E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ : পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানো বাতিল

২০১৯ মে ০১ ১৮:৫১:১৫
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ : পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানো বাতিল

নিউজ ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ভারতের উপকূলে আঘাত হানার পর কিছুটা দুর্বল হয়ে আগামী ৪ মে (শনিবার) বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। এ অবস্থায় ঘূর্ণিঝড় ‘ফণীর’ কারণে পদ্মা সেতুতে ১২তম স্প্যান ‘৫-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা বাতিল করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ।

পদ্মা সেতুর উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণীর’ কারণে স্প্যান বসানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে স্প্যানটি বসানো হবে।

পদ্মা সেতুর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণীর’ কারণে ১২তম স্প্যান ‘৫-এফ’ বসানো হচ্ছে না শুক্রবার। আগামী রবিবারের (৫ মে) পর স্প্যানটির বসানোর সিদ্ধান্ত হবে। এখন স্প্যানটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে রয়েছে।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে স্প্যানটি ভাসমান ক্রেনে করে মাঝনদীতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় শুক্রবার সকালে স্প্যানটি বসানো হচ্ছে না বলে জানান পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের।

তিনি বলেন, এবার মাওয়া কিংবা জাজিরাতে নয়, একেবারে সেতুর মাঝামাঝি অংশে ২০ ও ২১ নম্বর পিয়ারের ওপর ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যান বসানো হবে। এই স্প্যান বসানো হলে পদ্মা সেতুর ১ হাজার ৮০০ মিটার অংশ দৃশ্যমান হবে।

পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসানো হয়েছিল ২৩ এপ্রিল। ওই দিন শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিয়ারের ওপর বসানো হয় এই স্প্যান। এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় ১ হাজার ৬৫০ মিটার।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এর চার মাস পর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিয়ারের ওপর দ্বিতীয় স্প্যানটি বসানো হয়। পরে ২০১৮ সালের ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিয়ারে তৃতীয়, ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর পিয়ারে চতুর্থ, ২৯ জুন ৪১ ও ৪২ নম্বর পিয়ারে পঞ্চম স্প্যান বসানো হয়। এরপর গত নভেম্বর মাসে অস্থায়ীভাবে মাওয়া প্রান্তের ৪ ও ৫ নম্বর পিয়ারে ষষ্ঠ স্প্যান বসায় পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ।

চলতি বছরের প্রথম চার মাসে পাঁচটি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ করা হয়েছে। এ বছর ২৩ জানুয়ারি ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিয়ারে বসে অষ্টম স্প্যান। ২৮ দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিয়ারে অষ্টম স্প্যান, ২২ মার্চ ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিয়ারে নবম, ১০ এপ্রিল মাওয়ায় ১৩ ও ১৪ নম্বর পিয়ারে দশম এবং সবশেষ ১১তম স্প্যানটি বসে ২৩ এপ্রিল।

দ্বিতল পদ্মা সেতু হচ্ছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটি প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। খুঁটির ওপর ইস্পাতের যে স্প্যান বসানো হবে, এর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। পুরো সেতুতে মোট পিয়ারের সংখ্যা ৪২। প্রতিটি পিয়ারে রাখা হয়েছিল ছয়টি পাইল। একটি থেকে আরেকটি পিয়ারের দূরত্ব ১৫০ মিটার। এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়েই সেতু নির্মিত হবে। স্প্যানের অংশগুলো চীন থেকে তৈরি করে সমুদ্রপথে জাহাজে করে আনা হয় বাংলাদেশে। জোড়া লাগানো হয় মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে।

বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন।

(ওএস/এসপি/মে ০১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test