E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নেই সচেতনতা, নেই গবেষণা

৮ বছরে বজ্রপাতে দুই হাজার মানুষের মৃত্যু

২০১৯ মে ২৭ ১৬:৪৯:২২
৮ বছরে বজ্রপাতে দুই হাজার মানুষের মৃত্যু

রূপক মুখার্জি : দেশে নতুন এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের নাম বজ্রপাত। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার খবরটি হচ্ছে, প্রতিবছর বজ্রপাতে যত মানুষ মারা যায়, তার এক চতুর্থাংশ মারা যায় বাংলাদেশে। বাংলাদেশ হচ্ছে পৃথিবীর মধ্যে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ মৃত্যুর দেশ।

দুর্যোগ সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, গত ৮ বছরে দেশে বজ্রপাতে দু’ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতন হলে এ দুর্ঘটনা থেকে অনেকাংশেই রক্ষা পাওয়া যায়। অথচ দেশে বজ্রপাত সম্পর্কিত কোন গবেষণা নেই। বজ্রপাত রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরী হলেও সে দিকটি উপেক্ষিতই থাকছে। সব কিছু মিলে, বজ্রপাত এক নতুন দুর্যোগের নাম। নতুন আতঙ্কের নাম। তবে আসার কথা, বর্তমান সরকার দেরিতে হলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ রোধে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

বলা হয়ে থাকে, বজ্রপাত প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য গুলোর একটি, তবে, বজ্রপাত মানুষের পরিচিত সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাকৃতিক ঘটনা গুলোর একটিও বটে। দুর্যোগ সম্পর্কিত তথ্য মতে, গত ৮ বছরে দেশে শুধুমাত্র বজ্রপাতে দু’ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে।

তথ্য মতে, ২০১৮ সালে ২৯৭ জন, ২০১৭ সালে ৩০৬ জন, ২০১৬ সালে ২৪৫ জন, ২০১৫ সালে ১৮৬ জন, ২০১৪ সালে ২১৪ জন, ২০১৩ সালে ২৮৫ জন, ২০১২ সালে ৩০১ জন এবং ২০১১ সালে ১৭৯ জন মানুষ বজ্রপাতে মারা গেছেন। এ সময় বহু মানুষ আহত হয়েছে।

অস্বাভাবিক খরা, বন্যা, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বজ্রপাত বৃদ্ধির জন্যও ভূম-লের উষ্ণায়ন ও জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রবণতাকে দায়ী করেছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, শহরের তুলনায় গ্রামঞ্চালে বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটে। তারা আরও বলছেন, নদ-নদী, খালবিল, শুকিয়ে যাওয়া, জলভূমি ভরাট হওয়া আর বনাঞ্চল সাবাড় হওয়ার কারণে দেশের আভ্যন্তরীন তাপমাত্রা ১ থেকে দেড় ডিগ্রী সেলসিয়াস বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমের আগে মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটে। বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটার এলাকায় গড়ে ৪০টি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।

সরকারি একটি সূত্র বলছে, জলবায়ূর পরিবর্তন জনিত দূর্যোগ মোকাবিলায় সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে ঝড়, বৃষ্টি, বন্যা, বজ্রপাতের ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে। মৃত্যুর ঘটনাও কমে যাবে। সবকিছু মিলে সরকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ রোধে পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছে। যার প্রমাণ সম্প্রতি দেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘ফণির’ সময় লক্ষ্য করা গেছে। ফণির আগমণের আগেই দূর্যোগ মোকাবিলায় সরকার সচেতন হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে জন মানুষকে রক্ষা করতে পেরেছে।

(আরএম/এসপি/মে ২৭, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test