E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

১১ লাখ রোহিঙ্গার সমস্যা কাঁধে নিয়ে চলেছি

২০১৯ জুলাই ১০ ১৫:১৫:২৩
১১ লাখ রোহিঙ্গার সমস্যা কাঁধে নিয়ে চলেছি

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গার মতো বড় একটি সমস্যা কাঁধে নিয়ে চলেছি। মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারে আশ্রয় দিয়েছি। শুধুমাত্র মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা যত দ্রুত তাদের দেশে ফিরে যাবে বাংলাদেশের ততো মঙ্গল হবে। কারণ তারা প্রাকৃতিক পরিবেশ, বন-জঙ্গলও উজাড় করছে।

বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মিটিং অব দ্যা গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন (জিসিএ) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রেসিডেন্ট হিলদা সি হেইন, জিএসএর চেয়ারম্যান ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন এবং বিশ্ব ব্যাংকের সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিওভা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারের যেসব এলাকায় রোহিঙ্গারা অবস্থান করছে সেগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং তাদের উপস্থিতি এসব এলাকাকে আরও অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। এসব বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দেখভাল করার পাশাপাশি অতি দ্রুত তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য আমি বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব অনুমিত নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আগেভাগেই আমাদের প্রত্যেকের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। সেজন্য, এর প্রভাব মোকাবিলায় বিনিয়োগে আরও বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে বিশ্বকে।

তিনি বলেন, বর্তমানে এই বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-উদ্ভাবন ও অর্থায়নের যুগে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের অনেক সুযোগ রয়েছে, যা সকলে সহজে কাজে লাগাতে পারি। তথাপি আমি বলতে চাই, অভিযোজনের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেজন্য সুষ্ঠু প্রশমন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অভিযোজন প্রক্রিয়ার সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না। আমি আপনাদের সবাইকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সজাগ থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে অনুরোধ করছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। গত এক দশকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক খাতে বিশাল উন্নতি হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবে এই অর্জনগুলো আজ হুমকির সম্মুখীন। সীমিত সম্পদ ও বিশ্বের সর্বনিম্ন নির্গমনকারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানি দাতা এবং জ্বালানি সংরক্ষণের ওপর জোর দিয়ে স্বল্প কার্বন উন্নয়নপথ অনুসরণ করছি। গত কয়েক বছরে আমরা গ্রিডবিহীন এলাকায় ৫০ লাখের বেশি সৌর প্যানেল স্থাপন করেছি এবং ৩৫ লাখের বেশি রান্নার উন্নত চুলা স্থাপন করেছি।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অর্থপূর্ণ সহযোগিতার জন্য ২০১৫ সালে প্যারিসে বিশ্ব সম্প্রদায় একটি সুদৃঢ় অবস্থান তৈরিতে সফল হয়েছে। অনেকের মতো আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ এবং বৈশ্বিকভাবে আমাদের এটি সমাধান করতে হবে। প্যারিস চুক্তি হচ্ছে এই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সবচেয়ে বাস্তবসম্মত ও কার্যকর বৈশ্বিক চুক্তি। বান কি মুনের উদ্যোগে গঠিত পানিবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরামের (এইচএলপিডাব্লিউ) চূড়ান্ত রিপোর্টে আমরা লিখেছি, ‘প্রতি ফোঁটা মূল্যবান’। বিশ্ব সম্প্রদায় এটি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দুই লাখ হেক্টর উপকূলীয়-বনায়ন সৃষ্টি করে আশ্রয় বেষ্টনীর মাধ্যমে জলোচ্ছ্বাস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূল অঞ্চলকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ অত্যন্ত সফলভাবে ৬ লাখ ১ হাজার ৭শ হেক্টর এলাকায় ম্যানগ্রোভ বনের ব্যবস্থাপনা করছে।

তিনি বলেন, গ্লোবাল কমিশন অব অ্যাডাপটেশনের সহযোগিতায় আমরা জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় সঠিক অভিযোজন কৌশলের পাশাপাশি সাশ্রয়ী পন্থা ও ঝুঁকি নিরসন ব্যবস্থার সুবিধা পেতে চাই। আমরা অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বান করা ক্লাইমেট চেঞ্জ সামিটে প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনের সুপারিশগুলোর জন্য অপেক্ষা করছি। এই সভায় এলডিসিভুক্ত দেশ ও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমাকে বক্তব্য দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অভিযোজন প্রক্রিয়ায় অগ্রগামী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে একটি আঞ্চলিক অভিযোজন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি রাখে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ১০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test