E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

‘পুকুর চুরি’ হয়েছে ফরিদপুর মেডিকেলে

২০১৯ নভেম্বর ২০ ২৩:৪৬:১৪
‘পুকুর চুরি’ হয়েছে ফরিদপুর মেডিকেলে

স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (এফএমসিএইচ) যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য এবার সংসদীয় কমিটিতে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাখিল করা এক প্রতিবেদন দেখে অবাক হয়েছেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরাও। যন্ত্রপাতি কেনার দরপত্র বিজ্ঞপ্তির এক বছরের আগে তা ওপেনিংয়ের সময় দেয়া হয়েছে। দরপত্রে যে জিনিস চাওয়া হয়েছে কেনা হয়েছে অন্যটি। যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে যাচাই করা হয়নি সঠিক দরও।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে। পরে এই দুর্নীতি ও অনিয়ম অধিকতর তদন্তে সংসদীয় সাব-কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য আ ফ ম রুহুল হক, মুহিবুর রহমান মানিক, মো. মনসুর রহমান, মো. আব্দুল আজিজ ও সৈয়দা জাকিয়া নূর অংশগ্রহণ করেন।

সাব-কমিটির আহ্বায়ক মুহিবুর রহমান মানিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে, অনিয়ম আর দুর্নীতির তথ্য যেটা প্রকাশিত হয়েছে বাস্তবে ঘটেছে তার অনেক বেশি। এক খাতের টাকা খরচ করা হয়েছে অন্য খাতে। কেনাকাটায় মানা হয়নি সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত বিষয়ের (পিপিআর) নির্দেশনা। এক কথায় বলতে গেলে পুকুর চুরি হয়েছে । এই দুর্নীতির গভীরে যেতে সংসদীয় সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি প্রয়োজনে সেখানে গিয়ে এই দুর্নীতির অনুসন্ধান করবে।’

ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশন পত্রিকায় ২০১৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে ওই দরপত্র খোলার সময় দেয়া হয়েছে তার এক বছর আগে ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর। সরবরাহকৃত যন্ত্রপাতির ছবি ই-মেইলের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে । ওই ছবি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দুটি বিলের মাধ্যমে ১০টি আইটেমের বিপরীতে ১০ কোটি টাকার যে বিল দাবি করা হয়েছে তা বাস্তবসন্মত নয়। থ্রি হেড কার্ডিয়াক স্টেথোস্কোপের ইউনিটের মূল্য এক লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা, যা বাস্তবসম্মত নয়। বাজারদর যাচাই না করেই চড়ামূল্য দাখিল করা হয়েছে।’

দরপত্রে কমিটিতে উপস্থিত সদস্যদের স্বাক্ষরযুক্ত নেই উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘রেনপনসিভ তিনটি দরদাতার মধ্যে দুটির মালিকই একই ব্যক্তি। এমএসআর (মেডিকেল সার্জিক্যাল রিকুইজিট) সামগ্রী কেনার জন্য দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলেও কেনা হয়েছে অন্য যন্ত্রপাতি। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দুই কোটি টাকার ওপর কেনাকাটার জন্য সচিবের অনুমতি নেয়ার কথা থাকলেও ১০ কোটি টাকার কেনাকাটার ক্ষেত্রেও তা নেয়া হয়নি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘উন্নয়ন খাতের ৩০ কোটি টাকার বিপরীতে ২০ কোটি ৬৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকার কার্যাদেশে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির মধ্যে সবচেয়ে দামি আইটেম হিসেবে ‘ইরিডিয়াম ১৯২ গ্রেড থেরাপি’ যন্ত্রের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যন্ত্রটি ক্যান্সার থেরাপি কাজে ব্যবহৃত হয়। তবে পিপি, কার্যাদেশ ও চুক্তিতে ওই নামের কোনো যন্ত্র পাওয়া যায়নি। দরপত্রের সঙ্গে যে ক্যাটালগ এবং বাক্স সরবরাহ করা হয়েছে তার মধ্যে যে যন্ত্রটি সংরক্ষিত আছে তার সায়েন্টিফিক নাম হলো ‘ব্রোকি থেরাপি’ এবং এর পরিবর্তে যে যন্ত্রটি সরবরাহ করা হয়েছে সেটি যন্ত্র নয়।

অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের আগেই অত্যধিক মূল্যের আইসিইউ যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ২০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test