E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুষ্টিয়ায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে সফল হারুন

২০১৭ সেপ্টেম্বর ১২ ২০:১২:৩৪
কুষ্টিয়ায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে সফল হারুন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কুষ্টিয়ার বর্গাচাষি হারুন অর রশীদ। এতে তার পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে।

চার ছেলেমেয়ে পড়ালেখা করছে। নিজের আবাদি জমি না থাকলেও অন্যের জমি বর্গা চাষ করে হারুন এখন এলাকার কৃষকদের কাছে মডেল। সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের করিমপুর গ্রামের মাঠের পিচঢালা রাস্তার পাশেই পলিথিনের শেড দিয়ে ঢাকা হারুন অর রশীদের দৃষ্টিনন্দন টমেটো ক্ষেত।

সারিবদ্ধ টমেটো গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত থোকা থোকা টমেটো শোভা পাচ্ছে। অনেকেই টমেটো ক্ষেত দেখতে আসছেন। ক্ষেতে দাঁড়িয়ে কথা হয় টমেটো চাষি হারুন অর রশীদের সঙ্গে।

তিনি জানান, নিজের কোনো আবাদি জমি নেই। অন্যের জমি বর্গা চাষাবাদ করে সংসার চালান। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ২০১৫ সালে ৫ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে প্রথম গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে সফলতার মুখ দেখেন তিনি। পরের বছর প্রায় ২০ শতাংশ জমিতে আবাদ করেন। এবার তিনি এক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে টমেটো চাষ করেছেন।

গত জুন মাসে ক্ষেতে টমেটোর চারা রোপণ করেন। জুলাই মাসের মাঝামাঝি টমেটো গাছে ফল আসতে শুরু করে। আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের পর তিনি ক্ষেত থেকে টমেটো তুলে বাজারজাত করতে শুরু করেন। আগামী বৈশাখ মাস পর্যন্ত টমেটো পাওয়া যাবে। প্রতি কেজি টমেটো এখন গড়ে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা টমেটো এখন বাজারে পাওয়া গেলেও তার ক্ষেতের টমেটোর চাহিদা বেশি ক্রেতাদের কাছে।

হারুন বলেন, এক বিঘা জমি তিনি ১০ হাজার টাকায় বর্গা নিয়েছেন। বাঁশের মাচা, পলিথিনের শেড, জমি তৈরি, চারা রোপণ ও পরিচর্যা মিলিয়ে খরচ হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। গাছে যে পরিমাণ ফল এসেছে তাতে বাজার দর ঠিক থাকলে চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকার টমেটো বিক্রির আশা করছেন হারুন।

তিনি আগামী বছর আরও বেশি জমিতে টমেটো চাষ করবেন বলে জানান। স্ত্রী নারগিস বেগমও নানাভাবে সাহায্য করেন তাকে। স্বামীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে টমেটো ক্ষেতে কাজ করেন নারগিস। বিশেষ করে ক্ষেত থেকে টমেটো তোলার কাজটা নারগিস বেশি করেন। নারগিস বেগম জানান, অন্য ফসল আবাদ করলেও টমেটোতে তারা বেশি সাফল্য পেয়েছেন। তাদের চার ছেলেমেয়ে পড়ালেখা করছে। সংসারে এখন আর কোনো অভাব নেই। হারুন অর রশীদের সাফল্য দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন এলাকার অন্য কৃষকরাও।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিম হোসেন জানান, গ্রীষ্মকালে মূলত দেশের বাইরে থেকে আমদানি করে টমেটোর চাহিদা মেটানো হয়।

কিন্তু ওই টমেটোতে ফরমালিনসহ নানা কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে দেশে গ্রীষ্মকালে টমেটো চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষক হারুনের খেতে উচ্চ ফলনশীল বারি হাইব্রীড টমেটো-৪ এর চাষ করা হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে আসছে।

(কেকে/এএস/সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test