E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঈশ্বরদীতে ইউরিয়া সারের দাম বাড়ায় বিপাকে কৃষক

২০১৭ আগস্ট ২৮ ১৭:২৮:১০
ঈশ্বরদীতে ইউরিয়া সারের দাম বাড়ায় বিপাকে কৃষক

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীর বিভিন্ন হাট-বাজারে হঠাৎ করেই ইউরিয়া সারের দাম বেড়েছে। এতে কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। ৮০০ টাকার বস্তা এখন ৮৭০-৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। প্রতি কেজি ইউরিয়া ২০-২১ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

অতি বর্ষণ ও জলাবদ্ধতার কারণে ঈশ্বরদীর নীচু এলাকার ফসল ও সবজি আবাদ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা এখন আমন ধান ও স্বল্প মেয়াদী সবজি আবাদের জন্য জমি তৈরী করছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই ঈশ্বরদীর সর্বত্র ইউরিয়া সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।

ঈশ্বরদীর মুলাডুলি, দাশুড়িয়া, সাহাপুর, পাকশী, ছলিমপুর, আড়মবাড়িয়া ও পৌর শহরে সার কিনতে আসা কৃষকদের সাথে কথা বলে ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি জানা গেছে।

দোকানদাররা বলছেন, এসব হাট-বাজারে ইউরিয়া সারের যোগানে ঘাটতি রয়েছে। বেশী দামে তাদেরও এই সার কিনতে হচ্ছে।

ভড়াইমারী গ্রামের কৃষক বাদশা মিঞা জানান, আমনের ক্ষেতে ইউরিয়া দেয়ার জন্য কালিকাপুর বাজার হতে তিনি ২ বস্তা সার ১৩০ টাকা বেশী দামে কিনেছেন। প্রতি বস্তার দাম ৮০০ টাকা হলেও তাঁর নিকট হতে প্রতি বস্তার দাম ৮৬৫ টাকা নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এমনিতেই বোরো আবাদে অনেক টাকা খরচ হলেও ধানের ন্যায্য দাম পাইনি। এবারে আমনের জন্য বেশী দামে সার কিনে টিকে থাকা কঠিন হবে। দাশুড়িয়ার আরেক কৃষক জানান, বর্ষা ও জলাবদ্ধতার কারণে সবজির সব চারা নষ্ট হয়েছে। ওই জমিতে নতুন করে সবজি লাগানোর জন্য বস্তা প্রতি ৬০-৭০ টাকা বেশী দিয়ে ৩ বস্তা সার কিনতে হয়েছে।

শুধু গ্রামাঞ্চলে নয়, ঈশ্বরদী বাজারেও সোমবার কয়েকটি খুচরা দোকানে প্রতি বস্তা ইউরিয়া ৯০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাজারের খুচরা দোকানদাররা জানান, স্থানীয় ডিলারদের নিকট হতে বেশী দামে সার কিনতে হচ্ছে। গত সপ্তাহ হতে ডিলাররা দাম বাড়িয়ে প্রতি বস্তা ইউরিয়া ৮৯০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তাই বাধ্য হয়ে ৯০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

মুলাডুলির সার ডিলার মসলেম উদ্দিন জানান, সরবরাহ না থাকায় কয়েকদিন যাবত ইউরিয়া পাওয়া যাচ্ছে না। আগষ্ট মাসে তিনি ৪৫ মেঃ টন সার বরাদ্দ পান। এরমধ্যে যমুনা সার কারখানার ২২.৫ ও বাফার গুদামের ২২.৫ মেঃটন। এরমধ্যে দেশী ইউরিয়া বিক্রি হয়ে গেছে। বাফার গুদামের সার জমাট বাঁধায় কৃষকরা এই সার কিনতে চাচ্ছেন না। ফলে দেশী ইউরিয়ার দাম বেড়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরদীর মোট ১০ জন সারের ডিলারের মধ্যে আগষ্ট মাসে ৪৫০ মেঃ টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে যমুনা সার কারখানার ২২৫ ও পাকশী বাফার গুদামের ২২৫ মেঃ টন। বাজারে যমুনা সারের চাহিদা বেশী থাকায় এই সার বিক্রি প্রায় শেষ পর্যায়ে।

ইউরিয়া সারের দাম বেশী প্রসংগে কৃষি কর্মকর্তা রওশন জামাল জানান, বাজারে খোঁজ নিয়ে জেেেনছেন খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে একটু বেশি দামে বিক্রি করছেন। এ খবর আসার পরপরই তিনি উপজেলার সকল সারের ডিলারদের ডেকে নিয়ে সভা করেছেন ও তাদেরকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ইউরিয়া সার বিক্রির জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বেশী দামে সার বিক্রির অভিযোগ পেলে বিক্রেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

(এসকেকে/এসপি/আগস্ট ২৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test