E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ছাত্রদের ওপর হামলায় সহকর্মীদের নির্লিপ্ততার নিন্দায় ঢাবি শিক্ষক

২০১৮ জুলাই ০৪ ১৬:৩১:৩৭
ছাত্রদের ওপর হামলায় সহকর্মীদের নির্লিপ্ততার নিন্দায় ঢাবি শিক্ষক

স্টাফ রিপোর্টার : কোটা সংস্কার আন্দোলনে থাকা ছাত্রদের ওপর প্রকাশ্যে হামলা হলেও শিক্ষকরা কেন নিশ্চুপ-প্রশ্ন তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই বেশ কয়েকজন শিক্ষক। বলেছেন, এই এই নির্লিপ্ততা ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতির কারণ হবে।

বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক মানববন্ধনে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাদের ওপর গত শনিবার প্রকাশ্যে হামলা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। হামলাকারীরা সরকারপন্থী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলেই চিহ্নিত হয়েছে।

এই হামলার প্রতিবাদে সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কর্মসূচিতেও হামলা হয়। সেখানেও হামলাকারীরা ছাত্রলীগেরই চিহ্নিত নেতা-কর্মী।

আর এসব হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘উদ্বিগ্ন অভিভাবক এবং নাগরিকদের’ ডাকে প্রতিবাদে বাধা দেয় পুলিশ। লাঞ্ছিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হকসহ কয়েকজন শিক্ষক। আর এই লাঞ্ছনার প্রতিবাদে মানববন্ধনের করে সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা।

এতে যোগ দেন অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদীও। তিনি বলেন, ‘এটা কেমন বিশ্ববিদ্যালয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয় কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও কেউ এর প্রতিবাদ জানাতে পারে না?’

‘কারণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে।’

শিক্ষকরা নির্লিপ্ত থাকতে পারে না উল্লেখ করে এই শিক্ষক বলেন, ‘আমাদের পিঠ দেয়ালে টেকে গেছে , তাই আর ঘরে বসে থাকলে হবে না।’

সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি স্থাপনা সংগ্রামের চিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং অতীতের সকল আন্দোলনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থী-কর্মচারী রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু বর্তমানে এমন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে যেখানে শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদের বিচার চাইতে পারে না, কোনো কিছু বলতে পারে না।’

‘সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব, তাই আসুন আমরা সমবেত হয়ে আমাদের কথাগুলো বলি ও নিজের আগের জায়গাটি ফিরিয়ে আনি।’

সাংবাদিকতা বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘কোটা সংস্কারের দাবি একটি যৌক্তিকি আন্দোলন। তাই সরকারের উচিত দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা।’

সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মাসুদ আল মাহদী বলেন, ‘গত ছয় বছরে আমরা অনেক মানববন্ধন করেছি কিন্তু কোনো হামলার বিচার পাইনি। তাই আমাদের শুধু মানববন্ধন করলে হবে না, আমরা যে একটা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে আছি সেটা স্বীকার করতে হবেই, তারপর আন্দোলনে নামতে হবে।’

অধ্যাপক ফাহমিদুল হকও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি বক্তব্য রাখেননি। আন্তর্জাতিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফাও এতে অংশ নেন।

মানববন্ধন শেষে ছাত্রদের ওপর হামলা এবং শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test