E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

২০২০ মার্চ ০৭ ১৪:৫২:৪০
আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

স্টাফ রিপোর্টার : ‘ভাইয়েরা আমার, আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভরাট কণ্ঠের এই আওয়াজে আজ সারা দেশ মুখর হবে। আজ (শনিবার) ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) ১৯ মিনিটের এক জাদুকরী ভাষণে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। এরপরই সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ, ৯ মাসের লড়াই এবং স্বাধীনতা অর্জিত হয়।

ওইদিন বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। দিনটিতে লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে এই মহান নেতা বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাআল্লাহ।’

বঙ্গবন্ধুর সেদিনের মন্ত্রমুগ্ধকর এই ভাষণ শুনে স্বাধীনতার শপথে বলীয়ান হয়ে প্রশান্ত মনে বাড়ি ফিরে যায় উত্তেজনার পারদে ফুটতে থাকা বাঙালিরা। বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী ভাষণের স্মারক হিসেবে দিনটি অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। ইউনেস্কো ‘বিশ্ব ঐতিহ্য’ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ স্বীকৃতি দেয়ার পর প্রতি বছরই বিভিন্ন আঙ্গিকে দিনটি পালিত হচ্ছে।

রাষ্ট্রীয়ভাবে আজকের দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন ৭ মার্চ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

এমন এক সময় বঙ্গবন্ধু এ ভাষণ দিয়েছিলেন যখন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ-বঞ্চনায় অতিষ্ঠ হয়ে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার আহ্বানের অধীর অপেক্ষায় ছিল গোটা বাঙালি জাতি। বঙ্গবন্ধুর এই দিনের উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পায় স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা।

সেদিন বিকাল ৩টা ২০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত হন। লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ময়দান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। ময়দানজুড়ে স্লোগান ছিল ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’। প্রায় ১৯ মিনিটের ভাষণে বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের পুরো ক্যানভাস তুলে ধরেন। জনতাকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।

তিনি বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।’

প্রকৃতপক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। এরপরই মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর ‘মেমরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা ‘বিশ্বের স্মৃতি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো।

এর আগে লেখক ও ইতিহাসবিদ জ্যাকব এফ ফিল্ডের বিশ্বসেরা ভাষণ নিয়ে লেখা ‘উই শ্যাল ফাইট অন দ্য বিচেস : দ্য স্পিসেস দ্যাট ইন্সপায়ার্ড হিস্ট্রি’ বইয়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ স্থান পায়। অসংখ্য ভাষায় অনূদিত হয়েছে এই ভাষণ।

দিবসটি পালন উপলক্ষে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করছে। সারা দেশেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ মুজিববর্ষের শুভক্ষণে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বাঙালির মন-মননে চিন্তা-চেতনে আদর্শ-অনুপ্রেরণে চেতনায়-জাগরণে প্রদীপ্ত শিখা রূপে প্রবাহিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের স্মৃতি-বিজড়িত ৭ই মার্চ উপলক্ষে দেশের সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাপক কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

(ওএস/এসপি/মার্চ ০৭, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test