E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাঘাবাড়িতে রোপা-আমন মৌসুমে সার সংকটের আশংকা

২০১৭ এপ্রিল ২১ ১৪:৩৭:৫৪
বাঘাবাড়িতে রোপা-আমন মৌসুমে সার সংকটের আশংকা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাঘাবাড়িতে বাংলাদেশ ক্যামিক্যাল ইন্ড্রাসট্রি কর্পোরেশন (বিসিআইসি) বাফার গোডাউনের সার জমাট বাধায় ব্যবহারের অনুপোযোগী হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ডিলাররা জমাট বাধা সার উত্তোলন বন্ধ করে দেয়ায় আসন্ন রোপা-আমন মৌসুমে সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার কৃষকদের মধ্যে ইউরিয়া সার সংকেেটর আশংকা করা হচ্ছে। অপর দিকে জমাটবাধা সার অপসারন না করে বিসিআইসি আরও জমাটবাধা সার আমদানী অব্যহত রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে সারের ডিলার ও বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের মধ্যে ব্যাপক টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে।

বিসিআইসি ও জেলার সার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত চার বছর ধরে বাঘাবাড়ি বাফার গোডাউনে বিগত চারবছর ধরে চীন থেকে আমদানীকৃত ইউরিয়া সার জমাটবেধে যাচ্ছে। সাড়ে চার হাজার টন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন এই গোডাউনে প্রায় অর্ধেক সার জমাট বেধে গেছে। জমাটবাধা সারের সংষ্পর্ষে ভাল সারের বস্তা মজুদকরায় সেগুলোও জমাট বাধছে। সারগুলো রং পরিবর্তন হয়ে কিছু লাল, কিছু কাল রংএর আকার ধারন করেছে। প্রতিটি বস্তা পাথরের চেয়ে শক্ত হয়ে পড়েছে।

অপর দিকে জমাট বাধা সার বাঘাবাড়িতে থাকার পরও যশোরের নওয়াপাড়া ট্রানজিট পয়েন্ট থেকে আরও ২২ হাজার মে: টন জমাট বাধা সার বাঘাবাড়ি বাফার গুদামে আনা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ডিলারদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ দিকে জমাট বাধা সার গুলো অপসারন করার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থাই গ্রহন করছে না।

শুক্রবার সরেজমিনে বাঘাবাড়ি বাফার গুদামে গিয়ে দেখা গেছে, এই গুদামের ধারন ক্ষমতা সাড়ে চার হাজার মেঃ টন, কিন্তু সার রয়েছে সাড়ে নয় হাজার মেঃ টন। স্বাভাবিক ভাবেই গুদামের বাইরে সার রাখতে হয়েছে। দীর্ঘ দিন এই বিপুল পরিমান সার খোলা আকাশের নীচে থেকে পড়ে রয়েছে। বাইরে মজুদ করা সারের উপর ত্রিপল, আস্তরণ বা ঢাকার ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে। নওয়াপাড়া থেকে আরও জমাটবাধা সার ট্রাকযোগে বাঘাবাড়িতে আনা হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক আবুল হোসেন বলেন, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা জেলার ডিলারদেরকে বাঘাবাড়ি বাফার গুদাম থেকে সার সরবরাহ দেয়া হয়। এই গুদামে বর্তমানে সাড়ে ছয়হাজার মেঃ টন সার জমাটবাধা অবস্থায় আছে। সরবরাহ করার সময় তারা অর্ধেক জমাটবাধা সার অর্ধেক ভাল সার দিয়ে আসছে। আমাদের ডিলারদের কাছে শত শত বস্তা জমাট বাধা সার মজুদ রয়েছে। এগুলো কৃষকরা নিচ্ছেনা। যে কারণে আমরা সার উত্তোলন বন্ধ রেখেছি।

তারা আরও বলেন, বাফার গুদামসহ বাইরে খোলা আকাশের নিচে সাড়ে ছয় হাজার মেঃ টন জমাট বাধা সার থাকা সত্বেও নওয়াপাড়াথেকে আরও ২হাজার২শত মেট্রিকটন জমাট বাধা সার এই গুদামে আনা হচ্ছে তা বিষয়টি বোধগম্য নয়।কৃষকরা বলেছেন, ডিলাররা যদি সার উত্তোলন বন্ধ অব্যহত রাখে তাহলে আসন্ন রোপা আমন মৌসুমে ইউরিয়া সার সংকট দেখা দিতে পারে।

এ বিষয়ে বিসিআইসির মহাব্যবস্থাপক বিপনন মো. মঞ্জুর রেজার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ বিষয়ে বিসিআইসির বাঘাবাড়ি বন্দরের বিসিআইসির বাফার গুদামের দায়িত্বে কর্মরত মো. সোলায়মান হোসেন বলেন, জমাটবাধা সারের বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে জানানো হয়েছে। ডিলাররা জমাট বাধা সার নিতে অনাগ্রহ দেখানোর বিষয়টিও জানানো হয়েছে। নওয়াপাড়া ট্রানজিটে যে সারটি রয়েছে সেটি বাঘাবাড়ি বাফার গুদামের সার হওয়ায় পরিবহন করা হচ্ছে।

তবে জমাট বাধা থাকলে সেগুলেঅ পরিবহন ঠিকাদারকে ভেঙ্গে গুড়ো করে দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। তা ছাড়া জমাট বাধা সার হলেও এগুলেঅর গুনাগুন ঠিক থাকে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

(এমএস/এসপি/এপ্রিল ২১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test