E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চীনা পণ্য আমদানি কমলে তা হবে দুঃখজনক : চীনের রাষ্ট্রদূত

২০২০ ফেব্রুয়ারি ১২ ১৮:২০:৩০
চীনা পণ্য আমদানি কমলে তা হবে দুঃখজনক : চীনের রাষ্ট্রদূত

স্টাফ রিপোর্টার : করোনাভাইরাস ছড়ানোর কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ যদি চাইনিজ পণ্য আমদানি কমিয়ে দেয়, তবে তা দুঃখজনক হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। আর করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত চীনে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খাবার পাচ্ছেন না বলে যে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, তা-ও সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন তিনি।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত এ দাবি করেন। করোনাভাইরাস ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিসিসিআই) ও চীনের দূতাবাস।

রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি (করোনাভাইরাস) খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এটি মহামারি আকার ধারণ করার পর শুধু চীন নয়, পুরো বিশ্বই এটিকে গুরুত্বের সাথে দেখছে। চীন করোনা মহামারিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে টাস্কফোর্স তৈরি করেছে। যদিও প্রথমে আমরা জানতাম না এটি কী ধরনের ভাইরাস। পরে তা দ্রুতই জানা গেছে এবং এর পরবর্তী পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে। প্রতিষেধকও আসবে। ৬০ হাজার গবেষক এ ভাইরাসের ওপর কাজ করছেন। চীনের সক্ষমতা আছে করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণের।

‘তবে ভাইরাস কোনো পাসপোর্ট দেখে না। যে কোনো দেশেই ঢুকতে পারে। তাই এটি শুধু চীনের জন্য নয়, পুরো বিশ্ববাসীর শত্রু। আমরা এটির বিরুদ্ধে লড়াই করছি।’

বাংলাদেশে এ ভাইরাস আসার আগে তিনটি স্তর পার হতে হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ কর্মরত যেসব চীনা দেশে গিয়েছিলেন, তাদের আপাতত বাংলাদেশে ফেরত আসতে দেয়া হচ্ছে না। এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বাংলাদেশের কথা বিবেচনা করেই। এদেশে কর্মরত ১০ শতাংশ চাইনিজ স্বদেশে ফেরত গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে প্রকৌশলীও রয়েছেন। এদের অনেকে মেগা প্রজেক্টের সাথে যুক্ত।

এ ভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশের জনগণের করণীয় বিষয়ে তিনি বলেন, গণমাধ্যম সঠিক ও বিজ্ঞানসম্মত তথ্য প্রচার করলেই জনগণ করণীয় বুঝতে পারবে। সবক্ষেত্রে প্রয়োজন সচেতনতা।

করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ-চীন পণ্য আমদানি-রফতানি বা বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ভাইরাসে সংক্রমিত হয় মানুষ, পণ্য নয়। সুতরাং এ ভাইরাসের জন্য পণ্য আমদানি কমিয়ে দেয়া হলে সেটা হবে দুঃখজনক।

তবে করোনাভাইরাস ছড়ানোর পর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ যেভাবে চীনের পাশে আছে, সেজন্য ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত।

করোনাভাইরাস ছড়ানোর পর চীনের বাজারে খাবারের দাম বেড়ে গেছে, এমনকি কিছু জায়গায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খাদ্য সংকটে ভুগছেন বলে অভিযোগের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, চীনে থাকা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খাবার পাচ্ছেন না, এই তথ্য ঠিক নয়। চীনের মানুষ খাবার পেলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও পাবেন।

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১ হাজার ১০৭ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ১৩৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন বাংলাদেশি রয়েছেন। তারা আক্রান্ত হয়েছেন সিঙ্গাপুরে। চীনের বাইরে সিঙ্গাপুরসহ আরও ২৭টি দেশ ও অঞ্চলে এ প্রাণঘাতী ভাইরাস ছড়িয়েছে।

করোনাভাইরাস ছড়ানোর পর গত ১ ফেব্রুয়ারি উহান থেকে ৩১২ জন বাংলাদেশিকে বিশেষ একটি ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরত আনা হয়। বর্তমানে তারা আশকোনার হজ ক্যাম্পে ১৪ দিনের জন্য বিচ্ছিন্ন অবস্থায় (কোয়ারেন্টাইন) রয়েছেন। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের সেখানে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

হুবেই প্রদেশ থেকে ফিরতে আগ্রহী আরও ১৭১ বাংলাদেশি। এজন্য তারা আবেদন জানালেও তাদেরকে এখনই ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে সরকার।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test