E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক মতাদর্শের প্রভাব বেশি’

২০১৭ নভেম্বর ১৩ ১৫:০৭:০০
‘পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক মতাদর্শের প্রভাব বেশি’

স্টাফ রিপোর্টার : টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, শিক্ষার বিকাশ ও মেধাভিত্তিক সমাজ গঠনের যে অঙ্গীকার তা বাস্তবায়ন করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। কিন্তু তাদের তৈরি পাণ্ডুলিপি ও প্রকাশিত জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে সাম্প্রদায়িক মতাদর্শের প্রভাব বেশি। একটি বিশেষ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর চাপে ও চাহিদার প্রেক্ষিতে জাতীয় পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন ও সংশোধন আনা হয়েছে। যার ফলে মুক্তিযুদ্ধ চেতনার পরিপন্থী বিষয়গুলো আমরা দেখতে পাচ্ছি।

‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) : পাণ্ডুলিপি প্রণয়ন ও প্রকাশনা ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা ও প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সোমবার এ সব কথা বলেন তিনি।

এ উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি’র কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে মূল গবেষণা ও প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোরশেদা আক্তার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপক) ড. সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (গবেষণা ও পলিসি) মোহাম্মদ রফিকুল হাসান ও গবেষণা তত্বাবধায়ক শাহজাদা এম আকরাম।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, একটি বিশেষ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর চাপ ও দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর কারণে দুটি বিষয় ঘটছে। প্রথমত, মেধাভিত্তিক সমাজ গঠনের যে অঙ্গিকার তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। সে সুযোগ হারাতে বসেছি। ঘাত-প্রতিঘাত আসছে। দ্বিতীয়ত, স্বাধীনতার পরিপন্থী হিসেবে অনেক বিষয় উঠে আসছে পাঠ্যপুস্তকে। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে আমরা অনেক দূরে সরে যাচ্ছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা ও এনসিটিবি’র শীর্ষ পর্যায়ের সরকার কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

তিনি বলেন, তাছাড়া রাজনৈতিক বিবেচনাতেও লেখা ও লেখককে বাদ দেয়া, শব্দ ও লেখা নির্বাচিত হয়েছে। যা মেধাভিত্তিক সমাজ গঠনের বিপরীত। সর্বোচ্চ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এনসিটিবি অন্যতম। কিন্তু এতো বছর পরও এর কোনো বিধিমালা নেই। যে কারণে ক্ষণে ক্ষণে সরকারি আদেশ বাস্তবায়ন করতে দেখা যায় এনসিটিবি’কে। বস্তুনিষ্ঠতা থেকে শুরু করে লেখক, সম্পাদক ও প্রকাশক নিয়োগ প্রক্রিয়া অবমূল্যায়িত হয়েছে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, যে সরকার যখন ক্ষমতায় থাকেন তখন সেই সরকারের ভাবধারার লোকজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ পান। এ ক্ষেত্রে অনেক কিছু অবমূল্যায়িত করা হয়েছে। যার প্রভাব আমরা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করেছি। পাণ্ডুলিপি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ১০টি ও পুস্তক প্রকাশের ক্ষেত্রে ৭ পর্যায়ে আমরা সুশাসনের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেছি। সেসব বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টরা পদক্ষেপ নিতে পারেন।

‘সাম্প্রদায়িকতার বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য কতোটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে’ এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাম্প্রদায়িকতার বিষয়টি যদি থেকে যায় তাহলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম সাম্প্রদায়িকতাই শিখবে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে সরে আসবে। এ ধরনের প্রবণতাকে দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করতে হবে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test