E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ পেল পুলিশ

২০১৯ সেপ্টেম্বর ১১ ১৫:০৯:০৪
প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ পেল পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার : সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করে পুলিশ বাহিনী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিবিবিএল) উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি পুলিশকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ দেব, সাধারণত পুলিশের লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের একটা দুর্নাম রয়েছে। পুলিশে নিয়োগের ক্ষেত্রে ঘুষ-দুর্নীতির বদনাম আছে। কিন্তু পুলিশ সম্প্রতি নিয়োগে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

তিনি বলেন, ঘুষ-দুর্নীতিমুক্তভাবে যেভাবে এবার নিয়োগ হয়েছে, অতি সাধারণ দরিদ্র পরিবারের ছেলে-মেয়েরাও পুলিশে চাকরি পেয়েছে। প্রতিটি জেলায়-উপজেলায় এ নিয়োগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা অত্যন্ত সততা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছে। তারা বিশেষ দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছে। এটা সকলকেই অনুসরণ করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষগুলো চাকরির সুযোগ পায়।

পুলিশকে দেয়া সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে পুলিশের ওপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে কনস্টেবল থেকে এসআই পর্যন্ত ঝুঁকি ভাতা চালু করেছি। দেশের ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ’ কাজগুলো পুলিশকে করতে হয়। তাই পুলিশের জন্য যেখানে যতটুকু কাজ করা দরকার আমরা করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, তাদের (পুলিশ) জন্য গাড়ি, মোটরসাইকেল, এমনকি চাকরিতে পদোন্নতির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। পাশাপাশি সার্বিকভাবে সকলের বেতন আমরা বৃদ্ধি করেছি। একসঙ্গে একবারে এত বেতন বৃদ্ধি পৃথিবীর কোথাও নেই, আমরা পুলিশ বাহিনীর জন্য সেটা করে দেখিয়েছি।

থানার সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশকে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। মানুষ পুলিশ থেকে যেমন সেবা পাবে, একইভাবে সেবা পাওয়ার স্থানটা দেখার একটা ব্যাপার আছে। আমি মনে করি, প্রত্যেকটি থানা অন্তত দর্শনীয় হতে হবে, সুন্দর হতে হবে। আপনারা খুঁজে খুঁজে দেখেন কোথায় কোথায় আপনাদের থানাগুলোর দুরবস্থা আছে। আমার কাছে প্রজেক্ট নিয়ে আসেন। আমরা সেটাকে পাস করে আরও উন্নত করে দেব।

পুলিশের অবদানের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই। তারা আমাদের দেশ থেকে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসকে দূর করে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য সংস্থাও অত্যন্ত দক্ষতার ভূমিকা রেখেছে। দেশে নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয়, প্রতিটা ধর্মের ধর্মীয় অনুষ্ঠান, পহেলা বৈশাখসহ প্রতিটি অনুষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সাথে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুষ্ঠুভাবে প্রতিটা অনুষ্ঠান যাতে করা যায় সেই ব্যবস্থা করে পুলিশ। ঈদের আনন্দে সকলে যখন আনন্দিত, আমার পুলিশ বাহিনী তখন তাদের পরিবার-পরিজন ছেড়ে কর্তব্য পালন করে। জাতির জন্য তাদের এ ত্যাগ আমরা সবসময় স্বীকৃতি দেব এবং তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমরা তাদের সব চাহিদা পূরণ করছি। তাদের চাহিদামত কমিউনিটি ব্যাংক উদ্বোধন করা হলো।

তিনি বলেন, আগে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালনের সময় নিহত হলে সামান্য কিছু টাকা সাহায্য দেয়া হতো। তাদের সাহায্য বৃদ্ধির জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের প্রস্তাব এসেছিল। আমরা ট্রাস্ট করে দিয়েছি। ট্রাস্টে উপার্জনের জন্য কী প্রয়োজনীয় সেই বিষয়ে কিছু সুবিধা আমি করে দিয়েছিলাম। আমরা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ব্যাংক দিয়েছি, বিজিবি জন্য দিয়েছি। পুলিশ বাহিনী বাকি ছিল তাদেরও ব্যাংক করে দিলাম।

তিনি আরও বলেন, আমরা বেসরকারি খাতেও ব্যাংক দিয়েছি। ব্যাংকিং সেবাটা এখন উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এ ব্যাপারটা যেন সব মানুষ নিতে অভ্যস্ত হয় -এ জন্য আমরা কৃষকদের ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশকে আরও দক্ষ করে গড়ে তুলেছি। আমরা ইতোমধ্যে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট এবং সাইবার পুলিশ সেন্টার গঠন করেছি। তারা অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। এছাড়াও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশসহ বিশেষায়িত বাহিনী করে দেয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, পুলিশ স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠা করে পুলিশের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। কারণ, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের পুলিশ অন্যান্য দেশের সাথে সমান তালে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে ভালো কাজ করছে আমাদের মহিলা পুলিশ। এখন তাদের চাহিদা বাড়ছে। আমি যখন জাতিসংঘে যাই, তখন জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল আমাকে বার বার অনুরোধ করেন, আমি যেন আরও অধিক সংখ্যক মহিলা পুলিশ পাঠাই। এ অবস্থান সৃষ্টির জন্য আমি বাংলাদেশ পুলিশকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। জাতির জনকই প্রথম মেয়েদের পুলিশে চাকরি করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

মাদকবিরোধী অভিযানের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদক একটা পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়, সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মাদকের জন্য ছেলে মাকে মেরে ফেলছে, ভাই ভাইকে মেরে ফেলছে। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, অভিযান চলবে এবং অভিযান আরও বেশি বাড়াতে হবে।

বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী কমিউনিটি ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনসহ পুলিশ ও ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test