপাহার সীমান্তে গরুর পদচারনায় মাঠের ফসল নষ্ট

২০১৭ মার্চ ৩১ ২২:৩৬:২৪
সাপাহার সীমান্তে গরুর পদচারনায় মাঠের ফসল নষ্ট

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর সাপাহার উপজেলালার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে  চোরাই পথে পালে পালে ভারতীয় গরু পাচার হয়ে আসায় সীমান্তে বসবাসরত লোকজনদের শত শত বিঘা জমির ধান গরুর পদদলিত হয়ে বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এলাকার কৃষক ধানসহ ক্ষেতের ফসলের এমন ক্ষতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমন ফসল বিনষ্টের চিত্র। স্থানীয়রা জানায়, বুধবার ও বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে সীমান্তের কলমু ডাঙ্গা এলাকা দিয়ে কয়েক’শ গরু চোরাই পথে সীমান্ত গলিয়ে এপারে আনা হয়। এতে ওই গ্রামের কৃষক আলতাস আলী, মোশারফ হোসেন, সাইফুদ্দীন, ফোরকান, তাবারক আলী, আব্দুল আলিম, গোলাম, কোব্বাদ আলী, আঃ সামাদ, আঃ সাত্তার, আঃ বারীসহ অনেক কৃষকের প্রায় শতাধিক বিঘা জমির ধান মাঠের কাদা মাটির সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেছে। ওই এলাকায় গেলে শত শত কৃষক তাদের অভিযোগ জানাতে সাংবাদিকদের কাছে ছুটে আসে।

সেখানে সমবেত কৃষকরা জানান, বেশ কিছু দিন ধরে ওই গ্রামের চোরাকারবারী ও গরু ব্যবসায়ী নোমান, হাবিল, রাসেল, সাহেব আলী, বাবুল, মনিরুলসহ বেশ কিছু সংখ্যক চোরাকারবারী কৃষকের মাঠের ফসল নষ্ট করে ভারত থেকে রাতের অন্ধকারে গরু নিয়ে আসছে। কৃষকের মাঠের ফসল বিশেষ করে ধান নষ্ট হতে থাকায় তারা বেশ কয়েকবার তাদেরকে এই মৌসুমে ভারত থেকে গরু আনতে নিষেধ করেন। এমন কি স্থানীয় প্রশাসন ইউপি চেয়ারম্যান ও বিজিবিকে লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু ‘চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী’। তারা সকল বাধা বিপত্তিকে উপেক্ষা করে প্রতি রাতে কৃষকের মাঠের ফসল বিনষ্ট করে গরু আনা অব্যাহত রেখেছে। ফলশ্রুতিতে ওই রাতে মাঠে পাহারত কৃষকদের সঙ্গে চোরাকারবারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় চোরাকারবারীরা কাঁটা তারের আঁচড়ে রক্তপাত একটি বৃহদাকার গরু অসুস্থ হয়ে পড়লে সেটিকে রেখে কৃষকদের মারপিট করে অন্যান্য সব গরু নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আবার গ্রামের বেশ কয়েজন দালাল রাতের অন্ধকারে অসুস্থ গরুটিকে জবাই করে মাংস ভাগ বাটোয়ারা করলে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। এসময় বিজিবির টহলরত সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাতে বাধা প্রদান করেন এবং পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে দিতে ওই গরুর মাংস বিক্রির ব্যবস্থা গ্রহন করেন।

এ বিষয়ে কলমুডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার আব্দুর রাজ্জাক ঘটনার সত্যতা স্বাীকার করে বলেন, ‘আমরা সংখ্যায় অতি নগন্য। ৮ থেকে ৯ কিলোমিটার এলাকা আমাদের ১০/১৫ জনের দায়িত্বে। চোরাকারবারী ঠেকাতে আমরা দিন রাত নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। রাতের অন্ধকারে আমরা এক প্রান্তে পাহারা বসালে চোরাকারবারীরা অতি চতুর হওয়ায় অন্যপ্রান্ত দিয়ে তারা চোরাকারবার করছে’। ওই রাতে তাদের পাহারায় বিজিবি সদস্যরা সীমান্ত এলাকা হতে ৪টি ভারতীয় গরু আটক করতে সক্ষম হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। স্থানীয় কৃষকরা তাদের ফসলের ক্ষতির কথা চিন্তা করে চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করে চলেছেন। সীমান্তে চোরাচালান ঠেকাতে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

(বিএম/এএস/মার্চ ৩১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test