E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘বিডিআর বিদ্রোহে সেনা অভিযান হলে গৃহযুদ্ধ লাগতো’

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ২৪ ১৬:০১:৪০
‘বিডিআর বিদ্রোহে সেনা অভিযান হলে গৃহযুদ্ধ লাগতো’

স্টাফ রিপোর্টার : ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণে সেনা অভিযান চালানো হলে সারাদেশে গৃহযুদ্ধ লেগে যেত বলে মন্তব্য করেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রচার ও অপপ্রচার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সংগঠনটি মনে করে, পিলখানা হত্যাকাণ্ড এদেশের একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। কিন্ত সেটিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা নোংরা রাজনীতির আর ব্যক্তি স্বার্থ প্রতীয়মান। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞটি ঘটানো হয়। এতে ৫৭ জন উচ্চ পর্যায়ে সেনা অফিসারসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনার মাধ্যমে সারাদেশে বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিয়ে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। এ ষড়যন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল- নতুন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা।

সভায় নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) এ কে মোহাম্মদ আলী সিকদার বলেন, ২০০ বছরের পুরানো বাহিনীতে হঠাৎ করেই বিদ্রোহ হয়নি। এটি পূর্বপরিকল্পিত। ষড়যন্ত্র ছাড়া এতো বড় হত্যাকাণ্ড হতে পারে না।

তিনি বলেন, অনেকে বলেন- সেনা অভিযান হলে এতো হত্যাযজ্ঞ হতো না। এটি ঠিক নয়। কারণ ঘটনার দিন এক ঘণ্টার মধ্যে সেনা সদস্যদের হত্যা করা হয়। এছাড়া বিদ্রোহীদের কাছে মটার সেলসহ ভারি অস্ত্র ও গোলাবারুদ ছিল। যদি সেনা অভিযান চালানো হতো তাহলে বিদ্রোহীরা নিজেদের বাঁচাতে হামলা করতো। সারাদেশে ৪৮টি ব্যাটিলিয়নে সংঘর্ষ ছড়িয়ে যেতে। এতে সাধারণ লোকজনের হতাহতের সংখ্যা বাড়তো। ওই ঘটনার পর ৪০ জন সেনা সদস্য জীবিত বেচে আসে। তারাও মারা যেত। অর্থাৎ বিডিআর বিদ্রোহে সেনা অভিযান না করা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল।

অপর এক নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আবদুর রশিদ বলেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সব সময় রানৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়। যেমনটা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। এটি কারা ঘটিয়ে থাকে? বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিশ্বের কট্টর ও মৌলবাদীরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। আমাদের এখানে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে কট্টর ও স্বাধীনতা বিরোধীদের মদদ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অনেকে বলে থাকে সেনা অভিযান না করা ভুল সিন্ধান্ত ছিল। সেনা অভিযান করলে এতো হত্যাযজ্ঞ হত না। তাদের এ বক্তব্য ঠিক নয়। এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপপ্রচার বলে মনে করেন তিনি।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবদুর রশিদ বলেন, বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ ছিল চমকপ্রদক। বিশ্বে এটি প্রশংসিত হয়েছে। কারণ বল প্রয়োগ করলে নিরীহ মানুষ মারা যেত। এটি হলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল হতো। এতে করে দেশ অশান্ত হয়ে উঠতো। দেশে গৃহযুদ্ধ লেগে যেত। তাই সেনা অভিযান না চালানোর ওই সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত। যার কারণে বাংলাদেশ এখন শান্তিপূর্ণ আছে। আর এ কারণেই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা অন্তরজ্বালায় ভুগছে। এ জ্বালা থেকেই তারা অপপ্রচারে লিপ্ত আছে।

বোয়াফের সিনিয়র সদস্য তুলি হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ পাঠ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস। উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান এমপি, সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test