E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

অর্থ উপার্জনে বাংলাদেশিদের ভারতে যাওয়া, এ ধারণা ভুল

২০১৯ আগস্ট ০৯ ১৮:৩৪:৩১
অর্থ উপার্জনে বাংলাদেশিদের ভারতে যাওয়া, এ ধারণা ভুল

নিউজ ডেস্ক : অনেকে এখনও মনে করেন, বাংলাদেশের গরিব মানুষরা সুদিনের খোঁজে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। সত্যি বলতে, সেই দিন এখন আর নেই। দ্য টেলিগ্রাফ, ইন্ডিয়ায় লেখা কলামে এমনটি জানিয়েছেন সম্পাদক দেবাদ্বীপ পুরোহিত।

তিনি লেখেন, ১৯৭১ সালে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা অর্জন করে তখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এ দেশকে একটি ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে অ্যাখ্যা দেন। কারণ, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ তখন অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ছিল। সেই পুরনো ধারণা থেকে এখনও অনেকে মনে করেন, বাংলাদেশের গরিব শ্রেণির মানুষের বসবাস। সুদিনের খোঁজে তারা ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। সত্যি বলতে, সেই দিন আর এখন নেই।

দেবাদ্বীপ পুরোহিত উল্লেখ করেন, ভারতের সংসদে দেশটির স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যনন্দ রাই মজার একটি তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৪৯৭ বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে ৩৭৯ জন গ্রেফতার হন বাংলা সীমান্ত থেকে। তার মতে, পশ্চিম বাংলা, আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম ও ত্রিপুরা সীমান্তে ২০১৪ সালে গ্রেফতার অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৪৫৫ জন।

‘যদিও অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ অসম্ভব। তারপরও বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। এর কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা।’

দেবাদ্বীপ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আগের থেকে অনেক ভালো। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটির জিডিপি ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৬.৬ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সুতরাং হেনরি কিসিঞ্জারের সেই ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ উক্তিটি এখন আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মানায় না।

এটি প্রমাণে দুজনের সাক্ষাৎকার তুলে ধরেন এ লেখক। প্রথমজন রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানে রিকশা চালাতেন। এক দশক আগে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। সেখানে দমদম এলাকায় তিনি বসবাস করতেন। কিন্তু এক দশকেও তিনি তার ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পারেননি। নিরাশ হয়ে নিজ দেশে (বাংলাদেশে) ফেরেন। বর্তমানে তার বয়স ৪০ এর কোটায়।

তিনি (রিকশাচালক) বলেন, ‘যদিও আমি কলকাতা পছন্দ করি। কিন্তু জীবিকার জন্য আর কোনোদিন ভারতে যাব না। কারণ বাংলাদেশে কামাই (আয়) বেশি। প্রতিদিন আট ঘণ্টা কাজ করলে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় করা সম্ভব।’

দ্বিতীয় ব্যক্তি ঢাকার ৩০ বছর বয়সী উবার চালক। তিনি জানান, বেশ কয়েকবার কলকাতা ভ্রমণ করেছি। সেখানে তিনি গরিব অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে সারাদিন পরিশ্রম করে ১০০ রুপি আয় করাই কষ্ট। অথচ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল দিনাজপুরেও দৈনিক ৭০০ টাকা হাজিরা দিয়েও একজন শ্রমিক পাওয়া কষ্টসাধ্য।

দেবাদ্বীপ নিবন্ধে লেখেন, এসব তথ্য এটাই প্রমাণ করে গরিব বাংলাদেশিরা এখন আর অবৈধভাবে ভারতে অর্থ আয়ের জন্য আসে না। বাংলাদেশিদের নিয়ে এ ধারণাটা ভুল।

(ওএস/এসপি/আগস্ট ০৯, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test