E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মাত্রাতিরিক্ত শব্দ, রবিবার থেকে সচিবালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত

২০১৯ ডিসেম্বর ১৮ ১৫:২৭:৪২
মাত্রাতিরিক্ত শব্দ, রবিবার থেকে সচিবালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত

স্টাফ রিপোর্টার : সচিবালয়ের চারপাশে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার পরও নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ডেসিবল শব্দ তৈরি হচ্ছে। হর্ন বাজিয়েই চলছে চারপাশের সড়ক দিয়ে চলমান যানবাহনগুলো।

বুধবার থেকে হর্ন বাজানো গাড়ি চালকদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেয়ার কথা থাকলেও প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে আরও কিছুটা সময় নিচ্ছে সরকার। পরিবেশ অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে, রবিবার থেকে আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) পরিচালিত হবে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন সচিবালয়ের চারপাশ ‘নীরব এলাকা’ বাস্তবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। তখন মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘নীরব এলাকা’ বাস্তবায়নে বুধবার থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হবে।

‘নীরব এলাকা’ এলাকা ঘোষণা করায় জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড় ও সচিবালয় লিংক রোড হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায় চলাচলকারী যানবাহন হর্ন বাজাতে পারবে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের অধীনে প্রণীত ‘শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬’ অনুযায়ী ‘নীরব এলাকা’ বলতে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত বা একই জাতীয় অন্য কোন প্রতিষ্ঠান এবং এর চারদিকে ১০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাকে বুঝায়।

বিধিমালা (শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা) অনুযায়ী ‘নীরব জোন’ এলাকায় হর্ন বাজালে প্রথমবার সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই অপরাধ পরবর্তী সময়ে করলে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বুধবার সচিবালয়ের সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে, গাড়িগুলো আগের মতোই হর্ন বাজাচ্ছে। পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা স্কাউট গার্লস গাইডদের সঙ্গে নিয়ে গাড়ি চালকদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করছেন। গাড়িতে তারা লিফলেটও সেটে দিচ্ছেন।

পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘বুধবারও আমরা লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করছি। স্কাউট গার্লস গাইড ও আমাদের অফিসাররা চারটি পয়েন্টে রয়েছেন। আজকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার কথা ছিল। পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আমরা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করব। রোববার থেকে এনফোর্সমেন্টে যাবো।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করছি আরেকটু প্রচারণা করার প্রয়োজন আছে, সবাইকে জানাতে হবে। তারপর শাস্তি দেয়াটা ঠিক হবে। সচিবালয়ের চারপাশ নীরব এলাকা ঘোষণার বিষয়টি চারটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারেও দেয়া হয়েছে।’

সকাল থেকেই সচিবালয় এলাকায় শব্দের তীব্রতা নির্ণয়ে কাজ করছিল স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (কেপস) একটি দল। ১৪ ডিসেম্বর থেকে সচিবালয় এলাকার ১২টি স্থানে বিভিন্ন সময়ে শব্দের তীব্রতা নির্ণয় করেছে।

‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার দিন, সচিবালয়ের আশপাশের জিরো পয়েন্টে সর্বোচ্চ মাত্রার শব্দ রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে শব্দের মাত্রা ছিল ১২৪ দশমিক ৮ ডেসিবল। সর্বনিম্ন ছিল সচিবালয়ে পশ্চিম দিকের (মসজিদের পাশে) সড়কে, সেখানে শব্দের মাত্রা ছিল ৫৪ দশমিক ৮ ডেসিবল।

‘শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬’ অনুযায়ী শহর এলাকায় সহনীয় শব্দের মাত্রা দিনের বেলা ৫০ ডেসিবল ও রাতে ৪০ ডেসিবল।

কেপস-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘আমরা আগামী শনিবার পর্যন্ত সচিবালয় এলাকার ১২টি স্থানে বিভিন্ন সময়ে শব্দের তীব্রতা নির্ণয়ের কাজ করব। ইতোমধ্যে পাওয়া ফলাফল দিয়ে আমরা পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে ইতোমধ্যে কথাও বলেছি।’

আমরা কাজ শেষে সচিবালয়ের চারপাশে ‘নীরব এলাকা’ বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারের কাছে লিখিত সুপারিশ করব।

কী সুপারিশ করা হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার পূর্ব প্রস্তুতির ঘাটতির বিষয়ে আমরা বলব। এই ধরনের এলাকা ঘোষণার আগে স্থানীয় লোকজন, গাড়ি চালকসহ সংশ্লিষ্টদের প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে সচেতন করতে তুলতে হবে।’

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test