E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পুলিশের দৃষ্টিতে যেসব কারণে হলি আর্টিসান হামলা

২০১৮ জুলাই ২৩ ১৬:২৪:৪০
পুলিশের দৃষ্টিতে যেসব কারণে হলি আর্টিসান হামলা

স্টাফ রিপোর্টার : ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে পুলিশ। হামলার দুই বছর দেশ-বিদেশে বহুল আলোচিত এ ঘটনার অভিযোগপত্র দেয়া হলো।

সোমবার সকালে মিন্টো রোডে এক সংবাদ সম্মেলনে চার্জশিটের বিষয়টি জানান পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ওই হামলার ঘটনার আরও নানা দিক নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।

হামলার ওই রাতে সারা পৃথিবীর নজর ছিল ঢাকার অভিজাত গুলশান এলাকায় অবস্থিত হলি আর্টিসান বেকারির দিকে। সে রাতে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। হামলার প্রাথমিক প্রতিরোধে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তাও। পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টে’র মধ্য দিয়ে সঙ্কটের অবসান ঘটে।

সেনাবাহিনীর ওই অভিযানে নিহত পাঁচ জঙ্গি হলেন- রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল। এদের মধ্যে কয়েকজন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।

ওই বছরেরই ১ আগস্ট বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএস-এর পক্ষ থেকে এদের মধ্যে পাঁচজনকে তাদের ‘সৈনিক’ বলে দাবি করেছে।

তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বরাবরই বলা হয়েছে ঘটনার সাথে আন্তর্জাতিক কোনো জঙ্গি সংগঠনের সম্পর্ক নেই, বরং দেশীয় জঙ্গি সংগঠনই ওই হামলা চালায়।

আজও মনিরুল ইসলামের কথায় সেটিই আবার প্রতিধ্বনিত হয়েছে। তিনি বলেনে, নব্য জেএমবির সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের দৃষ্টি কাড়তেই ওই হামলা চালানো হয়। তবে হামলাকারীদের কারো সঙ্গে ইসলামিক স্টেট (আইএস), আল-কায়েদা বা অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠনের যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।

হামলার কারণ হিসেবে তিনি যেসব বিষয় তুলে ধরেছেন সেগুলো হলো- দেশকে অস্থিতিশীল করা, বাংলাদেশকে জঙ্গি-রাষ্ট্র বানানো, সরকারকে কোণঠাসা করে দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করা, সরকার যাতে চাপে পড়ে, বিনিয়োগকারীরা যাতে দেশ ছেড়ে চলে যায় বা না আসে, সরকার যাতে বিব্রত হয়, সরকার যাতে আসল জঙ্গিদের ধরতে না পেরে নিরীহ মানুষকে নির্যাতন-নিপীড়ন করে, মানুষ যাতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে সরকারের ওপর, সাধারণ মানুষ যেন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে ও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।

দৃষ্টি আকর্ষণের কারণ কী তারও একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন মনিরুল। তার ভাষায়, দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারা প্রযুক্তিগত, অস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা পাবে। বিশ্বব্যাপী যত বড় বড় জঙ্গি সংগঠন রয়েছে, তাদের অনেক অস্ত্র রয়েছে। তাই এদের উদ্দেশ্য ছিল যত বেশি সংখ্যক বিদেশিকে তারা হত্যা করতে পারবে, ততোই দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবে। এ কারণেই তারা হলি আর্টিসানকে বেছে নেয়।

মনিরুল ইসলাম বলেন, তারা (জঙ্গিরা) আরও কয়েকটি স্থান রেকি করেছিল। কিন্তু হলি আর্টিসানের নিজস্ব তেমন কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার কারণে সেটিকেই বেছে নেয়া হয়।

সেইসঙ্গে হলি আর্টিসানকে বেছে নেয়ার পেছনে আরও যেসব কারণ ছিল সেগুলো হলো- পালানোর সুবিধা ও সর্বোচ্চ সংখ্যক বিদেশিকে একসঙ্গে পাওয়া। এ ছাড়াও ২৭ রমজান ছিল এ ঘটনার দিন। তারা মনে করেছে, এই জঘন্য কাজে তারা বেশি সওয়াব পাবে।

রেহান ইমতিয়াজ এবং খায়রুল ইসলাম পায়েল ওই হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছিল বলেও জানান মনিরুল ইসলাম।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test