E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রবিবারের মধ্যে কেমিক্যাল গোডাউন না সরালে আটক

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ২৮ ১৫:৩৫:০৭
রবিবারের মধ্যে কেমিক্যাল গোডাউন না সরালে আটক

স্টাফ রিপোর্টার : পুরান ঢাকার ইসলামবাগে আবাসিক ভবনে কেমিক্যালের গোডাউন রাখার অভিযোগে ৭টি বাসার গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এসব বাসা থেকে নিজ উদ্যোগে কেমিক্যালের গোডাউন সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। রোববার এসব বাড়িতে আবারও অভিযান চালাবে সিটি কর্পোরেশন। যদি ওইদিন এগুলো পাওয়া যায় তবে মালিকদের আটক করা হবে।

রবিবারের অভিযানে ইসলামবাগের ১২/১১ নম্বর ফরিদের বাসা, ১২/৪ নম্বর, ৭০/৩, ৭৪/২, ৭৫/২ আবুল হাসনাত টুটুলের বাড়ি, ১০/১/এ নম্বর বুলবুল হাজীর বাড়ি, ১৫/১ দীল মোহাম্মদের বাড়ি, ৪২/৪/এ মুজিবর রহমানের বাড়ির গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

এসব ভবনের নিচতলায় কেমিক্যালের গোডাউন পাওয়া যায়। অভিযানের সময় বাড়ির মালিক বা কারখানা ও গোডাউনের মালিকদের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে তাদের প্রতিনিধিরা দাবি করেন, এগুলো প্লাস্টিকের দানার কারখানা।

অভিযানে নেতৃত্বদানকারী ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদ খান বলেন, গতকাল শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠক থেকে আবাসিক ভবনের কেমিক্যাল গোডাউন আপাতত সরিয়ে রাখতে দুটি স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সবাইকে নিজ উদ্যোগে আবাসিক ভবন থেকে কেমিক্যাল গোডাউন স্থানান্তর করতে মাইকিংও করা হয়েছে। সে ঘোষণা অনুযায়ী সকাল থেকে এই অভিযান শুরু করা হয়। যেসব বাসায় গোডাউন পাওয়া গেছে সেগুলো ইউটিলিটি সার্ভিসসমূহ (গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি) বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা কোনো বাসার মালিককে খুঁজে পাইনি। তবে আমরা মালিকদের মেসেজ দিয়ে এসেছি যে, নিজ উদ্যোগে রোববারের মধ্যে গোডাউন খালি করতে হবে। আমরা রোববার আবার আসব। তখন যদি গোডাউনে কেমিক্যাল পাই তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অভিযানে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের স্থানীয় একটি পক্ষের সঙ্গে কর্মকর্তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। অনেকে গোডাউনগুলোকে ‘দাহ্য কেমিক্যালের’ নয় বলে দাবি করেন। অনেকে আবার সিলিন্ডারে লাগা আগুনের কারণে কেমিক্যাল উচ্ছেদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করছেন।

বাংলাদেশ প্লাস্টিক অ্যান্ড প্যাকেজিং রোল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু মোতালেব সাংবাদিকদের বলেন, এখানে কেমিক্যালের কোনো গোডাউন নেই। তাদের সঙ্গে বিশেষজ্ঞ দল ছিল। আমাদের অনুরোধে তারা অভিযান স্থগিত করেছে। আমরা রোববার এফবিসিসিআই ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে এ বিষয়ে বসবো।

কেমিক্যাল হোক আর প্লাস্টিক হোক আবাসিক ভবনে এসব গোডাউন দেয়ার কোনো নিয়ম আছে কি-না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, যুগ যুগ ধরে এখানে এসব গোডাউন ও কারখানা রয়েছে। ৪০০ বছর আগে বাপ-দাদা'র আমল থেকে চলছে।

আমরা চাই গোডাউন গোডাউনের মতো থাক, বাসা বাসার মতো থাক। তবে গোডাউনে দাহ্য পদার্থ থাকুক এটা আমরা চাই না। দাহ্য কেমিক্যালের বিরুদ্ধে অভিযানে আমরা তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করব।

আবু তালেব বলেন, অভিযানটি সঠিক নয়। কারণ যেসব কেমিক্যাল বেশি দাহ্য বা তালিকাভুক্ত ২৯টি কেমিক্যালের কিছু এখানে নেই। এগুলো দাহ্য নয়। বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন, এসব দাহ্য নয়। দাহ্য পদার্থের গোডাউন সরিয়ে ফেলুক তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

অভিযানে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া একটি ছয়তলা ভবনের মালিক শরিফ মিয়া বলেন, আমাদের এখানে কেমিক্যাল আছে কিন্তু দাহ্য নয়। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি এগুলোতে ম্যাচের কাঠি ধরালে কখনও আগুন লাগবে না। তাই আমরা সরাইনি। গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্ধ করে আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে।

দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ তিতাস গ্যাস, ঢাকা ওয়াসা ও ডিপিডিসি, বিস্ফোরক অধিদফতর, চকবাজার থানা পুলিশের সদস্যরা অভিযানে উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test