E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘বিধিবহির্ভূত ‘সম্মানী’ পান এনসিটিবির চেয়ারম্যান থেকে এমএলএস’

২০১৭ নভেম্বর ১৩ ১৪:৩৪:৪৪
‘বিধিবহির্ভূত ‘সম্মানী’ পান এনসিটিবির চেয়ারম্যান থেকে এমএলএস’

স্টাফ রিপোর্টার : নির্ধারিত সম্মানী ও বেতনের বাইরে বিধি-বহির্ভূতভাবে সম্মানী নিচ্ছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা।

দরপত্র প্রকাশ থেকে শুরু করে কার্যাদেশ পাওয়া পর্যন্ত পাণ্ডুলিপি প্রণয়ন ও পাঠ্যপুস্তক প্রকাশের ক্ষেত্রে এনসিটিবির চেয়ারম্যান থেকে এমএলএস পর্যন্ত সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এর ভাগ পাচ্ছেন। তবে এর কোনো ডকুমেন্ট রাখে না এনসিটিবি।

‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি): পাণ্ডুলিপি প্রণয়ন ও প্রকাশনা ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা ও প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস ভবনের ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল গবেষণা ও প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোরশেদা আক্তার।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- গবেষণা উপদেষ্টা ও টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনার) ড. সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (গবেষণা ও পলিসি) মোহাম্মদ রফিকুল হাসান ও গবেষণা তত্বাবধায়ক শাহজাদা এম আকরাম।

টিআইবি বলছে, এনসিটিবির স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করার কথা। কিন্তু এনসিটিবি অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর কোনো বিধিমালা নেই। নির্বাহী আদেশের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনার কারণে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা বিদ্যমান। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যবহার করা হয় এনসিটিবিকে।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, বর্তমান আইনে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) এবং শিক্ষাক্রম কমিটির (কারিকুলাম কমিটি) উল্লেখ করা হয়নি। মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী আদেশে গঠন করা হয়। আইনের বিভিন্ন ধারার সুযোগ নিয়ে এনসিটিবির উপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের ঝুঁকি রয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাণ্ডুলিপি প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের মতাদর্শীদের প্রাধান্য দেয়া হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যোগ্য হওয়ার পরও দলীয় বিবেচনায় কমিটি থেকে বাদ দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। কর্মশালার ক্ষেত্রে পরিকল্পনার ঘাটতি, লেখক দলের সদস্যদের শিক্ষাক্রমের বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকে না। লেখকদের সম্মানী দেয়া হলেও অনেক লেখকের অবদান প্রত্যাশিত পর্যায়ের নয়, আবার অনেক লেখকের অবদান সম্পর্কে অন্যদের ধারণা থাকে না।

প্রকাশনা প্রক্রিয়ায় এনসিটিবির কর্মকর্তাদের একাংশ দরপত্র আহ্বানের পূর্বে প্রস্তাব অনুযায়ী বই মুদ্রণের প্রাক্কলিত দর নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেয়। এর মধ্যে সরকার দলীয় অনেকের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে দরপত্র দাখিল করে। দাফতরিক বা সরকারি আদেশ না থাকা সত্ত্বেও পাঠ্যপুস্তক উৎপাদন ও বিতরণ সংক্রান্ত কাজের জন্য এনসিটিবি’র বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারি সম্মানী গ্রহণ করছেন।

এ ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে মোরশেদা আক্তার বলেন, দরপত্র নির্দেশিকা তৈরি, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, সিএস তৈরি, কার্যাদেশ প্রদান, প্রতি লটের কাগজের হিসাব, কাগজের বরাদ্দপত্র জারি, কার্যাদেশ অনুযায়ী উপজেলায় বই সরবাহ বাবদ গত ৩ বছরে ৫০ লাখ ৯৬ হাজার ৭শ টাকা বিধি বহির্ভূতভাবে সম্মানী নিয়েছেন এনসিটিবির চেয়ারম্যান থেকে এমএলএস পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এ ছাড়া প্রকাশনায় সাব-কন্ট্রাক্টে, কাগজ ক্রয়ে ও কাগজের মান নিয়ন্ত্রণ ও পাঠ্যপুস্তক সরবরাহের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা ও ব্যর্থতা লক্ষ্যণীয় বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test