E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘স্যানিটেশনে বরাদ্দে বৈষম্য, ব্যয় হয় না পুরো অর্থ’

২০১৮ মে ১৪ ১১:২০:২৬
‘স্যানিটেশনে বরাদ্দে বৈষম্য, ব্যয় হয় না পুরো অর্থ’

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনা তথা স্যানিটেশনে বরাদ্দে চরম বৈষম্য ও অসমতা রয়েছে। একই সঙ্গে বছর বছর এ খাতে বরাদ্দের অর্থ পুরোপুরি ব্যয় হয় না। এ জন্য দায়ী বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর অক্ষমতা। এই অবস্থায় মধ্য আয়ের দেশ গড়তে স্যানিটেশনে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি তা বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন করা প্রয়োজন।

ওয়াটার এইড ও ইউনিসেফের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে। রবিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ওয়াটার এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর খায়রুল ইসলাম, ওয়াটার সাপ্লাইর কর্ডিনেটর এসএম আনোয়ার কামাল, জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) প্রতিনিধি ডারা জনথন, পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা (এফএসএম) নেটওয়ার্কের প্রতিনিধি হাসিন জাহান প্রমুখ।

সংস্থাটি বলছে, সরকারের আন্তরিকতা সত্ত্বেও নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যসম্মত পয়োনিষ্কাশন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হওয়া প্রয়োজন তা হয়নি। বরাদ্দের সিংহভাগই ছিল মহানগরের জন্য। এ জন্য এডিপিতে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে সমতা অনুসরণ করা উচিত।

লিখিত বক্তব্যে ড হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ওয়াশ কর্মসূচিতে মহানগরগুলোতেই সিংহভাগ বরাদ্দ হয়েছে। ২০১৭-২০১৮ সালের বাজেটে বিগত বাজেটের তুলনায় বরাদ্দ বেশি হলেও মহানগরে ছিল ৪ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। আর পাহাড়ি, উপকূলীয়, চরাঞ্চলসহ দেশের সব গ্রামের জন্য ছিল মাত্র ৯৩৯ কোটি টাকা। অন্যদিকে ছোট শহরগুলোর সম্মিলিত বরাদ্দ ছিল মাত্র ৮৩৫ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে স্থানভিত্তিক অর্থ বরাদ্দে বড় ধরনের বৈষম্য দেখা গেছে।

সিটি কর্পোরেশনগুলোতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে অসমতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের ৮টি সিটিতে ওয়াসার বরাদ্দসহ মোট বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। বরাদ্দ বাড়লেও ৩ সিটিতে (খুলনা, বরিশাল, গাজীপুর) ওয়াশ প্রকল্পে কোনো অর্থই বরাদ্দ করা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে হাসিন জাহান বলেন, ২০০৭-০৮ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বার্ষিক বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায়, দুটি অর্থবছরে (২০১২-১৩ ও ২০১৩-১৪) ওয়াশ কর্মসূচিতে কোনো বরাদ্দকৃত অর্থের সম্পূর্ণ খরচ হয়নি।

তিনি বলেন, উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দকৃত অর্থ যথাসময়ে খরচের ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিবীক্ষণ ও তদারকি প্রয়োজন।

ইউনিসেফের প্রতিনিধি ডারা জনথন বলেন, উন্নয়ন কর্মসূচির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার খুবই আন্তরিক। আমরা আশা করি বৈষম্য-অসমতার ঘাততি দূর হবে। একই সঙ্গে দক্ষতাও বাড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশগুলো হলো- টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে হবে। পিছিয়ে থাকা গ্রামাঞ্চলের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি, পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও স্থানীয়দের সচেতন করতে হবে। উন্নয়ন পরিকল্পনা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে হবে।

(ওএস/এএস/মে ১৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test