E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁয় ভূ-উপরিভাগে পানি ব্যবহার চালু

২০১৭ এপ্রিল ১২ ২৩:৪২:০৩
নওগাঁয় ভূ-উপরিভাগে পানি ব্যবহার চালু

নওগাঁ প্রতিনিধি : বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) উত্তরের ঠা-ঠা বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত নওগাঁ জেলায় দীর্ঘ  প্রায় ২ যুগ ধরে কাজ করে চলেছে। বিএমডিএ কৃষি জমিতে সেচ, উন্নত বীজ, সার সরবরাহ, ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপন, তালগাছ, গ্রামীন রাস্তা নির্মাণ, খাবার পানি সরবরাহের অবকাঠামো ভূ-উপরিভাগের পানি সংরক্ষনের জন্য খাল-খাড়ি, বিল, নদী খনন, খাড়ি-নদীতে ক্রসডেম নির্মাণ, কৃষি জমিতে সেচের জন্য গভীর নলকুপ স্থাপন, পাকা নালা নির্মাণ, হাজার হাজার কি.মি. বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ, পাতকুয়া নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে বড় ভুমিকা পালন করে চলেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে পন্টুনের মাধ্যমে ভূ-উপরিভাগে পানি ব্যবহার করে কৃষিতে সেচ ব্যবস্থা প্রবর্তন করে। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে সেচ বহরে যুক্ত হয়েছে আরও একটি পন্টুন যেটি জেলার ধামইরহাট উপজেলার শিমুলতলী বিজিবি ক্যাম্পের নিকট আত্রাই নদীর দহে অবস্থিত। ৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপিত পন্টুনে ৯টি বৈদ্যুতিক সাবমারসিবল মটর স্থাপন করা হয়েছে।

প্রতিটি মটর প্রতি সেকেন্ডে ২ কিউসেক পানি উত্তোলন করতে সক্ষম। পন্টুন থেকে এই পানি ৭কি.মি. দুরে অবস্থিত আউয়াল দিঘি ও কামারখন্ড মৌজার মনোহরডাঙ্গা খাড়িতে ১৮কি.মি. জুড়ে পানি সঞ্চয় করা হয়। এই খাড়ির ৪টি পয়েন্টে সোলার সিস্টেমের মাধ্যমে সাবমারসিবল মটরদিয়ে সেচ কাযক্রম চলছে আর পন্টুন থেকে খাড়ির মাঝখানে ৬টি পয়েন্টে সরাসরি পানি ডেলিভারী করে মাঝ পথের মাঠেও সেচ কাযক্রম চলছে।

বিএমডিএর ধামইরহাট উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী হাবিবুল আহসান জানান, শিমুলতলী পন্টুনটি আগামী বছর পুরোপুরি ব্যবহার হলে ৬৬০ হেক্টর কৃষি জমিতে কম খরচে সেচ দেয়া সম্ভব হবে।

তিনি জানান, বোরো ধান ব্যতীত শীতকালীন সেচ সাশ্রয়ী ফসল উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করা এবং ভু-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ নিয়ে বিএমডিএ কাজ করছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীন এক্সটেনশন ইরিগেশন বরিন্দ্র এরিয়া বা সংক্ষিপ্ত রুপ(ইআইবিএ) প্রকল্পের মাধমে এসব কৃষি বান্ধব উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী আ.সোবহান সাফি ও পন্টুনের সেচ এলাকায় হযরতপুর গ্রামের কৃষক আজিজুল হক জানান, আমার জন্মের পর থেকে এই দরাকুড়ি এলাকাসহ আরও কিছু এলাকায় এ বছরের মত আগে কোন ফসল হয়নি। বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের এই পন্টুনের পানি দিয়ে এই এলাকায় এত বিচিত্র রকমের শষ্য উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।

বরেন্দ্র নওগাঁ-২ রিজিয়নের নির্বাহী প্রকৌশলী আঃ মালেক চৌধুরী জানান, নওগাঁ-২ রিজিয়নের আওতায় ৪৭৫ কি.মি. খাল-খাড়ি খনন করা হয়েছে এবং খাড়ি ও নদীতে ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষনের জন্য ২৫২টি ক্রসড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে। যে পানি ব্যবহার করে কৃষকরা ব্যাপকভাবে উপকৃত হচ্ছেন। এই প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী সামশুল হুদা জানান, এ পর্যন্ত নওগাঁ রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জ এলাকায় মোট ১০টি পন্টুনের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম চলছে। এবং আগামীতে আরও পন্টুন স্থাপনের পরিকল্পনা আছে।

বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আঃ রশিদ বলেন, “অবহেলিত, অনগ্রসর উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে বিপ্লব ঘটাতে দীর্ঘ পরিকল্পনা ও ব্যাপক মেহনত করে ড. আসাদুজ্জামান ১৯৯২ সালে বিএমডিএ প্রতিষ্ঠা করেন। যে বিএমডিএ আজ কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। যার ফলে রাজশাহী সাবেক বিভাগের ১৬ জেলায় বিএমডিএর কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়েছে এবং কৃষকের নিকট সমাদৃত হয়ে কৃষিতে উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।

(ওএস/এএস/এপ্রিল ১২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test