E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিশ্বমানের সমুদ্রবন্দরে রূপ নিতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম

২০১৪ আগস্ট ০৪ ১৩:১২:৪৬
বিশ্বমানের সমুদ্রবন্দরে রূপ নিতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম ও বিশ্বমানের সমুদ্রবন্দরে রূপ নিতে যাচ্ছে দেশের বৃহত্তম চট্টগ্রাম বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম বদলানো হচ্ছে।

এই সমুদ্রবন্দরে পার্শ্ববর্তী দেশসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশের বড় বড় সমুদ্রবন্দরের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং হবে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৯টি বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, গৃহীত এই নয়টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বছরে ২৫ লাখ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করতে সক্ষম হবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে বছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হচ্ছে প্রায় ১১ লাখ টিইইউএস।

কনটেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পেলে প্রতিবছর চট্টগ্রাম বন্দরে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে কমপক্ষে দেড় হাজার কোটি টাকা। বছর শেষে বন্দরের রাজস্ব আয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে কমপক্ষে ৩ হাজার কোটি টাকা।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বড় বড় জাহাজের আসা-যাওয়া অনেক বেড়েছে। বন্দরের পরিসংখ্যান মতে, ২০১১ সালে ২ হাজার ২৪৮টি, ২০১২ সালে ২ হাজার ২৭৬টি এবং ২০১৩ সালে ২ হাজার ৩৩৯টি জাহাজ আসা-যাওয়া করেছে।

জাহাজের আগমন-নির্গমন এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন বাড়ছে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সংখ্যাও। ২০১১ সালে ১০ লাখ ৩৯ হাজার টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। ২০১২ সালে হ্যান্ডলিং করা হয় ১০ লাখ ৪১ হাজার টিইইউএস। ২০১৩ সালে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১০ লাখ ৫৪ হাজার টিইইউএস।

কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পাশাপাশি বন্দরে বাড়ছে কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণও। ২০১১ সালে ৪৩ কোটি ১৪ লাখ টন এবং ২০১২ সালে ৪১ কোটি ৯৩ লাখ টন ও ২০১৩ সালে ৪৪ কোটি ২৭ লাখ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়।

চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশ্বমানের সমুদ্রবন্দরে রূপ দিতে উদ্যোগ নেওয়া নয়টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের লালদিয়া এলাকায় এক হাজার মিটার দীর্ঘ জেটি সুবিধাসহ একটি বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ, সিমেন্ট ক্লিংকার ও কয়লা হ্যান্ডলিং করতে বে-টার্মিনাল নির্মাণ, কনটেইনার হ্যান্ডলিং সুবিধা বাড়াতে ৩৫ একর জায়গায় ওভার ফ্লো ইয়ার্ড নির্মাণ, আধুনিক ট্রেইলিং সাকশন হোপার ড্রেজার সংগ্রহ, ওয়ান স্টপ সার্ভিস দিতে ৪০ তলা সিপিএ টাওয়ার নির্মাণ, বন্দর চ্যানেলে ৯ দশমিক ৫০ গভীরতার জাহাজ ভেড়াতে চ্যানেল খনন, ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ প্লান্ট নির্মাণ, বন্দরের নিরাপত্তা বাড়াতে সিসিটিভি ক্যামেরার পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম আরো সম্প্রসারণ ও অগ্নি দুর্ঘটনা এড়াতে ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেম আধুনিকায়ন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, চট্টগ্রাম বন্দরকে একটি বিশ্বমানের সমুদ্রবন্দরে রূপায়িত করতে ১ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নৌ-বাণিজ্যের সঙ্গে সংগতি রেখে বন্দরের আধুনিকায়নে সব রকম কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে গত পাঁচ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের রাজস্ব আয় বেড়েছে। এর মধ্যে ২০১০-১১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয় ১ হাজার ৪৫৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছরে ১ হাজার ৫২৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা, ২০১২-১৩ সালে ১ হাজার ৫৭৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।’

আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের রাজস্ব আয় ৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন বন্দর চেয়ারম্যান।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ০৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test