E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শীতের প্রকোপ : এক শিশু হাসপাতালেই দিনে ৩০০ রোগী

২০১৯ ডিসেম্বর ২৩ ১৬:০০:৪৯
শীতের প্রকোপ : এক শিশু হাসপাতালেই দিনে ৩০০ রোগী

স্টাফ রিপোর্টার : শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকা শিশু হাসপাতালে শিশু রোগীদের চাপ বাড়ছে। সর্দি-কাশি, ঠান্ডাজনিত জ্বরসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুদের নিয়ে হাসপাতাল আসছেন অভিভাবকরা। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ রোগী শিশু হাসপাতালে আসছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সোমবার ঢাকা শিশু হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা গেছে, মিরপুরে বসবাসকারী নাজমা আক্তার তার ১০ মাস বয়সী সন্তানের শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গতকাল রাতে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। তাকে ভর্তি করানোর পর দুই ঘণ্টা অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়। বর্তমানে তাকে হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।

নাজমা আক্তার বলেন, কয়েকদিন ধরে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে মেয়েটি সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়। তার চিকিৎসার জন্য গতকাল রাতে হাসপাতালে নিয়ে আসি। বর্তমানে সে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছে।

ঠান্ডায় আক্রান্ত হওয়ায় আদাবরের বিলকিস আক্তার তার সাত মাসের সন্তান মিল্লাতকে নিয়ে গত ১৪ দিন ধরে শিশু হাসপাতালে ভর্তি আছেন। দুইদিন তাকে আইসিইউ ও অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়। বর্তমানে হাসপাতালের বেডে রেখে তার চিকিৎসা করানো হচ্ছে।

এই শিশুর অভিভাবক বিবি হাজেরা জানান, ঠান্ডায় গত ১৪ দিন মিল্লাত গুরুতর অসুস্থ। এরপর তাকে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ফ্রি বেড না পাওয়ায় প্রতিদিন ৭০০ টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে। মিল্লাতের বাবা গাড়িচালক। শিশুটির চিকিৎসা করতে গিয়ে জমানো সব টাকা খরচ হয়ে গেছে। বর্তমানে আত্মীয়স্বজনদের কাছে টাকা ধার করে চিকিৎসা করা হচ্ছে।

শিশু হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, অপেক্ষমাণ রোগীর দীর্ঘলাইন। হাসপাতালের বহির্বিভাগেও দেখা যায় রোগী নিয়ে অপেক্ষা করছেন স্বজনরা।

চিকিৎসকরা জানান, শিশু হাসপাতালে আগে প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ জন রোগী আসত। কিন্তু শীতের প্রকোপ বাড়ায় গত তিন-চার দিনে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ জন রোগী আসছে। এদের বেশির ভাগই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত।

শিশু হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. রিজওয়ানুল আহসান বিপুল সোমবার বলেন, গত কয়েকদিনের শীতে ঠান্ডাজনিত নানা রোগ বাড়ছে। জরুরি বিভাগে আসা রোগীর সংখ্যাও ৪০ থেকে ৫০ জন বৃদ্ধি পেয়েছে। ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুরা আসছে বেশি।

শিশুদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, নবজাতক শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। মায়ের বুকের দুধ বেশি খাওয়াতে হবে। জন্মের তিনদিন কুসুম গরম পানিতে গোসল করাতে হবে। একমাস বা ২৮ দিন পর নবজাতকের মাথার চুল কাটতে হবে। ধুলাবালি থেকে তাদের দূরে রাখতে হবে। শিশুর শরীরে যাতে ঠান্ডা না লাগে সে জন্য সুতি কাপড় পেঁচিয়ে রাখতে হবে। শীতে শিশুকে মায়ের বুকের মধ্যে বেশি সময় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, এই শীতে শিশুর নিউমেনিয়া, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া, প্রসাব বন্ধ, অ্যাজমা হলে দ্রুত চিকিৎসের পরামর্শ নিতে হবে।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test