E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

করোনা মোকাবিলায় এক হয়ে লড়তে হবে, বিশ্ব সম্প্রদায়কে প্রধানমন্ত্রী

২০২০ এপ্রিল ২৩ ২২:৪০:৩৭
করোনা মোকাবিলায় এক হয়ে লড়তে হবে, বিশ্ব সম্প্রদায়কে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার : করোনাভাইরাসে সৃষ্ট সংকটের সমাধানে বিশ্ববাসীকে একসঙ্গে লড়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিশ্ব আগে থেকেই জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে লড়াই করছে। এখন করোনাভাইরাস আমাদের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে। এই অবস্থায় একসঙ্গে লড়তে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ‘দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার’ বিষয়ক এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ ভার্চুয়াল সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব সম্ভবত একশ’ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকটের মুখোমুখি। সুতরাং সবাইকে একসঙ্গে সঙ্কটের মোকাবিলা করা দরকার। প্রতিটি সমাজ থেকে সমন্বিত দায়িত্বশীলতা এবং অংশীদারিত্বমূলক মনোভাব প্রয়োজন।

বিচ্ছিন্নতার নীতি বাস্তবমুখী নয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বায়নের বর্তমান পর্যায়ে একটি দেশকে পুরো বিশ্ব থেকে আলাদা রাখা সম্ভব নয় এবং এখানে বিচ্ছিন্নতার নীতি আর কাজ করবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি না এই মহামারি কতদিন থাকবে। এটি ইতোমধ্যে অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অর্থনীতি, ব্যবসা ও সমাজের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে; ভয় এবং ট্রমা কাটাতে জনগণকে সহযোগিতা করতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব একটি সংকটময় পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। এই সংকট মোকাবিলায় আমাদের যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিশ্বের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাঁচটি বিষয়ে সবাইকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রথমত; সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে দারিদ্র্য এবং বৈষম্য দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। গত এক দশকে আমরা আমাদের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্ধেক দারিদ্র্যসীমা থেকে বের করে এনেছিলাম। তাদের অনেকে এখন আবার আগের অবস্থানে ফিরে যেতে পারে। সুতরাং বিশ্বকে মানবকল্যাণ, বৈষম্যদূরীকরণ, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তা এবং কোভিড-১৯ এর পূর্বের অর্থনৈতিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নতুন করে ভাবতে হবে।

দ্বিতীয়ত; আমাদের প্রয়োজন জি-৭, জি-২০ এবং ওইসিডি’র মতো সংগঠনগুলো হতে দৃঢ় ও পরিকল্পিত বৈশ্বিক নেতৃত্ব। জাতিসংঘ নেতৃত্বাধীন বহুপাক্ষিক ব্যবস্থাকেও এগিয়ে আসা উচিত। আমি অধ্যাপক সোয়াবের (বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরোমের প্রতিষ্ঠাতা) প্রশংসা করছি। কারণ তিনি সংক্রামক রোগগুলোকে ২০২০ এর বৈশ্বিক ঝুঁকি সম্পর্কিত প্রতিবেদনে অন্যতম মুখ্য ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সুতরাং ফোরাম এবং জাতিসংঘের উচিত সরকার এবং বিশ্ব ব্যবসাকে এ বিষয়ে একত্রিত করা এবং নেতৃত্ব দেয়া।

তৃতীয়ত; আমরা ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা, কাজ এবং উৎপাদনে পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করেছি। কোভিড পরবর্তী সময়ে, নতুন নীতি, স্ট্যান্ডার্ড ও পদ্ধতি দেখবো। ইতোমধ্যে আমরা দেখছি সরবরাহ চেইনে থাকা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড যথাযথ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে না। সুতরাং আমাদের এমন কৌশল ও বাস্তবমুখী সহায়তা ব্যবস্থা নিতে হবে যেন বাংলাদেশের মতো দেশগুলো টিকে থাকতে পারে।

চতুর্থত; অভিবাসী কর্মীরা বেকারত্বসহ অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতি পার করছেন। এটি দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। সুতরাং বোঝা ও দায়িত্ব শেয়ার করার মতো আমাদের এমন একটি অর্থপূর্ণ বৈশ্বিক কৌশল ও পরিকল্পণা নিতে হবে।

পঞ্চমত; এই মহামারির সময়ে আমরা কার্যকরভাবে বেশকিছু ডিজিটাল প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির ব্যবহার করেছি। যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সংক্রমণ চিহ্নিত করা। ভবিষ্যতের প্রস্তুতির জন্য আমরা বিভিন্ন সেক্টরে এই রকম উদ্ভাবনীমূলক ব্যবস্থা নিতে পারি।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৩, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test