E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘বহুদিন গোসল না করে অফিস করেছি’

২০১৯ এপ্রিল ২৫ ১৩:৪০:৩৯
‘বহুদিন গোসল না করে অফিস করেছি’

স্টাফ রিপোর্টার : একটা সময় ওয়াসার পানি সঙ্কটের কারণে বহুদিন গোসল না করে অফিস করেছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশে অগ্নিনির্বাপন প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণে বৃহস্পতিবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় মন্ত্রী একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘ঢাকা ওয়াসা নিয়ে ইদানিং বেশ কথাবার্তা হচ্ছে। আমি এখানে কথা বলি, ওয়াসার পানির ৯৯ পার্সেন্ট ড্রিংকেবল ওয়াটার না, নন-ড্রিংকেবল ওয়াটার। ৯৯ পার্সেন্ট পানি ব্যবহার হয় কিসে- ধোয়ামোছার কাজে, গোসল করাসহ ইত্যাদি কাজে। ওয়ান পার্সেন্ট পানি পানের কাজে ব্যবহার হয়।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে এই শহরে (ঢাকা) বসবাস করি, চট্টগ্রামে বসবাস করি, আমি গ্রামে বসবাস করি। যেহেতু রাজনীতি করি বাংলাদেশের বেশিরভাগ জায়গায় যাই। আমি ভেরি অনেস্টলি বলি, নট দ্যা সেন্স অব এনি পারসিয়াল অর পলিটিক্যাল। আমরা ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতায় আসি, আমি বহুদিন গোসল না করে অফিস করেছি। গুলশানের মতন জায়গায় আমি বসবাস করি। যেটাকে নম্বর ওয়ান পস এরিয়া হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’

‘আমি চট্টগ্রামে খুলশীতে থাকি, সেখানেও দেখা গেছে যে আমি গোসল করতে পারি নাই। গাড়িতে করে পানি আনিয়ে ব্যবহার করছি। চট্টগ্রামের সিডিএ এলাকাতে ৩/৪ বছর পর্যন্ত ওয়াসার কোনো পানি যায়নি। হালিশহর এলাকাতে পানি পাওয়া যাবে না- এটা সবার মাইন্ডসেট হয়ে গেছে, যদি আসে এটা একটা আশ্চর্য ধরনের ঘটনা ঘটবে।’

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ঢাকা শহরে গত ৭-৮ বছরের মধ্যে পানি আমার বাসায় আসেনি, এমন কোন ঘটনা নাই। আর অ্যাপারেন্টলি পানি দেখে আমার কাছে কখনই মনে হয় নাই যে এই পানিটার মধ্যে ময়লা আছে। আগের তুলনায় পানির মান উন্নত হয়েছে।’

‘আমাদের এখানে নির্মাণ শ্রমিকেরা দেখি পাইপ লাইনের পানি জগে নেয় এবং খায়। এক বছর পর্যন্ত তারা অসুস্থ হয় নাই। ঘটনাটা হলো কে খাবে, কে খাবে না- এটা ডিপেন্ড করবে আপনি কতটুকু রিস্ক নেবেন’ বলেন তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘কোথায় পানি দূষিত হয়- ওয়াসার পাইপ লাইনের সোর্স থেকে আমরা পানি এনেছি, আমরা দেখেছি যেখানে উৎপাদন হয় সেখানে পানি ঠিক আছে। প্রত্যেক বাড়িতে তো রিজার্ভার আছে, রিজার্ভার আপনি কতটুকু মেইনটেন্ করতে পারেন? আর ইউ শিওর ইউ কিপ ইট হাইজেনিক। যদি না রাখতে পারেন সেখানে দূষণ হতে পারে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় বহুতল ভবন এক সময় খুব কম ছিল, তখন আমরা দরিদ্র ছিল। এখন আমরা দারিদ্র্যতা থেকে বেরিয়ে আসছি, এখন বহুতল ভবন হচ্ছে। বহুতল ভবন করলে আমরা এর নিরাপত্তা দিতে পারব না, এটা মনে হয় যৌক্তিক হতে পারে না। আইন প্রয়োগের ব্যাপারে শৈথিল্য দেখানোর সুযোগ নেই। একটা সময় চলে গেছে, সামনের দিনগুলো কিন্তু আর ওভাবে দেখা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেট ব্রিটেনে ২৪তলা বিল্ডিংয়ে আগুন লেগে ৭২ জন মারা গেছে। সেটা তো আধুনিক দেশ। বাংলাদেশের মতো দেশে ২৩তলা ভবনে আগুন লেগেছে, এজন্য কোনো সুযোগ নেই এটাকে মানার। ব্রিটেনে ৭২ জন মারা গেছে আমাদের এখানে ২৬ জন মারা গেছে। একজনও কেন মারা যাবে, দুর্ঘটনা হতে পারে। সেটার কারণ চিহ্নিত করা দরকার।’

‘একটা কেস স্টাডি হওয়া দরকার, ঘটনা দুর্ঘটনার পর কেস স্টাডি হতে হবে, সেখানে একটা চেক লিস্ট বানাতে হবে। তাহলে পরবর্তী সময়ে প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে এটা কাজে লাগবে।’

ভবনে যারা বসবাস করবে অগ্নি দুর্ঘটনার বিষয়ে তাদের সচেতন হতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন ও সরকারের সেখানে সেভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। একটা সুযোগ আছে জনগণকে সচেতন করার,সেই কাজটি আমরা করব।’

সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুক, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test