E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ১৪ ১৮:৪১:১১
তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল

স্টাফ রিপোর্টার  : টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহৎ সম্মিলন ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা। প্রথম বারের মতো এবার চারদিনের ইজতেমা তাবলিগের দুটি পক্ষ দুদিন করে পৃথকভাবে পরিচালনা করবে। এরই মধ্যে ইজতেমাকে ঘিরে টঙ্গীতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের আবহ সৃষ্টি হয়েছে। দলে দলে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। তুরাগ তীরে ঢল নেমেছে মুসল্লিদের।

ইতিমধ্যে ইজতেমার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। শুক্রবার দেশের সর্ববৃহৎ জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে ইজতেমা ময়দানে।

শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মুসলিমের অন্যতম বৃহৎ এ ধর্মীয় জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে। শনিবার দুপুরের আগে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এক পক্ষের (মাওলানা জোবায়ের) পন্থীদের পরিচালনায় ইজতেমা। তারা ইজতেমা ময়দান বুঝিয়ে দেবেন দ্বিতীয় পক্ষের (সা’দ পন্থীদের) কাছে। তাদের পরিচালনায় ইজতেমা শুরু হবে রবিবার ভোরে। সোমবার আখেরি মোনাজাত শেষে এবারের ইজতেমার পরিসমাপ্তি হবে। তারাও (সা’দ পন্থী) ইজতেমার মালামাল বুঝিয়ে দেবেন প্রশাসনের কাছে।

বৃহস্পতিবার ইজতেমা ময়দান ঘুরে দেখা গেছে, পুরো ইজতেমা ময়দানকে ৫০টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। ৬৪টি জেলার মুসল্লিরা এ ৫০টি খিত্তায় অবস্থান নেবেন। ইজতেমায় অংশ নিতে বুধবার থেকেই মুসল্লিরা তুরাগতীরে আসতে শুরু করেছেন। ট্রেন, নৌকা, বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে হাজারো মুসল্লি ইজতেমা মাঠে সমবেত হচ্ছেন।

ইজতেমায় মুসল্লিদের সেবায় নিয়োজিতে বিভিন্ন সংস্থার লোকজন মাঠ সমতল, মাইক ও ইলেকট্রিক সংযোগ দিয়ে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন এবং ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। বিদেশি মুসল্লিদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ তাদের থাকার জায়গা তৈরি করা হয়েছে।

পটুয়াখালী থেকে আসা মুসল্লি ইসলাম উদ্দিন (৬০) জানান, তিনি প্রথম দুইদিনের ইজতেমায় এসেছেন। তার সঙ্গে এসেছেন ২০ জন মুসল্লি। তারা সবাই দ্বীনে খেদমতের জন্য রাসুল (সাঃ) এর দেখানো পথে নিজেদের আরও পরিশুদ্ধ করতে এসেছেন।

তিনি বলেন, নিজেদের ঈমানকে মজবুত করতে দ্বীনের পথে সময় লাগাতে হবে। তাই তারা ঈমানি দায়িত্ববোধ থেকেই ইজতেমায় এসেছেন।

আয়োজকরা জানান, আল্লাহর অশেষ রহমতে সভাপতিহীন বিশ্ব ইজতেমার এতো বড় আয়োজন প্রতি বছরই অত্যন্ত সু-শৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করা হয়। এজন্য আমাদের কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়। পুরো ইজতেমা ময়দানকে মুরুব্বিদের পরামর্শে সাজানো হয়। ময়দানে জেলাওয়ারি মুসল্লিদের অবস্থান, রান্না-বান্না করার স্থান, টয়লেট, অজুখানা, গোসলখানা সবই সুনির্দিষ্ট করা থাকে।

১৯৬৭ সাল থেকে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মাঠে মুসল্লিদের স্থান সংঙ্কুলান না হওয়ায় ২০১১সাল থেকে টঙ্গীতে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম বছর যারা (যে ৩২ জেলার মুসল্লি) টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতেন তারা পরবর্তী বছর সেখানে যেতেন না। ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার পাশাপাশি জেলায় জেলায় আঞ্চলিক ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এ বছর ইজতেমার মুসল্লিদের দুটি পক্ষের সংঘর্ষ ও মতবিরোধের কারণে আলাদাভাবে চারদিন ব্যাপী ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরকারের মধ্যস্থতায় সমঝোতার পর ১০টি শর্তে দুই পক্ষ পৃথকভাবে দুদিন করে ইজতেমা পরিচালনার সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। সে প্রেক্ষিতে ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম দুদিন মাওলানা জোবায়ের পন্থীরা এবং পরের দুদিন ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সা’দ পন্থীরা ইজতেমা পরিচালনা করবেন।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test