E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশনের দাবি

২০১৪ আগস্ট ০৯ ১৮:২৭:০৭
সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশনের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার : বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সমতলের আদিবাসীদের ভূমি সমস্যার সমাধান করতে ভূমি কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ সমস্যার সমাধান করা জাতীয় দায়িত্ব।

বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম আয়োজিত এক সমাবেশে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে সমতলের আদিবাসীরা সবচেয়ে বেশি নিগ্রহের শিকার হয়েছে। দিনাজপুরে তাদের জীবনহানি ঘটেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ধর্ষণের কথা আমরা শুনেছি, তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। সমতলের আদিবাসীদের কেবল ১৬ কোটি টাকা দিয়ে লজ্জা দিয়ে কোনো লাভ নেই। তাদের জন্য ভূমি কমিশন গঠনের যে দাবি সংসদে উচ্চারিত হয়েছে, সেই ভূমি কমিশন গঠন করা এবং ভূমি সমস্যার সমাধান করা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব।’

আদিবাসী অধিকার প্রতিষ্ঠায় আদিবাসী ও বাঙালিদের মধ্যে সেতুবন্ধন ক্রমাগত দৃঢ় হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে এমন লোক আছেন যাঁরা নিরাপত্তার চশমা দিয়ে আদিবাসীদের দেখার কথা ভাবেন। কিন্তু তাঁরা জানেন না, আদিবাসী-বাঙালির ঐক্যের মধ্য দিয়েই নিরাপত্তা জোরদার করা সম্ভব।’

সভাপতির বক্তব্যে জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেন, বাংলাদেশের সরকার বোবা-কালা হয়ে গেছে, তারা চোখেও দেখতে পায় না। ৪৩ বছর ধরে আদিবাসীরা সরকারের কাছে তাদের ন্যায্য অধিকারের জন্য দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সব আবেদন নিবেদন তারা অবহেলা ও ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।

আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সন্তু লারমা বলেন, ‘এবার আর কোনো আবেদন নিবেদন নয়, দাবি আদায়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। আদিবাসীরাও মানুষ, তাদেরও আশা-আকাঙ্ক্ষা আছে, তারা জানে কীভাবে লড়াই করতে হয়।’

এর আগে কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার সময় আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের সব আইন মানার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘ যে আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিয়েছে, তাদের রাষ্ট্র স্বীকৃতি না দেওয়ায় রাষ্ট্রীয়ভাবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হচ্ছে। তিনি বাঙালি আদিবাসীদের হাতে হাত ধরে রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘বাঙালিদের ক্ষেত্রে যেমন জাতীয় অধিকার পরিপূর্ণভাবে পালন করা আমাদের দায়িত্ব, আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করাও মুক্তিযুদ্ধের মতোই একই পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য। যখন প্রত্যেকটা জাতিগোষ্ঠীকে সব ধরনের শোষণ ও নিপীড়নের হাত থেকে মুক্ত করতে পারব, তখনই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন হবে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য, আয়োজক সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা, নাট্যকার মামুনুর রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম প্রমুখ।

সমাবেশের পর একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর আগে র‌্যালি করে শহীদ মিনারে এসে মিলিত হয় বিভিন্ন অঞ্চলের আদিবাসীরা। জাতীয় সংগীতের পর গারো ও রাঙামাটি গিরিসুর শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনার পর সমাবেশ শুরু হয়।


(ওএস/এটিআর/আগস্ট ০৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test