E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নোয়াখালীতে বৈশাখী ঝড় কেড়ে নিল কৃষকের স্বপ্ন

২০১৭ এপ্রিল ২৪ ১৬:০১:৩১
নোয়াখালীতে বৈশাখী ঝড় কেড়ে নিল কৃষকের স্বপ্ন

নোয়াখালী প্রতিনিধি : তীব্র তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে উঠলেও পাকা ধানের আগমনি বার্তায় কৃষকের ছিল সোনালী স্বপ্ন। দীর্ঘ দিন সেচ, সার ও নানা পরিচর্যা করায় হাটি হাটি পা পা করে কৃষকের ঘড়ে উঠার অপেক্ষায় ছিল পাকা পাকা ধান। দিগন্ত জুড়ে মাঠের পর মাঠ এসব পাকা ধান মৃদু মৃদু বাতাসে দুলছিলো। সে দোলায় হাসি আর খুশীতে অনেকটা আনন্দের বন্যা যেন কৃষকের চোখে মুখে। কিন্তু সেই পুরনো কথা “ কৃষক চিরদিন আগামীতে বড় হবার স্বপ্ন দেখে”। সে স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়।

গত বৃহস্পিতবার থেকে এক টানা ভারি বর্ষণ ও বৈশাখী ঝড় কেড়ে নিল সেই সোনালী ফসল। লন্ড ভন্ড করে দিয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। এমন সময়ে এ ঝড় হলো যখন পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে চলছিলো কৃষক, কৃষাণ-কৃষাণীর ধান কাটা মাড়াই করার কর্মযজ্ঞ।

গত বৃহস্পতিবার থেকে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলাতে টানা ভারি বর্ষণ ও বৈশাখী ঝড়ে জমির উঠতি ফসল মাটিতে শুয়ে পড়েছে। অথচ এসব জমির ধান ছিলো সম্পূর্ণ কাটার উপযোগী।

রবিবার কবিরহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য পাওয়া যায়।

ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে জমির ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। উপজেলার সব ছেয়ে নিচু এলেকা নত্তোমপুর ইউনিয়ান মনিনগর,যাদবপুর,দরাপনগর,সোনাপুর,পদুয়া,পলহারি এই সব গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিচু এলাকার কারনে জমির ধান পানিতে ডুবে পড়েছে, অনেক জমির ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে, বেশির ভাগ জমির ধানই কাটার অযোগ্য।

মনিনগর গ্রামের কৃষক এমাম ফরাজী জানান, এ রকম ঝড় ও বৃষ্টি যে আর হবে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই, তাই তাড়াতাড়ি ফসল ঘরে তুলতে পারলেই বাঁচা যায়, কিন্তু তাতেও সমস্যা কারণ চাহিদা অনুযায়ী খেত মজুর পাওয়া যাচ্ছে না, আবার পাওয়া গেলেও মজুরি অনেক বেশি।

তিনি বলেন এখন উপরওয়ালার ওপর ভরসা করা ছাড়া আপতত সামনে সহজ কোন পথ নেই। জাঙ্গীর,শহিদ,হাবিব উল্যাহ, কোরবান আলী সহ একাধিক কৃষক জানান, মাটিতে পড়ে যাওয়া পাকা ধান তাড়াতাড়ি কাটতে হবে। কারণ বেশির ভাগ ধান গাছের মাথা নিচে পড়ে গেছে। তাড়াতাড়ি কাটা না গেলে এসব ধানে পচন ধরবে। তাতে ফলন কমবে। সঙ্গে ধানের দানা কালচে আকার ধারণ করবে। এতে ধানের দাম কম হবে। সব মিলিয়ে তারা মহাবিপদে রয়েছেন বলে জানান এসব কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা মোঃএনামূল হক জানান, এই উপজেলার ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমের বিভিন্ন জাতের বোরো ধান লাগানো হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত ৫৬০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। অবশিষ্ট জমির ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ চলছে।

তবে বৈশাখীর ক্ষতির ব্যাপারে কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা জানান ঝড় ও বৃষ্টির কারণে বেশ কিছু জমির উঠতি ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। এতে আশঙ্কার কিছুই নেই এবং ফলনেও কোন প্রভাব পড়বে না বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।

এদিকে টানা বর্ষনে সুবর্ণচর, হাতিয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, বহু কৃষক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান থেকে যারা ঋণ নিয়েছেন তারা এখন হতাশ।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test