E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিদ্যুতের দাম বাড়লে জীবনযাত্রার ব্যয়ও বাড়বে

২০১৯ ডিসেম্বর ২২ ১৫:৪১:৪৩
বিদ্যুতের দাম বাড়লে জীবনযাত্রার ব্যয়ও বাড়বে

স্টাফ রিপোর্টার : ঘাটতি পুষিয়ে নিতে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে সরকারি সংস্থাগুলো। এ অবস্থায় বিদ্যুতের দাম বাড়লে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ ভোক্তা। ফলে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে। যার প্রভাব পড়বে জীবনযাত্রার ব্যয়ে। তাই বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে এ খাতের আর্থিক ঘাটতি সমন্বয়ের প্রস্তাব দিয়েছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

রবিবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত ক্যাবের সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।

ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ক্যাবের জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম প্রমুখ।

সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, রাষ্ট্র কর্পোরেট বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়। কিন্তু আমরা দেখছি সরকার মুনাফার দিকে জোর দিচ্ছে। ব্যয় সমন্বয়ের কথা বলে বার বার বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। কিন্তু সরকারের নৈতিক দায়িত্ব জনগণের স্বার্থ দেখা যা তারা দেখছে না। এটা অযৌক্তিক, অন্যায়।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়লে এর প্রভাব সরাসরি ভোক্তা ও জনগণের ওপর পড়ে। কারণ বিদ্যুতের দাম বাড়লে শিল্পের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়, ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বেড়েছে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ জনগণ। এভাবে চলতে পারে না।

বিদ্যুৎ সেবায় বৈষম্য দূর করার দাবি জানিয়ে কলামিস্ট আবুল মকসুদ বলেন, রাজধানীর যেসব নাগরিক ধানমন্ডি, গুলশান, বনানীতে বসবাস করেন তারা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা পান। কিন্তু দেশের প্রান্তিক অঞ্চলের গ্রাহকরা এ সুবিধা পান না। কিন্তু সবাই সমান মূল্য পরিশোধ করেন। এ বৈষম্য কেন? এটা দূর করতে হবে। এজন্য বিদ্যুৎ বৈষম্য দূর করতে তিন চার স্তরে মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব করেন তিনি।

শামসুল আলম বলেন, গত ২০০৯-১০ সালে দেশে উৎপাদনের ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ গ্যাসের উপর নির্ভরশীল ছিল। সেটা এখন ৬০ শতাংশে নেমে এসেছে। এর বিপরীতে এলএনজি, তেল, কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। এসব জ্বালানির দাম গ্যাসের চেযে বেশি হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। আমাদের আমদানি সাশ্রয় জ্বালানির জোগান না হলে বিদ্যুতের খরচ বেড়ে যাবে এটা মাথায় রাখতে হবে।

তিনি বলেন, যারা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিচ্ছে। তারাই আবার দাম নিয়ে শুনানিতে বিচারকের ভূমিকা পালন করছে। নিয়ন্ত্রক ও প্রশাসক এক ব্যক্তি হতে পারে না।

স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ফলে চাল-ডালের দাম বেড়ে যাবে, কলকারখানায় উৎপাদিত পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। তখন বেতন বাড়াতে হবে। তার মানে একটা জায়গাতে সরকার লাভের আশা করতে গিয়ে সামগ্রীকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তাই দাম বাড়ানোর আগে সামগ্রীক বিষয়ে চিন্তা করতে হবে।

তিনি বলেন বিশ্বের কোনো দেশে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো ১০ শতাংশের উপরে মুনাফা করে না। কিন্তু আমাদের দেশের কোম্পানিগুলো মুনাফা করে ৩৫ শতাংশের উপরে। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

ক্যাবের সভাপতি বলেন, ভোক্তার কথা চিন্তু করে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করতে হবে। যেসব ক্ষেত্রে ভোক্তার ক্ষতি হয় সেটি এড়িয়ে ব্যয় কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। এক্ষেত্রে উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণে সুশাসন-সুব্যবস্থা নিশ্চিত কতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ক্যাবের পক্ষ থেকে বিদ্যুতের আর্থিক ঘাটতি সমন্বয়ে কয়েকটি সুপারিশ পেশ করা হয়।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ২২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test