E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ধর্মভীরু হওয়া ভাল, ধর্মান্ধতা ভয়ংকর : সানজিদা খানম

২০১৮ জুলাই ২০ ১৫:২৯:৩৯
ধর্মভীরু হওয়া ভাল, ধর্মান্ধতা ভয়ংকর : সানজিদা খানম

স্টাফ রিপোর্টার : ‘জাগো তারুণ্য, রুখো জঙ্গিবাদ’ শিরোনামে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের জঙ্গিবাদবিরোধী সেমিনারে ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট সানজিদা খানম বলেন, ধর্মভীরু হওয়া ভাল, ধর্মান্ধতা ভয়ংকর।  

১৯ জুলাই বৃহষ্পতিবার সকালে রাজধানীর মহাখালী ইউনির্ভাসেল মেডিকেল কলেজের ৩য় ও ৪র্থ ব্যাচের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীদের মাঝে জঙ্গিবাদবিরোধী সেমিনারটির আয়োজন করে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন।

আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে সাংসদ সানজিদা খাতুন বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে, যারা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে জঙ্গিবাদ উস্কে দিতে। ধর্ম প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং অধিকার। সেই বিশ্বাস ও অনুভূতির জায়গাটিতে তারা আঘাত করছে ক্ষমতা ও বাণিজ্যিক স্বার্থের লোভে। যার সঙ্গে ধর্মের আদৌ কোন সম্পর্ক নেই।

সব থেকে শক্তিশালী, তরুনরাই। এই তরুনদের হাত ধরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে। ভাষা আন্দোলন, গণ অভ্যূথান, মুক্তিযুদ্ধ এই সবকিছুই সম্ভব হয়েছে সে সময়ের তরুনদের হাত ধরে। শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশে^ যত বড় বড় অর্জন রয়েছে তার পেছনে তরুনদের অবদান রয়েছে। তাই সুচিন্তার এই শ্লোগান- ‘জাগো তারুণ্য, রুখো জঙ্গিবাদ’ যতার্থ অনুপ্রেরণামুলক। যোগ করেন সাংসদ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশের অপরাধ বিভাগের যগ্ম কমিশনার শেখ নাজমুল আলম বিপিএম (বার) পিপিএম (বার)। শিক্ষার্থীদেও সঙ্গে জঙ্গি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস বিরোধী আইন সম্পর্কে বিস্তর আলোচনা করেন তিনি।

মেডিকেল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে পুলিশের এই উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান বিশ^ তারুণ্যেও উপর নির্ভরশীল। এই তরণরাই একটি জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে আবার একটি জাতি ধংস্বের জন্য তরুনরাই যথেষ্ট। তাই তরুণ প্রজন্মকে সচেতন হওয়া জরুরী। কেননা এই তারুণ্যের শক্তিতে সন্ত্রাসবাদের কাজে লাগিয়ে একটি মহল ধংস্বের দিকে ঠেলে দিতে চায়। তাই কারো ভূল প্ররোচণা থেকে সাবধান থাকতে হবে। মিথ্যা ধর্মের কথা বলে কেউ যেন জঙ্গিবাদরে পথে ঠেলে দিতে না পারে সেদিকে সচেতন থাকতে হবে।

আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলো ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে আর এটাকে পুজি করে তাদের উদ্দেশ্য কায়েম করছে। আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ এই জঙ্গিবাদের কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত। বাংলাদেশে এমটি না হতে পাওে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারো গতিবিধি সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ আইন শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। সঠিকভাবে ধর্ম জানবার জন্যে মূল কোরআন শরিফ অর্থসহ বুঝে পড়তে হবে। কাউকে হত্যা করে কেউ কখনও বেহেশতে যেতে পারে না। মানুষকে হত্যা করা মহাপাপ। বেহেশত পুণ্যের জায়গা। হত্যাকারীর মত পাপীর সেখানে জায়গা নেই। আজকে যারা ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করছে, অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলতা করছে এরা কেউই প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না। কারণ ইসলামে হত্যা, গুপ্তহত্যা, আত্মহত্যা প্রভৃতি চরমপন্থা অবলম্বনকে নিষিদ্ধ করে হত্যাকা- থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। যোগ করেন পুলিশ কর্মকর্তা শেখ নাজমুল আলম।

সেমিনারে উপস্থিত হয়ে ইউনির্ভাসেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারুণ্যের শক্তি সবকিছু জয় করতে পারে। তাই তারুণ্যের শক্তিকে দেশ ও দশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। যার যার ধর্ম পালন করবে। আর সচেতন থাকতে হবে যেন ধর্মভিত্তিক কোন অপরাজনীতি আমাদের স্পর্শ করতে না পারে।

তিনি আরও বলেন, মেডিকেল স্টুডেন্টরা নিয়মিত নিজের রক্তদান করে। আমি মনে করি, যে মানুষটা রক্ত দিয়ে অন্যের জীবন বাঁচাতে পারে সে ধর্মান্ধ হতে পারে না, কাউকে হত্যা করতে পারে না, কোনভাবেই দেশ ও দশের ক্ষতি করতে পারে না। তাই ধর্মের ভূল ব্যাখ্যায় কান না দিয়ে সঠিক ধর্ম পালন করতে হবে। আর জঙ্গিবাদ রুখতে নিজ নিজ জায়গা থেকে অবদান রাখার চেষ্টা সব সময় চালিয়ে যেতে হবে। কেননা জঙ্গিবাদ শুধু একজন মানুষকে নয়, তার পরিবারটাকে ধংস্ব করে দেয়।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইউনির্ভাসেল মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. ফাতেমা পারভীন।

অনুষ্ঠান শেষে সুচিন্তা’র গবেষণা সেলের পক্ষ থেকে আশরাফুল আলম শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে জঙ্গিবাদ সমর্থন, অসমর্তন বিষয়ে মতবিনিময় করেন।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন ‘আজ সারাবেলা’র সম্পাদক জব্বার হোসেন।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২০, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test