E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘প্রতিরক্ষা বাহিনীকে কার্যক্ষম ও গতিশীল করতে প্রকল্প গ্রহণ’

২০১৪ জুলাই ০৩ ১৩:০৪:০৯
‘প্রতিরক্ষা বাহিনীকে কার্যক্ষম ও গতিশীল করতে প্রকল্প গ্রহণ’

স্টাফ রির্পোটার : বর্তমান সরকার দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আরো কার্যক্ষম ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে বলে জানিয়েছেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার সংসদে সরকারি দলের সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পীর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

সৈয়দ আশরাফ বলেন, সেনাবাহিনীর উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় খসড়া জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি ও সেনাবাহিনী ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ নির্ধারণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ১৭ পদাতিক ডিভিশন নামে একটি পদাতিক ব্রিগেড, ৯৯ সম্মিলিত বিগ্রেড নামে একটি ব্রিগেড, ৩৬০ পদাতিক ব্রিগেড ৪টি পদাতিক ব্যাটালিয়ন, ১টি ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন, ১টি রাডার কন্ট্রোল এডি ইউনিট, ১টি ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার কোম্পানি এবং ১টি ইএমই সেকশন নতুন গঠন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এ ছাড়াও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আওতায় আগামী ৬ বছরের মধ্যে একটি আর্টিলারি ব্রিগেডসহ ৩৬টি ইউনিট গঠন করা হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামোতে আধুনিক অস্ত্র, গোলাবারুদ ও যোগাযোগ সরঞ্জামাদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা সামগ্রিকভাবে সেনাবাহিনীর সারশক্তি ও চলাচল সক্ষমতা আরো অনেক বৃদ্ধি করবে।

মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে বর্তমান সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য সেল্ফ প্রোপেল্ড গান, অত্যাধুনিক এ্যামুনিশন প্ল্যান্ট, চতুর্থ প্রজন্মের এমবিটি-২০০০ মডেলের ট্যাংক, উইপন লোকেটিং রাডার, আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার, আর্মার্ড রিকভারী ভেহিক্যাল এবং হেলিকপ্টার ক্রয় সম্পন্ন করেছে যা নিজস্ব সমর শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আরো পেশাগত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা প্রতি বছর উন্নতমানের ১২,০০০ বিডি-০৮ রাইফেল উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ পদ্ধতি আধুনিক করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নৌবাহিনীকে আরো কার্যক্রম ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ প্রণয়নপূর্বক দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সমুদ্র এলাকায় বহিঃশত্রুর মোকাবেলা ছাড়াও জলদস্যুতা, মাদক, অস্ত্র, মানব চোরাচালান প্রতিরোধ, সামুদ্রিক দূষণরোধ এবং মৎস্য ও খনিজ সম্পদের সুরক্ষা ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে একটি শক্তিশালী নৌশক্তি গড়ে তোলার কার্যক্রম ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। প্রণীত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে ভবিষ্যতে পর্যায়ক্রমে ত্রিমাত্রিক যুদ্ধ ক্ষমতাসম্পন্ন হেলিকপ্টারবাহী মিসাইল ফ্রিগেট, দ্বিমাত্রিক যুদ্ধ ক্ষমতাসম্পন্ন করভেট, ক্ষেপণাস্ত্রবাহী লার্জ প্যাট্রোল ক্রাফট, অল্প গভীরতায় চলাচলেরযোগ্য দ্রুতগামী প্যাট্রোল ক্রাফট, যুদ্ধকালীন মাইন ওয়ারফেয়ার-এর জন্য মাইন কাউন্টার মেজার ভেসেল যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুভাবে পালনের জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাংগঠনিক ও ভৌত অবকাঠামো বর্ধিতকরণ, যুগোপযোগী নতুন বিমান, রাডার, সমরাস্ত্র সংযোজন এবং পুরাতন সরঞ্জামাদির আয়ুষ্কাল শেষে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বিমান বাহিনীর সুনির্দিষ্ট প্রয়োজনসমূহ পুরণের সার্বিক পরিকল্পনা বর্তমান সরকার গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে সারফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম সংযোজন করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য ২০১০-১১ অর্থবছরে ১৬টি এফ-৭ বিজিআই/এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধ বিমান ক্রয় করা হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অধিকতর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্য ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩টি এমআই-১৭১ এসএইচ হেলিকপ্টার বিমান বাহিনীতে সংযোজন করা হয়েছে। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে ৪টি এয়ার ডিফেন্স রাডার ক্রয় করা হয়েছে।

সৈয়দ আশরাফ বলেন, বিমান বাহিনীর কাঠামো সমপ্রসারণ বা ব্যাপ্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ এর আওতায় ১৭৫২ জন লোকবল সংবলিত বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু, ২৭ জন লোকবল সংবলিত সাইবার ওয়ারফেয়ার এন্ড আইটি পরিদপ্তর এবং ২০০ জন লোকবল সংবলিত বিমান বাহিনীর ৩০১ সারফেস টু এয়ার মিসাইল ইউনিট সৃষ্টি করা হয়েছে। ফলে সর্বমোট ১৯৭৯টি নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছে যা বিমান বাহিনীর সার্বিক সমপ্রসারণের পাশাপাশি এই সকল পদ পূরণপূর্বক জাতীয় বেকার সমস্যা দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

তিনি বলেন, ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নীতিগত অনুমোদন সাপেক্ষে ৪টি এটিএস রাডার স্কোয়াড্রন, কঙবাজার রাডার ইউনিট, বিমান বাহিনী একাডেমীর পুনর্গঠন এবং ২১৪ মেইনটেন্যান্স রিপেয়ার এন্ড ওভারহলিং ইউনিট সৃজনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আরো গতিশীল ও কার্যক্ষম করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

(ওএস/এএস/জুলাই ০৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test