E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ

২০১৯ নভেম্বর ০৫ ২১:০৯:৪৯
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার : যুবলীগের সাধারণ সম্পাকের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যও ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত থাকা, এবং ক্যাসিনোর টাকার গাড়ি চালানোরসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর অভিযোগ করেছেন সাদ্দাম নামের যুবলীগের এক নেতা। গতকাল সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে তিনি এ অভিযোগ পাঠান। তবে এ চিঠিটি প্রধানমন্ত্রীর র্কাযালয়ে পোঁছিয়েছে কি তা জানা যায়নি।

নিন্মে চিঠির বিষয়টি হুবহু তুলে ধরা হলো:-

যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন লিখেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি যুবলীগের একজন সাধারণ কর্মী। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আদর্শিত একজন সৈনিক। আপনার নেতৃত্বকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রিয় নেত্রী আপনি যেভাবে দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করছেন, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন করছেন। আপনি দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এজন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। প্রিয় নেত্রী আজ আপনার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা যদি আপনার সংগঠনের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গ ভালোভাবে বুঝতো তাহলে আজ আপনাকে এ শুদ্ধি অভিযানে আসতে হতো না। আজ নিজের ঘরে শুদ্ধি অভিযান চালাতে আপনার কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু এরপরও দেশের উন্নয়নে আপনি শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করতে পিছপা হননি, এ অভিযান আপনি চালিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য আপনাকে আন্তরিকতার সহিত স্বাগতম জানাই।

চিঠিতে বলা হয়, প্রিয় নেত্রী আমাদের যুবলীগের ষষ্ঠ কাউন্সিলের পর আমরা যুবলীগকে বিভিন্নভাবে দেখেছি কেউ বলেছেন এশিয়ার সর্ববৃহৎ সংগঠন, কেউ বলেছেন যুবলীগ একটি সুশৃংখল সংগঠন, আবার কেউ জানিয়েছেন যুবলীগ সংগঠন সরকারের জনপ্রিয় সংগঠন, এ সংগঠনের কার্যক্রম এভাবে চলতে থাকলে দেশের উন্নয়ন চলমান থাকবে। প্রিয় নেত্রী আমরাও খুব কাছ থেকে যুবলীগকে মনেপ্রাণে ভালোবেসে কাজ করেছি বিগত ষষ্ঠ কাউন্সিলের পর থেকেই। আমাদের আস্থার শেষ ভরসা, বাংলাদেশের মানুষের শেষ সম্বল, আমাদের প্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। হঠাৎ আপনি যুবলীগে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা শুরু করছেন। শুধু যুবলীগের নয় সারাদেশে আপনি শুদ্ধি অভিযান নিজ দায়িত্বে পরিচালনা করছেন। এটা বর্তমান সময়ে সরকারদলীয় জনগণের উপরে এ অভিযান আপনাকে সাফল্যের দিকে নিয়ে গেছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে আপনি একজন আপোষহীন জনপ্রিয় নেত্রী এজন্য আপনাকে আবারও আমাদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।

যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন চিঠিতে আরো বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার এই শুদ্ধি অভিযান পরিচ্ছন্ন রাজনীতির মনমানসিকতায় ফিরে এসেছে। তাই যুবলীগকর্মী হওয়া আকাঙ্ক্ষা আরো বেড়ে গিয়েছে। প্রিয়নেত্রী আপনি শুদ্ধি অভিযানে একে একে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর, দক্ষিণের সভাপতি সম্রাট, জি কে শামীমসহ ক্যাসিনো জড়িত সকলেই আইনের আওতায় এনেছেন এবং তারা বিভিন্ন অপরাধের সাজা পাচ্ছে। আমাদের আপনার ওপর সম্পূর্ণ আস্থা আছে, আপনি কোন অপরাধীকে ক্ষমা করেন না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে চাই আমি ছাত্রলীগ থেকে যুবলীগ সংগঠনে এসেছি কিন্তু যুবলীগে পদবী পাওয়ার জন্য যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ক্যাসিনো জড়িত হারুনুর রশিদ আমার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছে । আমি যোগ্য হওয়ার শর্তেও যুবলীগে‌ কোন প্রকার পদ-পদবিতে আসতে পারি নাই। এতে আমার কোন দুঃখ নাই কারণ আমার প্রিয় নেত্রীরও এক সময়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা হয়নি। এজন্য আমার কোন প্রকার দুঃখ নাই।

সাদ্দাম হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ও হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে পকেট কমিটি ঢেলে সাজানো হয়েছে। এজন্য সঠিক আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শীত কর্মীদের যুবলীগে ঠাই হয় নাই। বরং বিএনপি জামাত-শিবিরের লোকেদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে যুবলীগের পদ পদবী বিক্রি করা হয়েছে। এজন্য আজ যুবলীগ প্রশ্নবিদ্ধ? আজ যুবলীগের প্রভাব খাটিয়েছে বিএনপি-জামাত-শিবির। দীর্ঘ অনেকদিন তারা যুবলীগকে পরিচালনা করছে। আজ সরকারের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংগঠন রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া এজন্য দুঃখ লাগে। প্রিয় জনপ্রিয় নেত্রী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ বর্তমান যে গাড়িটি ব্যবহার করে সেই গাড়িটি ক্যাসিনোর টাকায়। গাড়িটি দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি সম্রাটের দেওয়া। তাছাড়া ওমর ফারুককে সামনে রেখে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যাপকভাবে সারাদেশে কোটি কোটি টাকার আত্মসাৎ করে যুবলীগের কমিটি বাণিজ্য করেছেন এবং অসংখ্য টাকার পাহাড় গড়েছে। ওমর ফারুক সহ যুবলীগের যারা বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত তারা যদি শাস্তি পায়, তাহলে হারুনুর রশিদ কেন শাস্তির আওতায় আসবে না? ওমর ফরুক এবং হারুন-অর-রশিদ মিলে সারাদেশের যুবলীগকে আজ প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আপনার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে খোজ খবর নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে, যুবলীগকে বাঁচাতে এগুলোর সঠিক তদন্ত করে শুদ্ধি অভিযানের সাফল্য অর্জন করবেন এ প্রত্যাশা আমাদের সকলের সারাদেশের মানুষের।

সবর্শেষ চিঠিতে যুবলীগের এই নেতা জানিয়েছেন, দেশের জনপ্রিয় নেত্রী আমাদের মা জননী দেশরত্ন আপনার জন্য শুভকামনা রইলো এবং শুদ্ধি অভিযানের জন্য অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি। আল্লাহ পাক আপনাকে দীর্ঘ হায়াত দান করুক।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের মোবাইল ফোনে ( XXX11-541997) একাধিকবার ফোন করলে তিনি কোন সাড়া দেননি।

জানতে চাইলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদের মোবাইল ফোনে (01712 -139088)একাধিকবার ফোন করলে তিনি তা রিসিভ করেন নি এবং কল ব্যাকও করেন নি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ফারুখ হোসেন বলেন, নেত্রীর কাছে চিঠির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে কমিটি বাণিজ্য নিয়ে আমাদের যুবলীগের কেন্দ্রীয় অফিসে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন স্থান থেকে চিঠি এসেছে অফিসিয়াল। শুনেছি গতকাল ও পাবনা থেকে যুবলীগের কমিটি বাণিজ্য নিয়ে দপ্তরে একটি চিঠি এসছে। তবে কার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ সেটি জানতে পারি নি। বিস্তারিত পরে ফোন করলে বলতে পারবো।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test