E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

এভারেস্ট জয়ের লড়াই করোনার কাছে কিছুই নয় : ওয়াসফিয়া নাজরীন

২০২০ এপ্রিল ০৭ ১১:০৮:০৬
এভারেস্ট জয়ের লড়াই করোনার কাছে কিছুই নয় : ওয়াসফিয়া নাজরীন

নিউজ ডেস্ক : করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন এভারেস্ট বিজয়ী বাংলাদেশি নারী ওয়াসফিয়া নাজরীন। তিনি বলেছেন, ২৬ হাজার ফুট ওপরে উঠে এভারেস্ট জয় করা যদিও অনেক চ্যালেঞ্জের, তারপরও করোনার কাছে এই লড়াই কিছুই না। তুলনাই চলে না। তিনি আরও বলেন, আমি কখনো ঘুমাতে পারি না। ঘুমালেই মরে যাই। আমিতো অনেকবারই মরেছি।

সোমবার (৬ এপ্রিল) রাত ১০টায় ফেসবুক লাইভে এসে এসব কথা বলেন এভারেস্ট বিজয়ী ওয়াসফিয়া নাজরীন।

১২ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন ওয়াসফিয়া। ১৩ মার্চ থেকেই তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। ১৭ মার্চ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে কোয়ারেন্টাইনে থাকার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে ওয়াসফিয়া নাজরীন ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘তিন সপ্তাহ ধরে আমি কোয়ারেন্টাইনে আছি। ফরেন কান্ট্রিতে আমি সম্পূর্ণ (কমপ্লিটলি) একা। তখন আমার ভাই জানে না, বোন জানে না। আমার একটাই চিন্তা-আমি মরে গেলে আমার বডিটা কে নিতে আসবে..আমার ঘরের চাবিটা নাই। কেউ দেনা পাবে কি-না...একটা লকড রুমে আমি সম্পূর্ণ একা।’

‘ঢাকা থেকে জিজ্ঞেস করে তোমার সাথে কে আছে.. আসলে আমার কাছে কেউ নাই। কেউ যদি আমার কাছে তাহলে সে আমার দ্বারা সংক্রমিত হবে (আই উইল লিটারেলি টু কিল হিম)…আমার এখানে আসলে কেউ আসবে না। আমার এই রুমটা সম্পূর্ণ ভাইরাস…যতক্ষণ পর্যন্ত অথরিটি ক্লিয়ার করবে না ততক্ষণ পর্যন্ত আমিও বাইরে যেতে পারব না তারাও আসতে পারবে না। তাই ডাক্তররা যখন আসে, তখন সেভাবে প্রটেকশন নিয়ে আসে।’

করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর ঘুমাতে পারেননি ওয়াসফিয়া। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘…আমি একটা রাতও ঘুমাতে পারিনি। কারণ আমি এতবার মরেছি যে…।’

করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার সঙ্গে হিমালয় জয় করার লড়াই আসলে কিছুই নয় মন্তব্য করেন এই এভারেস্টজয়ী। তিনি বলেন, ‘হিমালয়ে ২৬ হাজার ফুট উঠে সেখান নিঃশ্বাস নেয়াসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়। তবে আমি এই কয়েকদিন ভুগে যেটা বুঝেছি তা হলো হিমালয় লড়াই করার সঙ্গে এর (করোনা) তুলনাই চলে না।’

করোনাভাইরাস তার শরীরে ফুসফুসে ছড়িয়ে গেছে বলেও জানান ওয়াসফিয়া। তিনি বলেন, ‘এখন শরীরের কোন পার্ট আক্রান্ত হবে জানি না।’

ওয়াসফিয়ার সঙ্গে এই লাইভে যুক্ত ছিলেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, চিত্রনাট্যকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, অভিনেত্রী তিশাসহ আরও দুজন। এ সময় তাকে ওয়াসফিয়াকে প্রশ্ন করা হয়, ‘ঠিক কতদিন ধরে তিনি এই অসুস্থতায় ভুগছেন।’ এর উত্তরে তাকে বলতে শোনা যায়, তিন সপ্তাহ ধরে তিনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত এবং এখনও তার কাশি রয়েছে। তবে চিকিৎসক বলেছে, তার শরীর থেকে করোনার সব উপসর্গ চলে গেলেও তাকে আরও তিন দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এই এভারেস্টজয়ী বলেন, তার কাছে নাকে অক্সিজেনের পাইপ ধরানোটা খুব কষ্টের ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি তো তখনই মরে গিয়েছিলাম।’

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের উদাহরণ তুরে ধরে ওয়াসফিয়া বলেন, ‘এখানকার হসপিটালাইজড রোগীদের বেশির ভাগই ১৮-৪২ বছর বয়সী। তাই এটা বলার অবকাশ নেই যে, যুবকরা আক্রান্ত হবে না বা বয়স্করা আক্রান্ত হবে।’

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ০৭, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test