E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কোটা চিরস্থায়ী ব্যবস্থা হতে পারে না : আকবর আলি

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ২৭ ১৫:১৯:০৩
কোটা চিরস্থায়ী ব্যবস্থা হতে পারে না : আকবর আলি

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত বলে মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব আকবর আলি খান। তার মতে কোটা চিরস্থায়ী ব্যবস্থা হতে পারে না। কোটা একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা।

প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরিতে সবচেয়ে বেশি রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, যেটি ৩০ শতাংশ। ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের সন্তানদের সুবিধা দেবার জন্য প্রথমে এ কোটা চালু করা হয়েছিল।

তবে এখন মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের জন্য এ কোটা প্রযোজ্য হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনও চলছে।

বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আকবর আলি বলেন, ‘কোনো পুরস্কার হিসেবে কোটাব্যবস্থা চালু করা হয়নি। দেশের অনগ্রসর মানুষকে সুবিধা দেবার জন্যই কোটা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল।’

আকবর আলি খান বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের কোটায় যে চাকরি সেটা শুধু যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং যারা সরকারের কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন, তাদের সন্তানদের জন্য রাখা যেতে পারে। কিন্তু যারা সচ্ছল, সেসব মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের যদি কোটা দেয়া তাহলে তো পুরস্কার দেয়া হবে। সেটা তো অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সহায়তা করা হবে না।’

দেশে বর্তমানে যে কোটা ব্যবস্থা আছে তাতে মেধাবীদের চাকরি পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এ কথা উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে এখন ২৫৮ ধরনের কোটা আছে। এ কোটাব্যবস্থার কারণে অনেক মেধাবী প্রার্থী চাকরির পরীক্ষা দিতে রাজি হয় না।’

এমন অবস্থায় দীর্ঘদিন প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দেবার পরও কোটা ব্যবস্থার কারণে অনেক মেধাবী প্রার্থী চাকরি পাচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আকবর আলি খান বলেন, ‘৬৪টি জেলার জন্য কোটা আছে। তারপর সে জেলার ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধা, ট্রাইবাল- নানা ধরনের কোটা আছে। এটা আমার কোনো আবিষ্কার না। বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্মস কমিশনের রিপোর্টে সুস্পষ্টভাবে ২৫৮ ধরনের কোটার বর্ণনা দেয়া আছে।’

তিনি যুক্তি তুলে ধরেন, ‘আমাদের সংসদে মহিলাদের জন্য যে আসন, সেটা চিরস্থায়ী ভিত্তিতে করা হয় না। বলা হয় যে আগামী ১৫ বছর কিংবা ২০ বছর এ ব্যবস্থা থাকবে। তারপর সেটাকে পুনর্মূল্যায়ন করে সময় ঠিক করা হয়। বাংলাদেশে সেই যে ১৯৭২ সালে কোটাব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, এরপর এটার কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি।’

কোটা ব্যবস্থা পুরোপুরি তুলে দেয়া উচিত নাকি এটাকে কমিয়ে আনা উচিত? এমন প্রশ্নে আকবর আলি খান বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার তিনটি পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্মস কমিশন স্থাপন করেছিল। তিনটি কমিশনই সুস্পষ্টভাবে বলেছে যে কোটা একেবারে তুলে দেয়া উচিত।’

তবে হঠাৎ করে কোটা ব্যবস্থা পুরোপুরি তুলে দিলে এটা নিয়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করেন তিনি। নারী ও উপজাতি কোটা পুরোপুরি তুলে দেয়া ঠিক হবে না বলেও উল্লেখ করেন সাবেক এই আমলা।

তবে কোটাব্যবস্থা প্রতি পাঁচ বছর পর মূল্যায়ন করা উচিত বলে আকবর আলি খান পরামর্শ দিয়েছেন। কোটাব্যবস্থা চাকরিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি, ২৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test