E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গুঁড়িয়ে দেয়া হলো ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ’সহ হাজারো বসতবাড়ি

২০১৯ সেপ্টেম্বর ২২ ১৫:০০:৫৬
গুঁড়িয়ে দেয়া হলো ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ’সহ হাজারো বসতবাড়ি

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর শাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির জায়গা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্লাবসহ হাজারের অধিক বসতবাড়ি বুলডেজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

রবিবার বাংলাদেশ রেলওয়ের দু’টি টিম উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নিয়ে এসব অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়। সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান দেখতে শতশত মানুষ ভিড় করেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রেলওয়ের জায়গা দখল করে শাজাহানপুরে হাজার হাজার বসতবাড়ি গড়ে তোলা হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশীল রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়। বস্তির আকারে গড়ে তোলা এসব বাড়ি ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে কোটি টাকার ওপরে ভাড়া তোলা হয়।

বছর পর বছর ধরে রেলওয়ে কলোনির জায়গা দখল করে এসব অবৈধ স্থাপনা করা হলেও কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কারণ রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তাও এখান থেকে যে আয় হয় তার ভাগ পান। কলোনি অঞ্চলের অবৈধ স্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করতে ‘বাংলদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ’ নামে ক্লাব গড়ে তোলা হয়। এই ক্লাবে বখাটেদেরে আড্ডার পাশাপাশি জুয়ার আসরও বসত- বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

এদিকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সময় রেলওয়ের টিম বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্লাবে ঢুকে জুয়া খেলার টেবিল এবং কয়েক বান্ডেল তাস পান। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্লাবটি বুলডেজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। অবশ্য তার আগে আশাপাশে থাকা হাজারের অধিক অবৈধ বসতবাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া রেলওয়ে ল্যান্ড অ্যান্ড বিল্ডিংয়ের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ওপর মহলের নির্দেশে আমরা এই উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছি। এখানে কোনো অবৈধ স্থাপনা থাকতে দেয়া হবে না।

এখানে তো দীর্ঘ দিন ধরেই অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এতো দিন কেন অভিযান চালানো হয়নি? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি এখানে এসেছি মাত্র ৯ মাস। এই ৯ মাসে কাগজপত্র সব ঠিকঠাক করতে একটু সময় লেগে গেল। এখন আর কোনো সমস্য নায়। যদি কোনো কিছু গভীরেও থাকে সেখান থেকে আমরা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করবো।

আর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এই উচ্ছেদের পর আবার অবৈধ ভাবে দখলের সুযোগ থাকবে না। কারণ আমরা নিয়মিত মনিটরিং করবো। এখানে কোনো অবৈধ স্থাপনা আমরা থাকতে দেব না।

স্থানীয় এক বাসিন্দা নুরুল আলম বলেন, রেলওয়ের লোকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রভাবশালীরা এখানে বছর পর বছর ধরে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছে। কিন্তু কেউ কিছু বলেনি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা খুবই ভালো উদ্যোগ।

তিনি বলেন, এখানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা কয়েক হাজার বাড়ি আছে। এর কোথাও কোথাও অসামাজিক কাজও চলতো। আবার যে ক্লাব রয়েছে, ওখানে তো নিয়মিতই জুয়ার আসর বসতো। এর সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতেন প্রভাবশালীরা।

মাসুরা বেগম নামের একজন বলেন, দুই-তিন মাস ধরে এখানে উচ্ছেদ অভিযান চলানো হবে বলে মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের ধারণা ছিল এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা সম্ভাব হবে না। কারণ এসব অবৈধ স্থাপনা সবই প্রভাশালীদের নিয়ন্ত্রণে। তবে এখন দেখছি- সত্যিই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সব অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এটা খুবই ভালো কাজ হচ্ছে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test