E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এপ্রিল থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা 

২০১৮ মার্চ ২১ ১৮:০৯:০৯
এপ্রিল থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা 

স্টাফ রিপোর্টার : মুক্তিযোদ্ধারা আগামী মাস (এপ্রিল) থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পাবেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

বুধবার সচিবালয়ে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচি এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রকল্প নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, দেশের হাট-বাজারের ইজারা থেকে পাওয়া চার শতাংশ অর্থ দিয়ে অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া হবে। এপ্রিল থেকে সব মুক্তিযোদ্ধারা এ সেবা পাবেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য সরকার রাজধানীর বড় বড় হাসপাতাল ছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে টাকা দিয়ে রাখবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। তারা হিসাব রাখবেন, আমরা টাকা দেব।

‘হাসপাতালগুলোকে সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা দিয়ে রাখা হবে। আমরা অর্থ দেব তারা চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করবে’। এছাড়া বরাদ্দ দেয়া টাকা অর্ধেকে নেমে আসলে হাসপাতালগুলো আবার চাহিদা দেবে বলেও জানান মন্ত্রী।

সংরক্ষিত হবে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ৩৬০ স্থান

মুক্তিযুদ্ধে ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ১৭৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের আওতায় একই নকশায় দেশের ৩৬০টি স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় দরপত্র কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এছাড়া ১৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মিত্রবাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় দরপত্র আহ্বান কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ৪১ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে ৩৪২টি স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ মেরামত ও পুনর্নিমাণ করা হবে বলেও জানান মোজাম্মেল হক।

নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে ৪৯ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্থান এবং ইন্দিরা মঞ্চ চিহ্নিত করে ম্যুরাল নির্মাণসহ সীমানা দেয়াল নির্মাণ এবং শিশু পার্কে নতুন রাইডস স্থাপনে ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

‘ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ-৩য় পর্যায়’ প্রকল্পটি গত ৯ জানুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে। শিগগিরই প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

‘এছাড়া ২ হাজার ২৭৩ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতি জেলা/উপজেলায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ৯৮২ বর্গফুটের ৮ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে’ বলেন মোজাম্মেল হক।

সব মুক্তিযোদ্ধার সমাধিস্থল সংরক্ষিত হবে

সরকার ‘শহীদ ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প’ হাতে নিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। প্রথম পর্যায়ে ২০ হাজার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল একই নকশায় সংরক্ষণ করা হবে। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এছাড়া ৪৫৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কর্তৃক সৃষ্ট বধ্যভূমিসমূহ সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্পটিও অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এর মাধ্যমে ২৮১টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা হবে।

‘মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প’, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ‘জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ প্রকল্প’ ও ‘বিভাগীয় পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্প’ অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।

তিনি আরও জানান, ‘মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্যানোরমা নির্মাণ প্রকল্প’, মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধের স্মৃতি রেকর্ড করে রাখতে ‘বীরের কণ্ঠে বীরগাঁথা কর্মসূচি’ ও ‘ঢাকায় একটি ঘৃণাস্তম্ভ ও টর্চারসেল নির্মাণ কর্মসূচি’ হাতে নেয়া হচ্ছে।

ভাতা যাবে মোবাইলে

মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা মোবাইলে পরিশোধের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা মোবাইলের মাধ্যমে দেয়া হবে। তাদের আর উপজেলায় ব্যাংকে গিয়ে ভাতা নিতে হবে না।

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নাতি-নাতনীদের কোটার সংরক্ষণের যৌক্তিকতার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, নতুন করে যেহেতু কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, এজন্য এ বিষয়ে আমার আলাদা কোনো জবাব নেই। তবে জাতীয়ভাবে আমরা যেহেতু দাবি (কোটা বাতিলের) লক্ষ্য করেছি। নিশ্চয়ই সরকার এ ব্যাপারে ভাববে কী করা যায়।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব অপরূপ চৌধুরী, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test