E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তরিক নয় মিয়ানমার 

২০২০ জানুয়ারি ০২ ১৫:৩৭:১৯
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তরিক নয় মিয়ানমার 

স্টাফ রিপোর্টার : রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বিশ্বের ১৩৪টি দেশ জাতিসংঘে বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে মিয়ানমার এখনও আন্তরিক নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ‘ফ্লাশ অন রোহিঙ্গা জেনোসাইড’ শীর্ষক ৭ দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ড. মোমেন বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেব বললেও নিচ্ছে না। এ ইস্যুতে দেশটির আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। বাংলাদেশ ১ লাখ রোহিঙ্গার তালিকা পাঠিয়েছে, কিন্তু তারা শনাক্ত করেছে ৮ হাজার। দুইবার চেষ্টা করেও মিয়ানমারের অসহযোগিতায় প্রত্যাবাসন ব্যর্থ হয়েছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে এখনও বাংলাদেশ সফল হয়নি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা যদি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিতেন তাহলে বিশ্ব যুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় গণহত্যা হতো। তারপরও ২০ হাজার রোহিঙ্গা মারা গেছেন। অনেক বন্ধু দেশ এ ইস্যুতে সহযোগিতায় করছে। কিছু দেশ ছাড়া। ১৩৪টি দেশ জাতিসংঘে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ৯টি দেশের মধ্যে ৪টি বলেছে প্রতিবেশী শক্তিশালী বলে তারা বিপক্ষে রায় দিয়েছে। অং সান সু চি নিজেও স্বীকার করেছেন মিয়ানমারে হত্যাকাণ্ড হয়েছে।

ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের ফরেন পলেসি হচ্ছে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো জন্য শত্রুতা নয়। ভারত, নেপাল, ভুটান এমনকি মিয়ানমারের সঙ্গেও বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো। কিন্তু রোহিঙ্গা ফেরাতে মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমারকে বলেছি, রোহিঙ্গারা তোমাদের লোক, অথচ তারা তোমাদের বিশ্বাস করে না। রোহিঙ্গা নেতাদের নিয়ে যাও রাখাইনে।তাদের জন্য কী আয়োজন করেছ দেখাও, প্রমাণ দেখাও, কিন্তু তারা কোনো কিছুর উত্তর দেয় না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সমস্যা মিয়ানমার সৃষ্টি করেছে, সমাধানও সেখানে। দ্বিপক্ষীয় ছাড়াও এ ইস্যুতে চীন যুক্ত হয়েছে। ভয় হচ্ছে এত মানুষ দীর্ঘ সময় এখানে থাকলে সন্ত্রাসের জন্ম হবে, যা গোটা বিশ্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি হবে।

ড. মোমেন বলেন, চীন জাপান মিয়ানমারে ব্যবসা করতে চায়। কিন্তু এ সংকট জিইয়ে রেখে তারা লাভবান হতে পারবে না। চীন রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বলে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। এ বিষয়ে সকল দেশ এক বাক্যে বলেছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া উচিৎ কিন্তু মিয়ানমার মানছে না।

মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা গণহত্যার কথা বলেনি, কিন্তু বিশ্ব বলছে। বাংলাদেশ বলেনি কারণ মিয়ানমার বন্ধুরাষ্ট্র, তাদের সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি বলেন, মিয়ানমারের যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছে তা স্বরণকালে ঘটেনি। মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকবে কিন্তু মানবিক সম্পর্ককে ছাপিয়ে নয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সকল দেশ একই রকম ব্যবহার করছে না। এটি খুবই জটিল। সাময়িক সময়ের জন্য রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হলেও এত মানুষ একসঙ্গে থাকলে নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিতে পারে। যতই মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হোক, তারা তা মানে না। মিয়ানমারকে রক্ষা করার জন্য এক চীনই যথেষ্ট।

জাতীয় চিত্রশালা গ্যালারি ১-এ প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ভোরের কাগজ ও বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ০২, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test