E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কঠোর নিরাপত্তায় চলছে নুরদের চিকিৎসা

২০১৯ ডিসেম্বর ২৩ ১৫:৪০:৫৯
কঠোর নিরাপত্তায় চলছে নুরদের চিকিৎসা

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি নুরুল হক নুরসহ অন্যান্য ছাত্রদের।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে ঢামেকে তিন তলার ক্যাবিন ব্লকে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়। এই ব্লকে ৮০টি কেবিন থাকলেও একমাত্র ৩৬ নম্বর কেবিনের বাইরে একজন আনসার সদস্যকে নিরাপত্তা দিতে দেখা যায়। এই কেবিনেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন ভিপি নুরুল হক নুর, আমিনুল, সোহেল ও ফারুক।

কেবিনে প্রবেশ করতে চাইলে বাইরে দায়িত্বরত আনসার সদস্যকে পরিচয় দিয়ে ঢুকতে হচ্ছে। কেবিনের ভেতরে আনসার বাহিনীর সশস্ত্র একজন সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি ৩৬ নম্বর কেবিনের দরজা ভেতর থেকে সবসময় লক করে রাখছেন। কেউ দরজার নক করলে গেট খুলে দ্বিতীয় দফা পরিচয় নিশ্চিত হয়ে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন।

ভেতরে কোনো ধরনের ছবি কিংবা ভিডিও করতে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া কেবিনে রাজনৈতিক নেতা, ছাত্রনেতা, ঢাবি শিক্ষার্থী এবং আহতদের পরিবার ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।

কেবিনে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীদের মধ্যে নুর ডান হাতে, আমিনুল ও সোহেল চোখে, ফারুক শরীর ও কানে আঘাত পেয়েছেন। সকাল থেকে বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকরা এসে তাদের দেখে যাচ্ছেন এবং খোঁজখবর নিচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে না চাইলেও ভিপি নুর বলেন, ‘আমার শরীরের ডান দিকে তারা অনেক পিটিয়েছে। বাকিদেরও একই অবস্থায়। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই আক্রমণ করা হয়েছিল। আমার ছোট ভাইরা না থাকলে আমি হয়তো বাঁচতাম না।’

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জে. ড. এ কে এম নাসিরউদ্দিন জানান, গতকাল ফারাবির শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ছিল বলে তাকে লাইফ সাপোর্টে দেয়া হয়েছিল। এখন সে আগের চেয়ে অনেক ভালোভাবে শ্বাস নিতে পারছে।

তিনি আরও বলেন, ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরসহ পাঁচজনের অবস্থা শঙ্কামুক্ত।

রবিবার দুপুরে ডাকসু ভবনের নিজ কক্ষে হামলার শিকার হন ভিপি নুর ও তার অনুসারীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডাকসু ভবনের মূল ফটক বন্ধ করে নুরের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করা হয়। এছাড়া বাইরে থেকেও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছোড়েন। হামলায় অন্তত ৩২ জন আহত হন।

নুরসহ আহত ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে ফারাবীকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। এছাড়া আহত বাকিদের চিকিৎসা দিয়ে ঢামেক থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।

হামলার পর সন্ধ্যায় আহত নুরকে দেখতে হাসপাতালে যান আওয়ামী লীগের নতুন প্রেসিডিয়াম সদস্য নানক ও নাছিম। তবে হাসপাতালে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়েন তারা। আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে সামনে পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেয়া শুরু করেন অনেকে। এরপর তারা সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে যারা স্লোগান দিয়ে পরিবেশ নষ্ট করছে তারা কী উদ্দেশে এগুলো করছে, তা পুলিশ খতিয়ে দেখবে।

নুর ও অন্যান্য ছাত্রদের ওপর যে হামলা হয়েছে তা পৈশাচিক এবং এর পিছনে কাদের কী উদ্দেশ্য আছে তা পুলিশকে খুঁজে বের করার নির্দেশও দেন তিনি। কোনো গোষ্ঠীর কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে বিশ্ববিদ্যালয়কে বেছে নিতে দেয়া হবে না বলেও দাবি করেন তারা।

নুরের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপিপন্থী শিক্ষকরাও হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ডাকসুতে যে হামলা হয়েছে তা নিন্দনীয়। হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test